কত বছর পর্যন্ত হরলিক্স খাওয়া যায়- হরলিক্স লাইট এর উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি কি কত বছর পর্যন্ত হরলিক্স খাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এ পোষ্টের মধ্যে কত বছর পর্যন্ত হরলিক্স খাওয়া যায় এবং বড়দের হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম ও কোন হরলিক্স ভালো সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন হরলিক্স খাওয়ার বয়স এবং হরলিক্স লাইট এর উপকারিতা ও হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
মানুষের শরীরের পুষ্টিগণের ভারসাম্য ঠিক রাখতে বা যেসব বাচ্চা বা বড় মানুষ ঠিকমত খাবার খেতে পারে না তাদের শরীরের পুষ্টিগুণের ভারসাম্য ঠিক রাখতে তাদেরকে হরলিক্স খাওয়ানো হয়। হরলিক্স বিভিন্ন পুষ্টিগুণ দ্বারা তৈরি করা হয় যার কারণে এটা খেতে অনেক সুস্বাদু হয় ও মানুষের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকার হয়।
বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর প্রতিটি দেশে এ হরলিক্স এর প্রচলন রয়েছে।
কোন হরলিক্স ভালো
বাচ্চাদের জন্য সবচেয়ে উপকারী হরলিক্স হচ্ছে বাসায় তৈরি করা হরলিক্স। হরলিক্স তৈরি করার জন্য যেসব উপাদান লাগে সেই সব উপাদান বাসায় কিনে এনে সেগুলো বিলিন্ডারে সাহায্যে বা মেশিনের সাহায্যে পিষে যদি বাসায় হরলিক্স বানানো হয় সে হরলিক্স একটি বাচ্চা শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকার হবে।
কারণ এ হরলিক্স কোন জাতীয় কেমিক্যাল বা কোন কিছু দেয়া থাকে না যার কারণে বাচ্চা শরীরের ভেতরে গিয়ে কোনো রকমের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাসায় যে হরলিক্স তৈরি করা হয় ওই হরলিক্সের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পুষ্টিকর উপাদান গুলো দেয়া হয় যার কারণে বাচ্চা শরীরের জন্য আরো বেশি উপকার হয় এবং বাচ্চার হার মজবুত হতে ও শরীরের পুষ্টিগুন পূরণ করতে সক্ষম হয়।
আপনি যদি বাসায় তৈরি করে হরলিক্স বাচ্চাদের খাওয়াতে না চান সেক্ষেত্রে দোকানে যে হরলিক্স পাওয়া যায় অর্থাৎ বাংলাদেশের যে হরলিক্স সচরাচর ব্যবহার করা হয় আপনি তাদেরকে সেই হরলিক্স খাওয়াতে পারেন। সেই হরলিক্স না খাওয়াতে চাইলে হরলিক্স লাইট বা লাইট যেটা রয়েছে সেটা খাওয়ানো যেতে পারেন।
হরলিক্স মূলত বাচ্চার শরীরের ভেতরে সেরকম কোন উপকারিতা প্রয়োগ করতে পারে না। যেসব বাচ্চার বয়স কম তাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স রয়েছে এবং বাচ্চা বড় হওয়ার পর থেকে অন্য যে হরলিক্স রয়েছে সে হলে তাদেরকে খাওয়াতে হয়। বাচ্চার বয়সের উপর নির্ভর করে তাদেরকে হরলিক্স খাওয়ানোর তারতম্য নির্ধারণ করে।
এক দুই এবং তিন বছরের বয়সের বাচ্চাদেরকে হরলিক্স খাওয়াতে চাইলে তাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ এক রয়েছে। চার পাঁচ ছয় বছর বয়সের বাচ্চাদের হরলিক্স খাওয়াতে চাইলে তাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স ইস্টেজ দুই রয়েছে।
হরলিক্স খাওয়ার বয়স
হরলিক্স খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। শুধু বয়সের উপরে নির্ভর করে হরলিক্সের ধরন পরিবর্তনশীল। ছোট বাচ্চাদের জন্য এক ধরনের হরলিক্স রয়েছে এবং বাচ্চারা যে সময় বড় হয় তাদের জন্য ভিন্ন রকমের হরলিক্স রয়েছে। এমনকি মানুষের বয়স যখন আরো বেশি হয় বা মানুষ বৃদ্ধ হয় তাদের জন্য হরলিক্স কোম্পানি হরলিক্স প্রস্তুত করেছে।
এক থেকে তিন বছর বয়সের বাচ্চাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ১ তৈরি করা হয়েছে এবং চার থেকে ছয় বছর বয়সের বাচ্চাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ২ তৈরি করা হয়েছে। এরপর থেকে বয়সের বাচ্চাদের জন্য হরলিক্স নিউটেশন তৈরি করা হয়েছে এ হরলিক্স বিভিন্ন ফ্লেভারের হয় যেমন চকলেট ফ্লেভারের হয়ে থাকে
