গাঁজা বানানোর নিয়ম- গাঁজা খাওয়ার নিয়ম- গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয়

প্রিয় পাঠক আপনি কি গাঁজা বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এ পোষ্টের মধ্যে গাঁজা বানানোর নিয়ম এবং গাঁজা খাওয়ার নিয়ম ও মানুষ কেন গাজা খায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
গাঁজা খাওয়ার নিয়ম
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয় ও গাজার প্রভাব কতদিন থাকে এবং গাঁজা খেলে কি শরীর ৪০ দিন নাপাক সে সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেই মানুষ গাঁজা সেবন করে থাকে। বাংলাদেশে গাঁজা সেবনের কোন অনুমতি নেই। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেগুলোতে গাজা সেবনের বৈধতা রয়েছে। গাঁজা একটি নেশা জাতীয় গাছের পাতা। কয়েকটি বিশেষ পদ্ধতিতে মানুষ সেই পাতা সেবন করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ গাঁজা বিক্রি করে বছরে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করে।


প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়েও বাংলাদেশের গাঁজার রমরমা ব্যবসা হয়।

গাঁজা বানানোর নিয়ম

গাজা খাওয়ার জন্য প্রথমে সেটাকে ভালোভাবে বানিয়ে নিতে হবে। যদি আপনি ঠিকভাবে সেটা প্রস্তুত করে না নেন তাহলে আপনি ভালোভাবে খেতে পারবেন না। গাজা হচ্ছে একটি গাছের পাতা এবং ফুল যখন তা শুকিয়ে যায় তখন মানুষ বিশেষ পদ্ধতিতে বানিয়ে তার সেবন করে। গাজা বানানোর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি কেচি নিতে হবে।

এরপর সে গাঁজা ভালোভাবে একদম ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে যাতে তা একেবারে পাতলা হয়ে যায়। কাটার সময় যদি আপনি দেখেন গাজার ভিতরে কোন ডাল রয়েছে তাহলে সেটা সরিয়ে দেবেন। কারণ পাতা এবং ডাল একসাথে খাওয়ার কারণে মাথাব্যথা করতে পারে। যখন ভালোভাবে গাজার পাতা একেবারে মিহি করে কাটা হয়ে যাবে তখন তা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।

খাওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এ পদ্ধতি হচ্ছে গাজা খাওয়ার পূর্বে বানানোর পদ্ধতি। আপনি যে পদ্ধতিতে খান না কেন আপনাকে এ পদ্ধতিতে গাজা বানাতে হবে।

গাঁজা খাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশের মানুষ তিন পদ্ধতিতে গাঁজা সেবন করে থাকে। প্রতিটি পদ্ধতির ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। প্রতিটি পদ্ধতিতে খাওয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয়। প্রথম পদ্ধতিকে স্টিক বলা হয়। এ পদ্ধতিতে গাজা বানানোর নিয়ম হচ্ছে প্রথমে একটি সিগারেট থেকে সিগারেটের মসলা অর্ধেক বা পুরোটাই বের করবে।

এরপরে কেটে রাখা গাঁজা এবং সিগারেটের মসলা একসাথে ভালোভাবে মিক্স করে তা আবার সিগারেটের ভিতরে ঢুকাবে। তাহলেই স্টিক বানানো হয়ে যাবে। দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে জয়েন্ট পেপারের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে গাঁজা বানানো নিয়ম হচ্ছে জয়েন পেপারের মাথায় একটি ভিজিটিং কার্ড লাগবে। এরপরে জয়েন্ট পেপার এর উপরে কেটে রাখা গাঁজা

ভালোভাবে রেখে থুতুর সাহায্যে জয়েন পেপার আটকে দিবে। এরপরে মাথায় রাখা ভিজিটিং কার্ড সুন্দরভাবে গোল করে নিবে তাহলেই জয়েন্ট বানানো হয়ে যাবে। আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বাঁশিতে করে খাওয়া। এ পদ্ধতিতে খাওয়ার জন্য আপনার গাজা খাওয়ার বাঁশির প্রয়োজন হবে এবং নারিকেলের কিছু শুকনো ছোবরা দরকার হবে ও একটি কাপড়ের টুকরা।

প্রথমে গাঁজা ভালোভাবে কেটে নিয়ে বাঁশিতে ভর্তি করতে হবে। এরপর বাশির যেদিক দিয়ে টান দিবেন সেখানে কাপড়ের টুকরা সাহায্যে গোল করে নিতে জড়িয়ে নিতে হবে যাতে করে সেটা গরম হয়ে গেলে ঠোঁটে তাপ না লাগে। এরপর নারিকেলের শুকনো সুবা আগুনের সাহায্যে পুড়িয়ে ছাই করে নিতে হবে। এরপরে বাসির মাথার উপরে দিয়ে দেবেন

