খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়- আপেল খাওয়ার অপকারিতা- আপেল গাছের পরিচর্যা

প্রিয় পাঠক আপনি কি আপেল খাওয়ার উপকারিতা এবং আপেলের গুনাগুন ও আপেল খাওয়ার নিয়ম  সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন।তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।আমি এখানে আপেল খাওয়ার উপকারিতা এবং আপেল বিষয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরবো।
আপেল খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়াও আপনি জানতে পারবেন আপেল খাওয়ার নিয়ম, আপেল খাওয়ার অপকারিতা,খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা,আপেলে কি কি ভিটামিন রয়েছে,এরকম আরো দরকারী তথ্য পাবেন।

ভূমিকা

আপেল এমন একটি ফল যা আমাদের চারিপাশেই পাওয়া যায়। আপেলের মধ্যে উপকারিতা এতটাই যে আমাদের শরীরে অনেক ধরণের পুষ্টি লাগে যেসব আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে সাহায্য করবে,সেসব ভিটামিনের অধিকাংশ ভিটামিন আপনি আপেলের মধ্যে পাবেন।আপেল আকাশে ছোট হলেও এটার গুনাগুন এবং ভিটামিন অপরিসীম।আপনি আমাদের সাধ্যের মধ্যে কিনে খাওয়ার মতো ফল।


আপনি আপেল সম্পর্কে সবকিছু জানার পরে এমনিতেই আপনার আগ্রহ বেড়ে যাবে।আপনি নিচে সবকিছু তুলে ধরেছি।আপনি পড়ুন আপনার উপকার কবে।

আপেল খাওয়ার নিয়ম

সবকিছুরই একটা নিয়ম রয়েছে,নিয়মের বাহিরে কোন কিছুই উচিত না।তেমনিভাবে আপেল খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে।চলুন আমরা নিয়মগুলো জেনে নেয়।
  • আপেল খাওয়ার সঠিক সময়গুলোর মধ্যে পুষ্টিবিজ্ঞানে যেসব আছে তাদের মতে সকাল বেলা আপেল খাওয়া সবচেয়ে উত্তম।
  • সারাদিনের মধ্যে একটি আপেল খাওয়া উচিত এর বেশি না খাওয়ার চেষ্টা করা।
  • খালি পেটে আপেল খাইলেও অনেক উপকার হয়।
  • প্রতিদিন সকালে বা খালি পেটে আপেল খাওয়ার মত অবস্থা না থাকে তাহলে সে বিকালের দিকে খাবে।
  •  কেউ যদি সকালে না পারে তাহলে দুপুরে খাবার আগে বারোটার দিকে নাস্তা হিসেবে একটা আপেল সে খেয়ে নিতে পারে।
উপরে যে নিয়মগুলো বলা হলো সে অনুপাতে আপেল খাওয়ার চেষ্টা করবেন এতে করে আপনি আপেলের মধ্যে যেগুলো ভিটামিন রয়েছে সেগুলো পাবেন এবং আপনার জন্য উপকার হবে নিয়মের বাইরে আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আপেল এমন একটি ফল যার উপকারিতা অপরিসীম।আপনি কল্পনা করতে পারবেন না যে আপেল খাওয়ার ফলে কি কি উপকার হতে পারে ও আপেল খাওয়ার দ্বারা আপনার কি পরিমাণ উপকার হতে পারে এবং আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কি পরিমান বাড়াতে পারে তা আপনার ধারণার বাহিরে।তাই চলুন আমরা এবার আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই যাতে করে আমাদের আপেল খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।

