৪, ৫,৬,৭ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
প্রিয় পাঠক আপনি কি ৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া এবং পাঁচ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
এছাড়াও আপনি এ পোষ্টের মধ্যে পাবেন ৬ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া এবং ৭ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া ও ৩৬ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
একটি বাচ্চা পেটে আসার পরে একটি নির্দিষ্ট সময় গিয়ে তার নড়াচড়া শুরু হয়। যদি বাচ্চা পেটে নড়াচড়া করতে থাকে তাহলে সেই বাচ্চাকে সুস্থ বাচ্চা হিসেবে ধরা হয়। যদি কোন বাচ্চা পেটের ভিতরে নড়াচড়া না করে তাহলে সেটাকে অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে ধরা হয়। পেটে থাকা বাচ্চার নড়াচড়ার ধরন মাসের পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়।
প্রতি মাসে বাচ্চার স্থান পরিবর্তন হতে থাকে যার কারণে তাদের নড়াচড়ার ধরনও পরিবর্তন হয়।
৪ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
একটি শিশু যখন পেটে আসে তখন থেকে শুরু করে 16 সপ্তাহ অর্থাৎ চার মাস পর্যন্ত পেটের মধ্যে বাচ্চা নড়াচড়া সেভাবে টের পাওয়া যায় না। যখন চার মাস হয় তখন থেকেই পেটের মধ্যে বাচ্চার নড়াচড়ার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। গর্ভবতী অধিকাংশ মহিলারে গর্ভবতী হওয়ার 16 থেকে 17 সপ্তাহ পরে তাদের পেটে বাচ্চা নড়াচড়া টের পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ গর্ভবতী হয় এমন বেশিরভাগ নারীর ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহের দিকে গিয়ে প্রথম নড়াচড়া অনুভব করতে পারে। একটি বাচ্চা নড়াচড়া করার মত পরিপুষ্ট হতে চার মাস সময় লেগে যায়। ৪ মাস হওয়ার আগে যদি আপনার পেটে বাচ্চা নড়াচড়া না করে সেক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নাই। চার মাস হওয়ার পরে এমনিতে পেটের মধ্যে বাচ্চা নড়াচড়া করতে শুরু করবে।
একজন গর্ভবতী মহিলার উচিত চার মাস হওয়ার পরে প্রথম ডাক্তারের কাছে গিয়ে চেকআপ করা। চেকআপ করার কারণে পেটে থাকা বাচ্চার অবস্থা সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন। সম্ভব হলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে আল্ট্রাসাউন্ডের সুপারিশ করবেন। অবশ্যই গর্ভবতী অবস্থায় শুরুর দিকে যত্নশীল বেশি থাকতে হবে।
বিশেষ করে বাচ্চা নড়াচড়া করার আগ পর্যন্ত। যখন বাচ্চা নড়াচড়া করা শুরু করবে তখন আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
পাঁচ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
পাঁচ মাসে গিয়ে বাচ্চার নড়াচড়া প্রথম শুরু হয়। একটি বাচ্চা নড়াচড়া করার মত সময় হতে পাঁচ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। অনেক ক্ষেত্রে তা ৫ মাসের একটু বেশি সময়ও লাগতে পারে। গর্ভধারণের সময় কাল পাঁচ মাস হলে তখন আপনি পেটের মধ্যে থাকা শিশুর নড়াচড়া টের পেতে শুরু করবেন। ৫ মাস হওয়ার প্রথম এক দুই সপ্তাহ আপনি টের না পেতেও পারেন
এতে করে চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই। তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে গিয়ে আপনি অবশ্যই পেটে থাকা বাচ্চার নাড়াচাড়া টের পাবেন। গর্ভধারণের সময় কাল পাঁচ মাস হলে মাসের শেষের দিকে গিয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন এবং ভালোভাবে নিজের চেকআপ করানোর পরে গর্ভে থাকা শিশুর নড়াচড়া এবং