তাহলে আপনার জন্য বাঁশিতে গাঁজা খাওয়া পদ্ধতি প্রস্তুত হয়ে যাবে। বাঁশিতে গাজা খাওয়া অনেক বেশি কষ্টকর কারণ স্টিক বা জয়েন্টের তুলনায় বাসিতে ধোঁয়ার পরিমাণ একসাথে বেশি বের হয় যার কারণে সবাই এই বাঁশিতে খেতে পারে না। বাঁশিতে গাঁজা খেলে অন্য পদ্ধতির খাওয়ার তুলনায় নেশা বেশি হয়। এ ৩ পদ্ধতির যেকোনো এক পদ্ধতিতে গাঁজা সেবন

করলেই আপনি গাঁজা সেবন করার পরিপূর্ণ ফিল পেয়ে যাবেন।

মানুষ কেন গাজা খায়

কিছু কিছু মানুষের গাঁজা খাওয়ার পিছনে কারণ থাকে। আবার কিছু কিছু মানুষ বিনা কারণে খেয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় মানুষ নিজের মানসিক চাপ কমাতে বা দুঃখ কষ্ট কমাতে গাঁজা সেবন করে। একটা সময় গিয়ে নিয়মিত গাঁজা সেবনের ফলে এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। আরেক ধরনের মানুষ থাকে যারা কোন কারণ ছাড়াই নেশা করার উদ্দেশ্যে গাজা সেবন করে।

প্রথমে কারো থেকে এই সম্পর্কে জেনে নিয়ে বা কারো কাছে থেকে অল্প খায় এরপর আস্তে আস্তে সম্পূর্ণভাবে গাজার জগতে ঢুকে যায়। যারা প্রথম প্রথম গাঁজা খায় তারা কখনোই এ লাইনে অভ্যস্ত হয় না। দীর্ঘ একটা সময় যাওয়ার পরে তারা অভ্যস্ত হয়ে যায়। শুধু গাঁজা নয় যেকোনো নেশার ক্ষেত্রে এ পরিস্থিতি হয়ে থাকে।


তাদের মনের মধ্যে এমন একটি অনুভূতি হয় যে এটা খেলে ভালো লাগতো। না খেলে তাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা যেমন ব্যথা করে মস্তিষ্ক শান্তি পাই না রাগ ধরে থাকে এই অবস্থাগুলো তাদের ভিতরে তৈরি হয়। যখন তারা গাজা বা অন্য কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে তখন তাদের অবস্থা স্বাভাবিক মানুষের মতো হয়ে যায়।

যেসব মানুষ মানসিক চাপ কমাতে বা দুঃখ কষ্ট কমাতে গাজা সেবন করে তাদের পিছনে কারণ হচ্ছে গাজা খাওয়ার পরে নিজের আয়ত্ত অনেক সময় নিজের হাতে থাকে না তখন এমনিতে হাসি পায় বা যা করবে সেটাই ভালো লাগে যার কারণে সে মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই দূরে থাকে এজন্য তারা আস্তে আস্তে গাঁজা বা নেশা জাতীয় দ্রব্যের পথে আসক্ত হয়।

বাংলাদেশ অনেকে আছে যারা প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার কারণে গাঁজা সেবন করতে শুরু করে।

গাজার প্রভাব কতদিন থাকে

গাজার প্রভাব মানুষের উপরে কতদিন থাকে বা কত সময় থাকে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই মানুষটির উপরে। যদি সেই মানুষটি গাঁজা খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে যায় বা তার নেশা করার অভিজ্ঞতা বেশি থাকে বা সে এই জিনিস খাওয়ার পরে নিজের অস্তিত্ব নিজের আয়ত্তে রাখতে পারে তাহলে সেরকম কোনো ক্ষতি হয় না।

যদি কারো হাতে নিজের অস্তিত্ব না থাকে তাহলে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা বা সর্বোচ্চ সাত থেকে আট ঘন্টা গাজার প্রভাব স্থায়ী হয়। অনেকে আছে যারা গাজা খাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে তাদের শরীর স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যেমন মুখ দিয়ে গন্ধ বের হওয়া,চোখ লাল হয়ে যাওয়া,একা একা হাসতে থাকা অদ্ভুত আচরণ করা।

এইসব লক্ষণ তো শুধু গাঁজা সেবনের ফলে হয় এমনটা নয়। অনেক সময় মানুষ অনিচ্ছাকৃত এই আচরণগুলা করে থাকে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যারা গাজা সেবন করে তারা কি রক্ত দিতে সক্ষম? এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে গাজা খাওয়ার ২৪ ঘন্টা পার হলে সে রক্ত দিতে পারবে কারণ গাজা শরীরে তেমন কোন ক্ষতি করে না বা রক্তের মধ্যে প্রবাহিত হয় না।

