সুপারি দিয়ে কি তৈরি হয়- খালি সুপারি খেলে কি হয়

প্রিয় পাঠক আপনি কি সুপারি দিয়ে কি তৈরি হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোস্টের মধ্যে সুপার দিয়ে কি তৈরি হয় এবং সুপার খেলে কি কোন ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
খালি সুপারি খেলে কি হয়
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন শুকনো সুপারি খেলে কি ক্ষতি হয় এবং সুপার খেলে মাথা ঘোরায় কেন খালি সুপারি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

সুপারের একটি ফল বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ফলের চাষ হয়। বিশেষ করে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুপারি চাষ হয় ভারতে। পান খাওয়ার কাজে সুপারি ব্যবহার করা হ।য় পান খাওয়া বাদেও আরও বিভিন্ন রকম কাজ আছে যেগুলোতে সুপারি ব্যবহার করতে হয়। সুপারি ছাড়া পান খেলে তেমন কোনো স্বাদ উপভোগ হয় না।


যেসব মানুষ দাঁত না থাকার কারণে সুপারি খেতে পারে না তারা সুপারি বেটে পানের সাথে খায়।

সুপারি খেলে মাথা ঘুরায় কেন

কাঁচা সুপারি খেলে মাথা ঘুরায়। শুকনো সুপারী খাওয়ার কারণে খুব কম সময় মাথা ঘুরায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাঁচা সুপারি খাওয়ার কারণে মাথা ঘুরে যায়। বিশেষ করে যারা নতুন নতুন কাঁচা সুপারি খায় তাদের সাথে এ বিষয়টি বেশি হয়ে থাকে। যারা কাঁচা সুপারি খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে তাদের মাথা কেমন ঘুরায় না।

কাঁচা সুপারি খাওয়ার সময় যখন চিবানো হয় তখন মাথার দুই পাশ ঘেমে যায় এবং কপাল দিয়ে ঘাম বের হতে শুরু করে। মাথা ঘোরানোর পিছনে কারণ হচ্ছে পান চিবানো সময় লালা এবং সুপারির যে রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে তা জিহ্বা সাহায্যে রক্তনালীতে প্রবেশ করে এবং পানের সাথে চুন থাকার কারণে তা আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে যায় যার কারণে মাথা ঘুরতে থাকে

এবং হাইপারথ্যালামাসে কারণে মাথা ঘেমে যায়। সুপারি খাওয়ার কারণে যাদের মাথা ঘুরে তারা সুপারিকে এড়িয়ে চলবেন। মাথা শুধু কাঁচা সুপারি খাওয়ার কারণে ঘুরে এজন্য যদি আপনার কাছে সুপারি খাওয়ার কারণে মাথা ঘুরে তাহলে আপনি কাঁচা সুপারি থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।

খালি সুপারি খেলে কি হয়

অনেক মানুষ আছে যারা শুধু সুপারি চিবিয়ে খায়। বিশেষ করে কোন ভাল খাবার দিয়ে ভাত খেলে যেমন গোস্ত বা মাছ দিয়ে ভাত খাওয়ার পরে তারা কয়েক দানা সুপারি মুখে নিয়ে চিবিয়ে থাকে। শুধু সুপারি নিয়ে চাবানোর কারণে মুখ থেকে মাছের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায় এবং যদি বমি বমি ভাব আসে তাহলে সেই ভাব দূর হয়ে যায়।

শুধু সুপারির চিবিয়ে খাওয়ার কারণে শরীরের মধ্যে একটি গরম ভাব তৈরি হয় যার ফলে শরীর ঘেমে যেতে পারে। শুধু সুপারি খাওয়ার কারণে তখন আর কিছু সমস্যা দেখা দেয় যেমন হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। যাদের এজমার সমস্যা রয়েছে তাদের এজমা বেড়ে যেতে পারে।


নাভির স্পন্দনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে শরীরের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করবে। সুপারিতে যে রস থাকে তা জিব্বার নিচ দিয়ে রক্ত নাড়াতে প্রবেশ করে শরীরের ভিতরে গরম ভাব তৈরি করে আর সে গরম ভাবের কারণে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়। কাঁচা সুপারি কখনোই শুধু চিবিয়ে খাওয়া সম্ভব নয় কারণ কাঁচা সুপারি খাওয়ার কারণে মুখ কষা হয়ে যায় এবং মুখে রুচি হারিয়ে যায়।

শুধু সুপারি খাওয়া বলতে মানুষ শুকনো সুপারি খেয়ে থাকে।

সুপারি দিয়ে কি তৈরি হয়

সুপারি পান খাওয়ার কাজে ব্যবহার হয়। এছাড়াও আরো কিছু কাজ রয়েছে যে কাজগুলোতে সুপারি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে বিয়েতে একটি প্রচলন রয়েছে যেদিন বিয়ে ঐদিন সকালে ছেলেপক্ষ মেয়ে পক্ষের বাসায় মাছ পান এবং সুপারি নিয়ে যাবে। এ সময় মাছ পানের সাথে সুপারের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় বমি বমি ভাব দূর করতেও সুপারি সাহায্য করে।

সুপারি মূলত খাওয়ার কাজে ব্যবহার হয় কিন্তু সুপারের পাতা অনেক কাজে ব্যবহার হয়। সুন্দর সুন্দর আসবাবপত্র বানাতে সুপারি পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে সুপারি পাতা ব্যবহার করে ওয়ান টাইম প্লেট এবং বাটি তৈরি করা হচ্ছে। যেসব প্লাস্টিকের ওয়ান টাইম প্লেট খালি গ্লাস পাওয়া যায় এগুলোতে খাবার খাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি রয়েছে

