ফ্রিজিয়ান গরুর খাবার- ফ্রিজিয়ান গরুর বৈশিষ্ট্য- হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরুর দাম

প্রিয় পাঠক আপনি কি ফ্রিজিয়ান গরুর খাবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ফ্রিজিয়ান গরুর খাবার এবং হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর উৎপত্তি কোন দেশে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
ফ্রিজিয়ান গরুর খাবার
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার উপায় এবং ফ্রিজিয়ান গরুর বৈশিষ্ট্য ও হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরুর দাম কত সেই সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

বাংলাদেশে অনেকগুলো খামার রয়েছে। গরু পালনের দিকে বাংলাদেশের চাহিদা অনেক বেশি। গরুর অনেক রকমের জাত রয়েছে সে জাতগুলোর মধ্যে একটি জাত হচ্ছে ফ্রিজিয়ান। বাংলাদেশ এই জাতের গরু চাহিদা অনেক বেশি। ফ্রিজিয়ান গরু দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। এই গরুর আরেকটি সবচেয়ে ভালো গুনাগুন হচ্ছে মাংসের দিক দিয়ে


এই গরুর মাংস বেশি থাকে এবং দুধ দেওয়ার ক্ষেত্রেও ফ্রিজিয়ান গরু দুধ অন্য গরু তুলনায় বেশি দেয়।

হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর উৎপত্তি কোন দেশে

ফ্রিজিয়ান গরু একটি আন্তর্জাতিক জাতের গরু। পৃথিবীর অনেক দেশে এই গরু দেখা যায়। বাংলাদেশে এই গরুর নাম হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান নামে মানুষ চিনে। বাংলাদেশ সহ আমেরিকা কানাডা অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড জার্মানি এই দেশগুলোতে ফ্রিজিয়ান গরু দেখা যায়। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে এই গরু অনেক বেশি পাওয়া যায়।

এ গরুর মূল উৎপত্তি হচ্ছে নেদারল্যান্ডে। অনেকে আছেন যারা এই গরুকে ডাচ গরু বলে কারণ এ গরুর উৎপত্তি নেদারল্যান্ডে তাই। এই গরুর উৎপত্তি নেদারল্যান্ড হলেও আস্তে আস্তে তা পৃথিবীর অনেক দেশে ছড়িয়ে গেছে এবং দিন দিন আরো ছড়িয়ে যাচ্ছে।

ফ্রিজিয়ান গরুর বৈশিষ্ট্য

ফ্রিজিয়ান গরুর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই গরুর বৈশিষ্ট্যগুলো অন্য গরু তুলনায় সম্পন্ন আলাদা। এই গরুর বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা আকারে অনেক বড় হয়। ফ্রিজিয়ান গরুর গায়ের রং সাদা এবং কালো উভয় মেশানো। সাদাকালো উভয়কালার মেশানো হলেও কালো কালারের পরিমাণ বেশি থাকে।
ফ্রিজিয়ান গরুর বৈশিষ্ট্য

ফ্রিজিয়ান গাভী ৬৫০০ লিটার থেকে ২০ হাজার লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে। এরা দিনে ২৫ লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এদের প্রতিদিন ওজন বৃদ্ধির হার বেশি। ফ্রিজিয়ান গরু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাচ্চা দেয়। এদের বাচ্চা দিতে দুই বছর পাঁচ থেকে ছয় মাস সময় লাগে। একটি ফ্রিজিয়ান শার ওজন ৮০০ থেকে ৯০০ কেজি হয় এবং

ফ্রিজিয়ান গাভীর ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে তা এই ওজনকেও ছাড়িয়ে যায়। এদের কুছ অন্য গরুর তুলনায় অত বেশি উঁচু হয় না। ফ্রিজিয়ান গরুর এইসব বৈশিষ্ট্যগুলোয় রয়েছে। যদি ফ্রিজিয়ান গরুর মধ্যে এইসব বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে না পান তাহলে আপনার বুঝতে হবে এই গরু আসল ফ্রিজিয়ান গরু না।

ফ্রিজিয়ান গরুর খাবার

ফ্রিজিয়ান গরুকে খাবার দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাপ পরিমাণ হিসেবে ও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। ফ্রিজিয়ান গরুর প্রধান খাবার হচ্ছে ঘাস। এদেরকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘাস খেতে দিতে হবে। সব সময় এদের সামনে ঘাস রাখতে হবে যাতে করে এরা সব সময় খেতে পারে। ঘাস খাওয়ার পাশাপাশি এদেরকে প্রতিদিন ভুসি খোল এবং পানি একসাথে মিক্স করে খেতে দিতে হবে।