গাজা সম্পূর্ণ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে যার কারণে ২৪ ঘন্টা বা ১৫-২০ ঘন্টা পার হলেই সে রক্তদানে পুরোপুরি সক্ষম হয়ে যায়। আরেক ধরনের মানুষ রয়েছে যারা গাজা সেবন করার সাথে সাথে নিজের অবস্থা হারিয়ে ফেলে এবং নিজের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে অনেক সময় লেগে যায়। এ অবস্থায় তাদের মাথা ঝিমঝিম করে চোখ ছোট হয়ে যায়

অর্থাৎ নিজের উপরে কোন রকমের কোন আয়ত্ত থাকে না। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন গাজা খাওয়ার পরে একটি মানুষের উপরে সেই গাঁজার প্রভাব কতক্ষণ থাকে।

গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয়

গাঁজা এমন একটি নেশা জাতীয় দ্রব্য যা খাবার পরে মানুষের অন্যান্য খাবারের প্রতি চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। একটি মানুষ স্বাভাবিক তুলনায় যেই পরিমাণ খাবার খেতে পারবে গাঁজা খাওয়ার পরে তার খাবারের প্রতি চাহিদা তার চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। কেউ যদি গাঁজা খাওয়ার পরে দুধ খায় তাহলে তার শরীরে যেসব পুষ্টির অভাব রয়েছে দুধ সেসব পুষ্টির অভাব পূরণ করে দিতে পারে।

কেউ যদি মোটা হওয়ার জন্য ১০ থেকে ১২ দিন গাঁজা খাওয়ার পরে দুধ,ডিম,খেজুর,আপেল এগুলো খায় তাহলে তার স্বাস্থ্য খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি হয়ে যাবে। গাজা শরীরে যেই পরিমাণ ক্ষতি করে তার চেয়ে সামান্য পরিমাণ হলে উপকার করে। মানুষ নিয়মিত গাঁজা খেতে থাকলে তাদের শরীর শুকিয়ে যায় কিন্তু কেউ যদি গাঁজা খাওয়ার পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খায় তাহলে তার শরীর কখনোই শুকাবে না।

গাজা খাওয়ার পরে দুধ খাওয়া একজন গাঁজাখোরের শরীরের জন্য অবশ্যই উপকার। দুধে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন থাকে যা একটি মানুষের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেউ গাজা খাওয়ার পরে দুধ খেলে তার শরীরে সে ভিটামিন গুলো প্রবেশ করে যার কারণে গাঁজা খাওয়ার কারণে মানুষ যে শুকিয়ে যায়

এই শুকিয়ে যাওয়া থেকে সে তার শরীরকে রক্ষা করতে পারে এবং শারীরিকভাবেও তার শরীরের ভিতরে উন্নতি ঘটে।

গাঁজা খেলে কি শরীর ৪০ দিন নাপাক

ইসলামে নেশা জাতীয় দ্রব্যকে হারাম করা হয়েছে। হাদিসে প্রকাশ্য এসেছে মদ খাওয়ার কারণে শরীর চল্লিশ দিন যাবত নাপাক থাকে। শরীর নাপাক থাকার কারণে এই সময় নামাজ রোজা কোন কিছুই কবুল করা হয় না। তবে গাঁজা খাওয়ার কারণে শরীর চল্লিশ দিন নাপাক থাকে এই কথার কোন অস্তিত্ব নেই। গাঁজার নেশা যতক্ষণ স্থায়ী হয় ততক্ষণে তার নামাজ রোজা কবুল হবে না।


যখন সে স্বাভাবিক মানুষের ফিরে আসবে এবং তার মস্তিষ্ক সুস্থ হয়ে যাবে তখন থেকে এসে নামাজ রোজা করতে পারবে। অর্থাৎ গাজা খাওয়ার কারণে শরীর কোন নাপাক হয় না। যারা বলে গাজা খাওয়ার কারণে শরীর চল্লিশ দিন যাবত নাপাক থাকে তাদের এই কথা সম্পূর্ণ ভুল।

শেষ কথা

গাজা আপনাকে সাময়িক মানসিক শান্তি দিলেও ভবিষ্যতে তা আপনার শরীরের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিকর এজন্য চেষ্টা করবেন গাজা থেকে সব সময় নিজেকে বিরত রাখার। গাঁজা মানুষের শরীরের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিকর।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও গাজা সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • নামহীন
    নামহীন ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ এ ১১:৪৭ AM

    এত জিনিস থাকতে গাঁজা নিয়ে লিখার কারণ কি? এটি নেশা জাতীয় দ্রব্য। সে কারণে আমাদের মত দেশেও এটা চাষ, গ্রহণ, বহন ও বিক্রি সব নিষেধ।

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url