এবং সেসব প্লাস্টিকের প্লেট ব্যবহার করার ফলে পরে ফেলে দেয়ার কারণে পরিবেশ নষ্ট হয়। অপরদিকে সুপারি পাতার প্লেট ব্যবহার করলে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্লাস্টিকের প্লেটের চেয়ে সুপারি পাতার প্লেট দেখতে আরো বেশি আকর্ষণীয় এবং মজবুত। দিনদিন এই সুপারি পাতার প্লেটের এবং বাটির চাহিদা বেড়েই চলছে।

সুপারি পাতা দিয়ে প্লেট বানিয়ে সেসব প্লেটে রং করে বা বিভিন্ন ডিজাইন করে ঘরের ওয়ালমেট হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। সুপারি শুধু খাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় এবং সুপারি পাতা দিয়ে অনেক আসবাবপত্র তৈরি হয়।

সুপারি খেলে কি কোন ক্ষতি হয়

স্বাভাবিক মাত্রায় সুপারি খাওয়ার ফলে কোন রকমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই কিন্তু আপনি যখন অতিরিক্ত এবং নিয়মিত সুপারি খেতে থাকবেন তখন তা আপনার শরীরের উপরে যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। সুপারিশ জিহ্বার নিচ দিয়ে রক্তনালীতে প্রবেশ করে বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি করে

যেমন উচ্চ রক্তচাপ। পুরা শরীর ঘেমে যাওয়া। স্বাভাবিকের তুলনায় গরমের মাত্রা বেশি হয়ে যাবে। বুক ধরফর শুরু হবে। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের ডাইবেটিস বেড়ে যেতে পারে। হাঁপানি অ্যাজমা এসব সমস্যা দেখা দিবে। এছাড়াও হৃদরোগের উপরে প্রভাব ফেলবে। সুপারি থেকে নির্গত রস এতটাই ভয়ংকর যে শরীরের প্রতিদিন অঙ্গের ক্ষতি করার সামর্থ্য রাখে।

এছাড়াও সুপারি খাওয়ার কারণে মাথা ঘুরে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। সুপারি খাওয়ার কারণে লিভার ইনজুরি হওয়া। কিডনির রোগ। বি পি এইচ। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়া। দাঁত এবং মারির ক্ষয় হওয়া ও অল্প বয়সে দাঁত পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। গর্ভবতী অবস্থায় সুপারি খাওয়ার কারণে

পেটে থাকা বাচ্চার ওজন এবং উচ্চতা কম হতে পারে। অতিরক্ত মাত্রায় সুপারি খেতে থাকার কারণে খাদ্যনালী ও মুখের ভিতরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এসব ক্ষতি থেকে বাঁচতে নিয়মিত এবং অতিরিক্ত সুপারি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সুপারি যদি আপনার খেতে হয় তাহলে পানের সাথে সামান্য পরিমাণ খাবেন।

কখনো অতিরুক্ত সুপারি দিয়ে খাবেন না। সামান্য পরিমাণ সুপারি দিয়ে খাওয়ার কারণে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। অতিরিক্ত মাত্রায় দিবেন তখন আপনার জন্য এসব ক্ষতি ধেয়ে আসবে।

শুকনো সুপারি খেলে কি ক্ষতি হয়

সুপারি কাঁচা হোক বা শুকনো হোক কোনটি মানুষের শরীরের জন্য উপকারী নয়। শুকনো সুপারের রস জিব্বার নিচের নালা দিয়ে রক্ত প্রণালীতে প্রবেশ করে বিভিন্ন রকমের সমস্যা সেখান থেকে তৈরি করে। শুকনো সুপারিকে চিকিৎসকদের মতে এক ধরনের বিষ বলা হয়। শুকনো সুপারি খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিবে।

সবচেয়ে জটিল ও বড় সমস্যা হচ্ছে নিয়মিত এবং অতিরুক্ত শুকনো সুপারি খাওয়ার কারণে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আর ক্যান্সার মৃত্যুর কারণ। শুকনো সুপারি খাওয়ার কারণে শরীরের ভিতরে গরম অনুভব তৈরি হয় যার কারণে শরীর ঘেমে যেতে পারে। যারা প্রেসারের বা রক্তচাপের রোগী রয়েছে তাদের হাই প্রেসার বা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা অধিক থাকে।


যারা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত রয়েছেন তারা কখনোই শুকনো সুপারি খাবেন না কারণ শুকনো সুপারি খাওয়ার কারণে হাঁপানি রোগ বেড়ে যেতে পারে। শুকনো সুপারি খাওয়ার কারণে দাঁত এবং মারি দিন দিন ক্ষয় হতে থাকে। যা যারা দীর্ঘকাল ধরে শুকনো সুপার খেয়ে আসছে তাদের অকালে দাঁত পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

শুকনো সুপারিতে অবশ্যই উপকারিতা রয়েছে যখন আপনি নিয়ম করে এবং সামান্য পরিমাণ খাবেন তখনই আপনি উপকৃত হতে পারবেন। যখন আপনি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাবেন তখন তা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর রূপ ধারণ করবে। এজন্য যারা শুকনো সুপারি খান তারা কখনোই অতিরিক্ত খাবেন না।

পানের সাথে খাওয়ার দরকার হলে সামান্য পরিমাণ নিয়ে খাবেন তাহলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন এবং ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন।

শেষ কথা

সুপারির উপকারিতা অপকারিতা উভয়তেই রয়েছে। উপকারিতা পাওয়ার জন্য সামান্য পরিমাণ খেতে হবে আর ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকতে কখনোই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এই একটা দিক লক্ষ রাখলে আপনি সুপারি থেকে উপকৃত হতে পারবেন এবং নিজেকে অপকারিতা থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারা সুপারি সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url