কাঁচা কলা খেলে কি ওজন বাড়ে-গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি কি গর্ভাবস্থায় কাচা কলার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে গর্ভাবস্থায় কাচা কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কাঁচা কলা খেলে কি ওজন বাড়ে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
কাঁচা কলা খেলে কি ওজন বাড়ে
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন কাচা কলা খেলে কি গ্যাস হয় এবং কাঁচা কলা আমাশয় ও কাঁচা কলার অপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

কলা কাচা এবং পাকা উভয় অবস্থাতে খাওয়া যায়। পাকা কলা খাওয়ার পুষ্টিগুণ ভিটামিন ভিন্ন এবং কাঁচা কলা খাওয়ার পুষ্টিগুণ ভিটামিন ভিন্ন রকম। কাঁচা কলা বিশেষ করে তরকারি রান্না করে বা ভর্তা করে খাওয়ার জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়। কাঁচা কলায় এমন কিছু ভিটামিন রয়েছে যেগুলো অনেক অসুস্থতা দূর করতে সক্ষম।


কাঁচা কলা দামের দিক দিয়ে কম হওয়ার কারণে আমাদের জন্য কিনে খাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

কাঁচা কলা খেলে কি গ্যাস হয়

অনেকে আছেন যারা মনে করে থাকেন কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা গ্যাসটিকের লক্ষণ গুলো দেখা দেয়। এই ধারণা একেবারেই ভুল। কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ক্যালোরি ভিটামিন পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা একটি মানুষের শরীরের জন্য অনেক জরুরী। কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে পেটের যত রকমের সমস্যা রয়েছে

যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য,বদহজম,পেট গরম হওয়া কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে এই সমস্যাগুলো দূর হয়। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের গ্যাস্ট্রিকের নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং কমিয়ে দিতেও পারে কাঁচা কলা। যারা পেটের এবং গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন তারা নিয়মিত কাঁচা কলা রান্না করে বা ভর্তা করে খাবেন তাহলে আপনার পেটের এবং গ্যাসের উভয় সমস্যায় ভালো হয়ে যাবে।

যাদের হুটহাট পেট গরম হয় তারা পেট গরম হলে কাঁচা কলা ভর্তা করে বা কাঁচা কলা রান্না করে খাবেন তাহলে আপনার পেট গরম হওয়ার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কলা কাঁচা অবস্থায় এটাকে সবজির মধ্যে ধরা হয় এবং অনেকে ফল হিসেবে চিনে। কিন্তু কলা যখন পরিপূর্ণভাবে পেকে যায় তখন সেটাকে আর সবজি বলা হয় না। তখন তা ফল হয়ে যায়।

কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে কোন রকমের গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে নেই এজন্য আপনি কাঁচা কলা খাওয়ার সময় চিন্তা ছাড়াই খেতে পারেন।

কাঁচা কলা খেলে কি ওজন বাড়ে

কাঁচা কলার মধ্যে অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা কলা দেখতে ছোট হলেও তা উপকারের দিক দিয়ে অনেক বড়। কাঁচা কলাই এমন কিছু উপকারিতা রয়েছে যেগুলো একটি মানুষের শরীরের জন্য অনেক জরুরী। কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। হৃদরোগে ঝুকি অনেক কমে যায়। ডায়রিয়া আমাশয় ভালো করতে পারে।

পেটের যত রকমের সমস্যা রয়েছে সেসব সমস্যাও দূর করতে পারে কাঁচা কলা। অনেকে দ্বিধা দ্বন্দ্বে থাকেন কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে কি ওজন বেড়ে যায়। যারা এই দ্বিধা দধনে থাকেন তাদের প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে না। কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে কোনভাবেই ওজন বাড়ে না বরং কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে যারা ডায়েট করতে চান বা ওজন কমাতে চান তারা কাঁচা কলা খেয়ে ওজন কমাতে পারবেন।


কাঁচা কলার মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকে ফাইবার পেটে দীর্ঘ সময় ধরে ভরে রাখে যার কারণে ক্ষুধা কম লাগে এবং ওজন কমতে থাকে। ওজন বাড়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। এছাড়াও কাচা কলা আঁশযুক্ত হওয়ার কারণে যাদের মেদ রয়েছে তাদের মেদ আস্তে আস্তে কমিয়ে দেয়। ২০০৮ সালে জাপানের মানুষ ডায়েট করার জন্য প্রচুর পরিমাণে কাঁচা কলা খেতে শুরু করে।

একটা সময় গিয়ে দেখা যায় জাপানের কাঁচা কলার সংকট পড়ে গেছে। সেই সময় জাপান সরকার অন্য দেশ থেকে কাঁচা কলা আমদানি করতে বাধ্য হয়। এখন থেকে আপনি কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই ইচ্ছামত কাঁচা কলা খেতে পারেন এতে করে আপনি উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি আপনার ওজনও বারবে না এবং যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনার ওজনও কমে যাবে।

গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা

একজন গর্ভবতী মাকে অনেক রকমের খাবার খেতে হয় কারণ গর্ভাবস্থায় তার নিজের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন পুষ্টির প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি তার পেটে থাকা বাচ্চার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন মিনারেল পুষ্টিগণের প্রয়োজন পড়ে। গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকার মধ্যে কাঁচা কলা যোগ করলে আপনি আরো বেশি উপকৃত হতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মহিলার একটি সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় তা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদ হজম। কাঁচা কলা রান্না করে খেলে বা ভর্তা করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদ হজমের সমস্যা দূর হয়ে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য গর্ভবতী মায়েরা অনেক রকমের সমস্যায় ভোগেন। গর্ভাবস্থায় কোন মহিলা কাঁচা কলা খেলে সে কোষ্ঠকাঠিন্যর সকল সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকবে।