কেসার ফ্লেভারের হয়। এছাড়া আরো বেশ কয়েক রকমের ফ্লেভার হয়ে থাকে বাচ্চারা চকলেট খেতে বেশি করে। যাদের বয়স ৪০ বা ৫০ এর উপরে হয়ে গেছে তারাও চাইলে এই হরলিক্স খেতে পারবে কারণ তাদের শরীরেও ক্যালরি বা হাড় ক্ষয় রোধ করতে এ হরলিক্স সাহায্য করবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন হরলিক্স যে কোন বয়সের মানুষরাই খেতে
পারবে। শুধু বয়স অনুপাতে হরলিক্স এর ধরন ভিন্ন হবে।
কত বছর পর্যন্ত হরলিক্স খাওয়া যায়
এক বছর বয়স থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অর্থাৎ আপনি যতদিন বাচবেন ততদিন পর্যন্ত হরলিক্স খেতে পারবেন। হরলিক্স খাওয়ার জন্য নির্ধারিত বা নির্দিষ্ট কোন বয়সের সময়সীমা ঠিক করা হয় নাই। বয়স অনুপাতে হরলিক্সের ধরন রয়েছে এবং এ ধরন থাকার পিছনে কারণ হচ্ছে যে বয়সের মানুষের শরীরে যেমন পুষ্টিগুণ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন সেই দিকে বিবেচনা করেই বানানো হয়।
আপনার বাচ্চার বয়স যখন এক বছর হবে আপনি যদি তাদেরকে হরলিক্স খাওয়াতে চান তাহলে এক থেকে তিন বছর বয়সের বাচ্চাদেরকে আপনি জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ এক খাওয়াতে হবে। আপনার বাচ্চা যখন আরেকটু বড় হবে অর্থাৎ চার থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে চলমান তখন তাদেরকে জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ দুই খাওয়াতে হবে।
ছয় বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স তৈরি করা হয়েছে। বাচ্চার বয়স যখন ছয় বছরের বেশি হবে তখন তাদের জন্য হরলিক্সের ধরন ভিন্ন রয়েছে এবং এ হরলিক্স মানুষের বয়স যত বেশি হোক না কেন তাদেরকে খাওয়ানো যাবে। শুধু খাওয়ানোর ক্ষেত্রে পরিমাপ কমবেশি হবে তাছাড়া সবকিছুই ঠিক থাকব।
হরলিক্স লাইট এর উপকারিতা
হরলিক্সের অনেকগুলো প্রকার হয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হরলিক্স লাইট। হরলিক্স লাইট সেইসব লোকের জন্য তৈরি করা হয় যাদের বয়স পরিপক্ক হয়ে গেছে বা ৩০ বা ৪০ বছরের উপর হয়েছে তাদের জন্য। হরলিক্স লাইটে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি থাকে যা একজন বয়স্ক মানুষের শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
বুড়ো হওয়ার সাথে সাথে শরীরের হাড় ক্ষয় হতে থাকে। হরলিক্স লাইট সে হাড় ক্ষয় রোধ করতে সক্ষম। হরলিক্স এর দাবি হরলিক্স লাইট খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেউ যদি হরলিক্স লাইট প্রচুর পরিমাণে খেতে থাকে তাহলে তার মোটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হরলিক্স লাইটের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি,ভিটামিন ডি এবং জিংকের মতো উপাদান
যেগুলো একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে শরীরে উন্নতি হতে সাহায্য করে। হরলিক্স লাইট হজম বাড়াতে সাহায্য করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে চিন্তিত তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। হার ক্ষয় রোধ করে এবং হারকে মজবুত করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পারে এবং শরীরের ভিটামিনের অভাব থাকলে সেই অভাব পূরণ করতে সক্ষম এ হরলিক্স লাইট।
যারা বৃদ্ধ বয়সে মানুষকে বা বয়স্ক মানুষ যারা আছেন তারা হরলিক্স খাওয়ার চিন্তা করলে আপনাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে লাইট হরলিক্স। এ হরলিক্স প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের দিকে লক্ষ্য রেখে তৈরি করা হয়।
বড়দের হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম
যেসব বড় মানুষের হরলিক্স খেতে চান তারা হরলিক্স খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। অনেকে এই নিয়ম নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে থাকেন যে যারা বড় মানুষ আছেন বা বয়সে বড় আছে তারা কিভাবে এই হরলিক্স খাবে। যেসব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হরলিক্স খেতে চান তারা দুধ বা গরম পানি যে কোন একটি সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো হয় দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলে। প্রতিদিন রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে ২০০ থেকে ২৫০ মিলি দুধ বা পানি নিয়ে সেখানে তিন থেকে চার চামচ হরলিক্স মিশিয়ে পান করবেন। পানি বা দুধ নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কুসুম গরম পানির নিতে হবে কারণ ঠান্ডা পানি নিলে তা ভালোভাবে মিশবে না এবং গরম পানি নিলে হরলিক্স এর পুষ্টিগুন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
যার কারণে সবচেয়ে ভালো হবে কুসুম গরম পানি নিলে এতে করে আপনি ভালো করে পান করতে পারবেন। হরলিক্সকে কখনো সকালের নাস্তায় পান করবেন না কারণ সকালে নাস্তায় পান করলে আপনার পেট অনেকটা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে যার কারণে আপনার নাস্তার খাবার ঠিকভাবে খেতে পারবেন না।
রাত্রে খাবার খাওয়ার পরে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে যখন ঘুমাতে যাবেন তখন ঘুমানোর পূর্বে খাবেন তাহলে আপনার জন্য বেশি উপকারী হবে।
হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা
হরলিক্স এর মধ্যে উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়টাই রয়েছে। যদি হরলিক্স এর অপকারিতার দিকে লক্ষ্য করা হয় তাহলে হরলিক্সের উপকারিতা হচ্ছে যখন আপনি আপনার বাচ্চাকে হরলিক্স খাওয়াতে শুরু করবেন তখন তারা অন্য খাবারের প্রতি তাদের চাহিদা অনেক বেশি কমে আসবে। ডাক্তাররা বাচ্চাদের হরলিক্স খাওয়ানোর জন্য কখনোই পরামর্শ দিয়ে থাকেন না।
হরলিক্স একটি বাচ্চার জন্য আহামরি কোন উপকার করে না। আপনি আপনার বাচ্চাকে হরলিক্সের অপকারিতা থেকে রক্ষা করতে চাইলে কখনোই তাদেরকে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াবেন না এবং হরলিক্সকে প্রধান খাবার হিসেবে দিবেন না। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন বা দুইদিন খেতে দেবেন তাহলেই অপকারিতা থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।
হরলিক্স এর উপকারিতা হচ্ছে হরলিক্স এমন কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় যেগুলো একটি বাচ্চার শরীরের জন্য উপকারী। যেসব বাচ্চা ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না বা খেতে চায় না তাদের জন্য এই হরলিক্স তৈরি করা হয়। যেসব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্যালসিয়াম ভিটামিন ক্যালরি অভাব রয়েছে হরলিক্স সেইসব অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
যারা শরীরের দিক দিয়ে রোগা পাতলা বা মাংসপেশিতে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য হরলিক্স অনেক বেশি উপকারী কারণ হরলিক্স খাওয়ার ফলে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে শুরু করে। এসব উপকারিতা পাওয়ার জন্য হরলিক্স খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন তাহলে আপনার বাচ্চার জন্য উপকার হবে
আর যেসব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আছে তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করেও নিজেরাই খেতে পারেন।
শেষ কথা
বাচ্চাদের হরলিক্স খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দিবেন এবং যারা প্রাপ্তবয়স্ক আছেন তারা নিজেরাই খেতে পারেন। হরলিক্স যেকোন বয়সের বাচ্চাদের জন্য এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারা হরলিক্স সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে।
সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url