                                                                হজম শক্তি বৃদ্ধিকরে
আমাদের অধিকাংশে প্রায় সময় বদহজম হয়ে থাকে। আপেল হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।আপনি আপেল খেলে বদহজম থেকে মুক্তি পাবেন এটা বদহজম দূর করতে ভীষণ কার্যকরী।
                                                      ওজন কমানোর জন্যউপকারিতা
আমরা ওজন কমানোর জন্য অনেক রকমের চেষ্টা করে থাকে জিম করি ডায়েট করে আরো বিভিন্ন যেসব ধরনের খাবার আছে সেগুলো খেয়ে থাকি। আপেল এর মধ্যে ওজন কমানোর ক্ষমতা আছে আপনি নিয়মিত পরিমান মত আপেল খেলে আপনার ওজন অনেকটা কমে যাবে আপনি ওই দিকে টাকা নষ্ট না করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে করে আপনার শরীর ভালো থাকবে এবং আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।
                                                           রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমাদের সুস্থ থাকার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকা জরুরী।অনেক সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় আমাদের অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে।আপেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।তখন আমরা অনেক রোগ থেকে সুস্থ থাকতে পারবো এজন্য নিয়মিত আপেল খাওয়ার নিয়ম করা উচিত।
                                                                 গ্যাসের সমস্যার জন্য
আমরা গ্যাসের জন্য সম্পূর্ণ বিরক্ত গ্যাস আমাদের সবারই হয় এবং এই গ্যাসের জন্য বুক জ্বালাপোড়া করে।গ্যাস মূলত এসিড থেকে হয়।প্রতিদিন সকালে আপেল খাওয়ার ফলে এই এসিডের সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং ক্ষতিকর এসিড শরীরে তৈরি হবে না।এজন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে চা কফি না খেয়ে ফল খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত অথবা ফলের জুস খাওয়ার অভ্যাস করা।
                                                             কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতেও সকালে আপেল খাওয়ার ভূমিকা অপরিসীম।কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের জন্য মারাত্মক একটা সমস্যা।এটা শান্তিতে থাকতে দেয় না। আপেল খাওয়ার ফলে যেসব উপকার হয় সেগুলোর মধ্যে এটাও রয়েছে যে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে দেয়।
                                                                         হার্ট ঠিক রাখে
 হার্টকে সুস্থ রাখে। আপেলের মধ্যে এমন কিছু ভিটামিন আছে যেগুলো হার্টের সমস্যা ধরে রাখতে সাহায্য করে।আপেলে কি কি ভিটামিন রয়েছে তা আমরা আলাদা করে তুলে ধরব আপনি আগে আপেলের উপকারিতা জেনে নিন এরপরে আমরা আপনার উপকারার্থে আপেলের ভিটামিন কি কি রয়েছে তা তুলে ধরবো।
                                                                   শরীর ফোলা দূর করে
পরিচিত এবং আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের শরীর ফোলা বা শরীরের কিছু অংশ ফোলা রয়েছে ।এসব মানুষ আপেল খাওয়ার ফলে তাদের শরীরে ফোলা ভাব দূর হয়ে যায় এবং শরীর সুন্দর হয়ে যায়।
                                                                    দাঁতের জন্য উপকারী
দাঁত ঝকঝকে চকচকে হতে সাহায্য করে।আপনি আপেল খাওয়ার ফলে আপনার দাঁত ঝকঝকে চকচকে হয়।বিস্তারিত ভাবে বলে আপনি যখন আপেল চাপাবেন তখন আপনার মুখের মধ্যে রস তৈরি হবে ওই রস আপনার দাঁতের কোনায় কমায় গিয়ে সেখান থেকে ময়লা আবর্জনা দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁত ঝকঝকে চকচকে হয়ে যায়।
                                                               ডায়াবেটিসের জন্য উপাকারী
ডায়াবেটিসের পয়েন্ট ধরে রাখতে সাহায্য করে।আপনি নিয়মিত আপেল খাওয়ার ফলে আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে সেটি নিয়ন্ত্রণে থাকে কারণ আপেলের মধ্যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার মত ভিটামিন রয়েছে আর ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটা আপনাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে।

খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়

আমরা উপরে আপেল খাওয়ার নিয়ম,সম্পর্কে জেনেছি।এখন আমরা জানবো খালি পেটে আপেল খেলে কি হয়।তাই চলুন খালি পেটে আপেল খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে জেনে নেয়।
  • আমরা রাতে যখন খাবার খেয়ে ঘুমায় আবার যখন সকালে খাবার খায় এই দুই সময়ের মাঝে অনেক বড় একটা ফাঁকা পড়ে থাকে।আমরা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে খালি পেটে যখন আপেল খাবো তখন আপেল আমাদের পুরো শরীরে ভিটামিন সহজে সরাতে পারবে ।
  • পেটের সমস্যা থাকলে সেটাও দূর হয়ে যাবে যেটাকে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকি।
  • যেসব মানুষের রক্ত লাগে তাদের মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছে রক্তশূন্যতার রোগী।সকালে খালি পেটে আপেল খাইলে রক্তশূন্যতার অভাব দূর হয় এজন্য খালি পেটে আপেল খাওয়ায় সবচেয়ে বেশি উপকারী।
  • খালি পেটে আপেল খাওয়ার কারণে আপনার শরীরের ওজন কমতে সাহায্য করবে।
  • সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ঢুকে যা আপনার হারকে মজবুত রাখতে সাহায্য করবে।