পেটের ভেতর যদি কোন রকমের ব্যাকটেরিয়া জীবাণু থাকে সে জীবাণুগুলোকে দূর করে ফেলতে পারে কাঁচা কলা। গর্ভাবস্থায় অনেকের ওজন বেড়ে যায় যার কারণে বাচ্চা হওয়ার সময় অনেক রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আবার অনেকে আছেন যারা বা ওজন বেশি হওয়ার কারণে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।


গর্ভ অবস্থায় কাঁচা কলা খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না বরং ওজন কমে যার কারণে বাচ্চা হওয়ার সময় অনেকটাই সহজ হয়ে যায় এবং কষ্ট কম হয়। পাতলা পায়খানা ডায়রিয়ার মত সমস্যা হলে সে সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কাঁচা কলা। গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময় পাতলা পায়খানা বা ডায়েরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

এজন্য কাঁচা কলার ভর্তা খেলে এই সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। গর্ভবতী মহিলার হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে পারে। কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা হৃদরোগে ঝুঁকে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যা রয়েছে তারাও কাঁচা কলা খেলে উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে যার কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এসব উপকারিতা ছাড়াও কাঁচা কলাতে রয়েছে ভিটামিন পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এই সবগুলো একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অনেক বেশি জরুরী। এজন্য চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় আপনার খাবারের তালিকার মধ্যে কাঁচা কলাকে যুক্ত করার তাহলে আপনি আরো বেশি উপকৃত হতে পারবেন।

কাঁচা কলা আমাশয়

আমাশয় ভালো করতে কাঁচা কলার ভূমিকা অপরিসীম। আজ থেকে বহু কাল আগে থেকেই আমাশয় হলে কাঁচা কলা খাওয়ার মাধ্যমে আমাশয় ভালো করার প্রথা চলে আসছে। কাঁচা কলা আঁশযুক্ত হওয়ার কারণে আমাশয় খুব তাড়াতাড়ি ভালো করে দিতে পারে। আপনার আমাশয় হলে কাঁচা কলার তরকারি রান্না করার মাধ্যমে

অথবা কাঁচা কলা ভর্তা করে খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আমাশয় খুব তাড়াতাড়ি ভালো করে ফেলতে পারবেন। সচারচর এই দুই পদ্ধতিতে আমাশার জন্য কাঁচা কলা খাওয়া হয়। এছাড়াও আরও একটি পদ্ধতি রয়েছে সেই পদ্ধতিতে কাঁচা কলার পানি খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়। কাঁচা কলা ছোট ছোট করে কেটে পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন।


এভাবে সারা রাত রাখার পরে সকাল বেলা খালি পেটে সেই পানি পান করবেন তাহলে আপনার আমাশয় এর সমস্যার পাশাপাশি পেটের ভিতরে থাকা যাবতীয় সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। আমাশয় এর বিরুদ্ধে কাঁচা কলা শত্রুর মত কাজ করে এজন্য আপনার যদি এখন থেকে আমশয় হয় তাহলে আপনি সর্বপ্রথম ঔষধ না খেয়ে কাঁচা কলা রান্না করে বা ভর্তা করে খাওয়ার মাধ্যমে নিজের চিকিৎসা নিজে করবেন।

যদি আপনার এভাবে ভালো হয়ে যায় তাহলে আর ওষুধ খাবার কোন দরকার নেই।

কাঁচা কলার অপকারিতা

কাঁচা কলায় যেমন অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। তেমনি ভাবে কাচা কলার মধ্যে কিছু অপকারিতা রয়েছে। যখন আপনি অতিরিক্ত মাত্রায় কাঁচা কলা খেতে থাকবেন তখন তা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হবে। বিশেষ করে অতিরিক্ত মাত্রায় কাঁচা কলা খাওয়ার কারণে পেটে বদহজমের গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কাঁচা কলার মধ্যে তেমন কোন অপকারিতা নাই। যখন আপনি অতিরিক্ত পরিমাণ খাবেন তখন এটা আপনার পেটের জন্য অপকারিতা হবে। কাঁচা কলা খাওয়ার পরে যদি আপনার পেটে তা সহ্য না হয় সে ক্ষেত্রে আপনি কাঁচা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। অনেকে আছেন যারা কাঁচা কলা খেতে পারেন না। যদি আপনার খুবই সমস্যা হয় খেতে তাহলে আপনি কাঁচা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন


কারণ কোন খাবারের প্রতি যদি রুচি না থাকে তাহলে সে খাবার খাওয়ার কারণে পেটে সমস্যা হয়। কাঁচা কলার অপকারিতা থেকে বেঁচে থাকতে অবশ্যই পরিমাণ মতো খাবেন তাহলে আপনার জন্য তা উপকারিতা গুলো বয়ে নিয়ে আনবে এবং অপকারী দিকগুলো থেকে আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে।

শেষ কথা

কাঁচা কলা দামের দিক দিয়ে কম এবং উপকারিতায় ভরপুর এজন্য চেষ্টা করবেন কাঁচা কলা রান্না করে বা ভর্তা করে খান তাহলে আপনি অনেক বেশি উপকৃত হতে পারবেন। আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও কাঁচা কলা সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url