হার্টবিট ও স্পন্দনের পরীক্ষা করে দেখবেন। প্রয়োজন হলে পেটে থাকা শিশুর জন্য আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। ডাক্তার পরামর্শ দিলে সেটা করে নেবেন এতে করে আপনি আরও বেশি নিশ্চিত হয়ে যাবেন। পাঁচ মাসে গিয়ে আপনি পেশাব করতে গিয়ে কিছুটা ব্যথা পেটে পারেন।
বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করলে সেই সময় থেকে আরো বেশি সতর্ক থাকতে শুরু করবেন। পাঁচ মাসের সময় গিয়ে যখন বাচ্চা প্রথমবার নড়াচড়া করে এই সময়টা একটি মহিলার জন্য দারুন একটি সময়। আপনি এ সময় গিয়ে একেবারে নিশ্চিত হয়ে যাবেন আপনার পেটের বাচ্চা সুস্থ আছে এবং তা নড়াচড়া করছে।
নড়াচড়ার প্রভাবটা এমন হবে যে পেটের মধ্যে বুদবুদ করছে এরকম কিছু। গর্ভধারণের সময়কাল যখন আরো বেশি বাড়তে থাকবে তখন বাচ্চা নড়াচড়া বাড়তে থাকবে।
৬ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
যেসব নারীরা প্রথমবার গর্ভবতী হয় তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় পেটে থাকা বাচ্চার নড়াচড়া টের পেটে ছয় মাস সময় পর্যন্ত লেগে যায়। ছয় মাসে গিয়ে বাচ্চা নড়াচড়া শুরু হয়। আর যেসব মহিলার পাঁচ মাসে পেটের মধ্যে বাচ্চা নড়াচড়া শুরু হয় তাদের ৬ মাসে গিয়ে বাচ্চা নড়াচড়া আর একটু বেড়ে যায়। এই সময়ে বাচ্চা পা দিয়ে কিক মারার পরিমাণটাও বাড়তে থাকে।
পেটের বিভিন্ন স্থানে নড়াচড়া শুরু হয়। পূর্বের মাসের তুলনায় এ মাসে নড়াচড়া প্রবণতা একটু বৃদ্ধি হয়।আর যারা প্রথম গর্ভবতী হয় তাদের ৬ মাসের দিকে গিয়েও পেটের মধ্যে বাচ্চা নড়াচড়া অল্প থাকে।বাচ্চা নড়াচাড়া পূর্ণতা বাড়তে থাকলে ডাক্তারের সাথে গিয়ে পরামর্শ করবেন। ডাক্তার যে পরামর্শ দেয় সেই মোতাবেক চলবেন তাহলে আপনার জন্য এবং আপনার পেটে থাকা বাচ্চার জন্য ভালো হবে।
যারা প্রথম গর্ভবতী তাদের বাচ্চা যদি ছয় মাসে গিয়েও অল্প নড়াচড়া করে। সেক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই কারণ সপ্তম মাসে গিয়ে নড়াচড়া এমনিতেই বেড়ে যাবে। এরপর ষষ্ঠ মাসে গিয়ে বাচ্চার হার্টবিটের এবং হৃদপিণ্ড নড়াচড়া পরীক্ষা করা উচিত এতে করে সব বিষয়ে সঠিকভাবে জানা যাবে।
৭ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া
সাত মাসে গিয়ে বাচ্চা নড়াচড়া অনেকটাই বেড়ে যায়। দিন রাতের পরিবর্তনের সাথে সাথে গর্ভে থাকা শিশুর নড়াচড়া ধরনের মধ্যে পরিবর্তন আসে। গত মাসের নড়াচড়ার প্রবণতা যতটুকু ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি নড়াচড়া বেড়ে যাবে। গরমের শিশু যে সময় ঘুমিয়ে থাকবে তখন তার নড়াচড়া টের পাওয়া যাবে না।
সাত মাসে বাচ্চা নড়াচড়া রাত দিনের ঘুমচক্রের মধ্যে চলতে থাকে। শিশুদের ঘুমের চক্র এক একটি বিশ থেকে 40 মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। যদি সাত মাস এ গিয়ে আপনি বাচ্চা নড়াচড়া দীর্ঘ একটা সময়ের জন্য বন্ধ দেখেন তাহলে পরবর্তী দুই ঘন্টার জন্য বাম হাত হয়ে শুয়ে থেকে শিশু নড়াচড়া দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
যদি এর মধ্যে শিশু নড়াচড়া ১০ বার বোঝা না যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। সাত মাসে গিয়ে বাচ্চার নড়াচড়া অন্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। মাঝেমধ্যে ডাক্তারের কাছে গিয়ে চেকআপ করবেন এবং বাচ্চার হৃদপিণ্ড এবং হার্টবিদের পরীক্ষা করে দেখবেন।
শেষ কথা
পেটে বাচ্চা আসার পর থেকে করতে মহিলাদেরকে অবশ্যই সতর্কতার সাথে থাকতে হবে। প্রতি মাসে গিয়ে এক থেকে দুইবার চেকআপ করবে। বাচ্চার যেন কোন ভাবে ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url