আপেল গাছের পরিচর্যা

আপেল খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে সেসব আপনি ২ ভাবে নিতে পারেন ১ আপেল কিনে খাওয়ার মাধ্যমে ২ আপেল গাছ লাগিয়ে সেই গাছ থেকে আপেল খাওয়ার মাধ্যম। আমরা অনেকেই আপেল গাছ চাষ করতে চাই কিন্তু আপেল গাছের পরিচর্যা  এবং লাগানোর নিয়ম না জানার কারণে আমরা চাষ করতে পারি না।

আমি এখানে গাছ লাগানো এবং আপেল গাছের পরিচর্যা   কিভাবে করে সবকিছু বলবো।আপেল চাষ সাধারণ হয়ে থাকে শীতপ্রধান দেশে।আপনি যদি বাসার ছাদে চাষ করতে চান তাহলে এই পদ্ধতি ফলো করেন।আপেল গাছ তুলনায় বড় এজন্য বড় আকাশের টপ লাগবে, মিনিমাম ২০ ইঞ্চি।আপেল গাছ লাগানোর জন্য যেরকম মাটি লাগবে সেটা হচ্ছে

পানি ন্যাকাসি মাটি মানে গোড়ায় পানি জমে থাকে না এমন কারণ আপেল গাছ গোড়ায় পানি সহ্য করতে পারে না।এজন্য কোকপিট,বালু,মাটি,জৈব স্যার এই কটা জিনিস একসাথে মিশিয়ে আপেল গাছ লাগানোর জন্য মাটি তৈরি করুন।তারপর গাছ সেখানে পুতে দিন এবং পোকা কামড় থেকে নিরাপদ রাখতে নিমপাতার রসের স্প্রে করতে হবে।

আরো পড়ুন :: 

মাঝে মধ্যে গাছের গোড়ার মাটি খুঁচিয়ে সেখানে গোবর সার দিতে হবে,এটা গাছকে মজবুত রাখার জন্য খুব উপকারী।আপনি এরকম ভাবে গাছ লাগালে আপনার আপেল গাছ বড় হবো এখন আপেল ধরবে আশা করা যায়।গাছের পাতা বছরে ১ বার ছাটাই করতে হয়।৪০ টা পাতাই ১ টা আপেল হয়।

আপেল খাওয়ার অপকারিতা

আপেলের যেমন অনেক উপকার রয়েছে তেমনি কিছু অপকারও রয়েছে।এবার আমি অপকারিতা তুলে ধরবো যাতে আপনি আপেল খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক থাকে।
  • কখনও রাতে আপেল খাবেন না।রাতে আপেল খাইছে গ্যাস্টিকের সমস্যা হয়।তখন বুক জ্বালাপোড়া করবে।
  • আপলে খাইলে যেমন দাত মজবুত হয় তেমনিভাবে অতিরিক্ত আপেল খাইলে দাত ক্ষয় হয়ে যায়।
  • বেশি বেশি আপেল খাইছে ডায়বেটিস রোগিদের কার্বোহাইড্রেট এর জন্য সমস্যা হয়।
  • এর্লাজির সমস্যা হতে পারে।এর্লাজি বিভিন্ন ধরণের হয়।হয়ত কারো আপেলে এর্লাজি থাকতে পারে।
  • গর্ভবতী মহিলার উচিত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে আপেল খাওয়া তাছাড়া হিতের বিপরীত হতে পারে।
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ফরমালিন যুক্ত আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকবে।এটা আপনার শরীরে বিষ প্রয়োগের মতো কাজ করবেন।

শেষ কথা

আপেল অন্তত উপকারী ফল। আপনি আজেবাজে জিনিস না খেয়ে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন,শুধু আপেল নয় সব ধরণের ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী হবে।

আমার পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে বা উপকৃত হোন তাহলে আপনি আপনার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুমহলে শেয়ার করবেন যাতে তারা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url