ফ্রিজিয়ান গরু ধানের খড় অনেক ভাল খায়। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘাস না পান তাহলে সেই বিকল্প হিসেবে তাদেরকে খড় খাওয়াতে পারেন। মাঝে মধ্যে খাবারের সাথে অথবা পানির সাথে ভিটামিন মিক্স করে তাদেরকে খাওয়াতে হবে। ফ্রিজিয়ান গরুকে এই খাবারগুলোয় খাওয়াতে হয় তাদের প্রধান খাবার হচ্ছে ঘাস।

ঘাস খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও তাদেরকে এমন ঘাস খাওয়াবেন যে ঘাসে প্রোটিনের মাত্রা এবং পুষ্টিগুণের মাত্রা বেশি থাকে।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার উপায়

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার কিছু উপায় রয়েছে। সে উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন এটা আসলেই ফ্রিজিয়ান জাতের গরু নাকি আসল ফ্রিজিয়ান না। ফ্রিজিয়ান জাতের গরু চেনার উপায় গুলোর মধ্যে প্রধান উপায় হচ্ছে এদের শরীরের কালার কালো এবং সাদা উভয় রঙে মিশ্রিত তবে কালো কালারের পরিমাণ বেশি থাকে।

অন্য গরু তুলনায় লম্বা এবং ওজনের দিক দিয়ে বেশি হয়। ফ্রিজিয়ান গরুর কুজ অন্য গরুর কুজের মত বেশি উঁচু হয় না। এই জাতের গরুর মাথা সাধারণত ছোট হয় এবং ঘাড় লম্বা হয়। এই গরুর পিছনের দিক অনেক ভারি থাকে। ফ্রিজিয়ান গরু চেনার আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে এদের জিব্বার কালার সাদা হয় এবং এদের ওলান অনেক বড় হয়ে থাকে

কারণ ফ্রিজিয়ান গরু প্রচুর পরিমাণে দুধ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফ্রিজিয়াম গরুর লেজ ছোট এবং চিকন হয়। ফ্রিজিয়ান গাভীর দুদ্ধশীরা খুবই স্পষ্ট এবং মোটা হয়। ফ্রিজিয়ান গরুর শিং সাদা হয় এবং শরীরের সামনের অংশ চিকন হয়। আপনি এইসব বিষয় খেয়াল করলেই এবং যেসব উপায় উপরে বলা হলো সেসব উপায়গুলো অবলম্বন করলেই খুব সহজে বুঝতে পারবেন

এটা কি আসলে ১০০% ফ্রিজিয়ান গরু নাকি ক্রস ফ্রিজিয়ান। ফ্রিজিয়ান গরু কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে এইসব দিকগুলো দেখে নেবেন তাহলে আপনি আর প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরুর দাম

ফ্রিজিয়ান গরু গুণগত দিক দিয়ে অনেক উন্নত এবং এই গরুর শরীরে মাংসের পরিমাণ বেশি থাকে ও এই গরু পরিমানে দুধ বেশি দেয় যার কারণে এই গরুর দাম বেশি হয়ে থাকে। আপনি যদি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান গরু কিনতে যান তাহলে আপনার সর্বনিম্ন বাজেট রাখতে হবে ২ লাখ টাকা। 2 লাখ টাকার নিচে আপনি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান পাবেন না।


দুই লাখ টাকার নিচে পাইলে আকারে ছোট হতে পারে। এ জাতের গরুর বাচ্চার দামও অনেক বেশি। আপনি যদি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান ভালো গরু নিতে চান তাহলে আপনার কমপক্ষে ২ লাখ টাকার উপরে রাখতে হবে।

শেষ কথা

ফ্রিজিয়ান গরু অনেক ভালো। এই জাতের গরু লালন পালন করে মানুষ অনেক লাভবান হচ্ছে। আপনি যদি এগুলো লালন পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সতর্কতার সাথে এবং যত্নশীল ভাবে লালন পালন করতে হবে তাহলে আপনি ফ্রিজিয়ান গরু থেকে লাভবান হতে পারবেন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও ফ্রিজিয়ান গরু সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url