সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে- বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায়

প্রিয় পাঠক আপনি কি সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এ পোষ্টের মধ্যে সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে এবং সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে
এছাড়াও আপনি পোষ্টের মধ্যে পাবেন সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবেনা এবং সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যাবে ও বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায় সেই সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে।

ভূমিকা

সিজার মূলত পেটের একটা অংশ কাটার মাধ্যমে করা হয়সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে কোন অংশ কাটার পরে সেটা শুকানোর জন্য বেশ কিছু খাবারের প্রতি বিধি-নিষেধ করা হয় কারণ সেসব খাবার খাওয়ার কারণে ক্ষতস্থানে সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার অনেক রকমের খাবার রয়েছে যেগুলো বেশি পরিমাণে খেতে বলা হয় যাতে করে ক্ষত দ্রুত শুকায়।


অনেক রকমের ফল রয়েছে যেগুলো সিজারের পরে ডাক্তার খেতে মানা করেন।

বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায়

একটা বাচ্চাকে সিজার করার মাধ্যমে পৃথিবীতে আনতে হলে অবশ্যই তার শরীরের গঠন এবং ওজন একটা পরিমাপে থাকতে হবে। স্বাভাবিক একটি বাচ্চার ওজন সর্বোচ্চ চার কেজি পর্যন্ত হয়। যখন একটি বাচ্চা চার কেজি ওজনের বেশি হয়ে যায় তখন সে বাচ্চাকে অনেক বড় আকার হিসেবে ধরা হয়। ৪ কেজি ওজনের বাচ্চা নরমাল ডেলিভারিতে হতে গেলে বাচ্চার

এবং বাচ্চার মা উভয়ের জীবন আশঙ্কার মুখে পড়তে পারে। ২কেজি ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৪ কেজি ওজনের বাচ্চাকে সিজার করার মাধ্যমে বের করা যায়। যদি বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৩০০ গ্রাম বা তার চেয়ে একটু বেশি হয় সেক্ষেত্রে বাচ্চা নরমালে ডেলিভারি হওয়ার জন্য যদি সুযোগ থাকে তাহলে অপেক্ষা করা ভালো

আর যদি কোন ভাবে সুযোগ না থাকে তাহলে সিজার করার মাধ্যমে বের করে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো হবে। বাচ্চা যদি আকারে ৪ কেজি ওজনের বেশি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করা কোনভাবে উচিত হবে না। সে সময় সিজার করার মাধ্যমে বাচ্চাকে বের করে নেওয়া সবচেয়ে ভালো সমাধান হবে।

অনেক বাচ্চা থাকে যেসব বাচ্চার বয়স পরিপূর্ণ হওয়ার পরেও স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে উন্নতি হয় না এসব ক্ষেত্রেও বাচ্চাকে সিজার করে বের করে নেওয়া যায়।

সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে

কলা একজন সুস্থ এবং অসুস্থ উভয় মানুষের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ থাকে যা একজন মানুষের শরীরের জন্য অনেক জরুরী। কলাতে রয়েছে ভিটামিন সি,ভিটামিন এ,ভিটামিন ই,মিনারেল,পটাশিয়াম। সিজারের পর পাকা কলা খেলে কোন রকমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই

কারণ কোন সিজারের রোগে সিজারের পরে কলা খেলে তার জন্য সুস্থ হয়ে ওঠা আরো সহজ হবে এবং তার শরীরে যেসব পুষ্টিগুণ ক্ষয় হয়েছে সেসব পুষ্টিগুনে ভরপুর হয়ে যাবে ও সে তার শরীরকে আগের তুলনায় আস্তে আস্তে ভালো অনুভব করবে। সিজারের পরে কাঁচা কলা খাওয়া উচিত নয় কারণ সে সময় অনেক রকমের ওষুধ চলে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়।


আপনি যদি কাচা কলা খান তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। সিজারের পর অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে আপনি যদি পাকা কলা খান তাহলে কলাতে ফাইবার থাকার কারণে আপনার পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। এজন্য সিজারের পরে পাকা কলা খাবেন কারণ পাকা কলা খেলে আপনি অনেক রকমের উপকৃত হতে পারবেন

কিন্তু কখনো কাঁচা কলার তরকারি বা কাঁচা কলার ভর্তা করে খাবেন না। এজন্য আপনি কোন চিন্তা ছাড়াই সিজারের পরে পাকা কলা খেতে পারেন।

সিজারের পর কি আম খাওয়া যাবে

আম একটি সুস্বাদু ফল। আমের মৌসুমে যাদের সিজার হয় তারা অনেকে চিন্তিত থাকে সিজার করার পরে আম খাওয়া যাবে কি বা সিজারের পরে আম খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে বা কতদিন পরে আম খাওয়া যায়। যেসব মহিলাদের সিজার করা হয় তারা সিজারের পরে আম খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।

কারণ আমি পর্যাপ্ত পরিমাণে সুগার থাকে। আপনি যদি নিয়মিত আম খেতে থাকেন তাহলে আপনার ক্ষতস্থানে ব্যথা হওয়া,পুঁজ বের হওয়া,ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিবে। এছাড়াও আপনার সুস্থ হতে আরো বেশি সময় লেগে যাবে। যদি আপনার অতিরিক্ত পরিমাণে আম খেতে মন চায় সেক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ খেতে পারেন তবে নিয়মিত নয়।

সপ্তাহে বা মাসে একবার তাও সামান্য পরিমাণ খাবেন। সিজারে পরে সবচেয়ে ভালো হয় আম না খাওয়া। কারণ আপনি যদি আম খেয়ে ফেলেন আর যদি কোন রকমের সমস্যা হয় তাহলে কষ্ট আপনাকে ভোগ করতে হবে এজন্য উচিত নিজের মনকে সান্ত্বনা দিয়ে আম খাওয়া থেকে বিরত থাকা। একজন সিজারের রোগে ৪৫ থেকে ৫৫ দিন পরে পরিপূর্ণভাবে আম খেতে পারবে।


৪৫ থেকে ৫০ দিন যাওয়ার পরে সে অনেকটাই সুস্থ হয়ে যাবে যার কারণে তখন আম খেলে তেমন কোন সমস্যা হবে না আর এই সময়ের আগে যদি আপনি আম খান তাহলে আপনার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি থাকবে। অনেকে আছেন যারা সিজারের পরে আম খেলেও তাদের কোন সমস্যা হয় না।

এক্ষেত্রে সে বলতে পারে আমি সিজারের পরে আম খেয়েছি কিন্তু আমার কোন সমস্যা হয়নি। সিজারের পরে আম খেলে খুব কম মানুষের সমস্যা হয় না। অধিকাংশ মানুষের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একজন মানুষের সমস্যা হয়নি বলে যে অন্য মানুষের সমস্যা হবে না বিষয়টা এমন নয়। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে সিজার করার পরে সকল বিষয়ে সতর্ক থাকা

কারণ আপনি সতর্ক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।

সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যাবে

সিজারের পরে মিষ্টি খাওয়া উচিত নয় কারণ আপনি যদি সিজারের পরে মিষ্টি খেতে থাকেন তাহলে আপনার ক্ষতস্থান পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং সুস্থ হতে অনেক বেশি সময় লাগবে। মিষ্টিতে সুগার থাকার কারণে সিজারের স্থান দিয়ে পজ বের হতে পারে এবং সেই জায়গা ব্যথা অনুভব হবে এবং ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিবে।

যদি ইনফেকশন জনিত সমস্যা থাকে বা ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে যদি মিষ্টি খাওয়া হয় তাহলে সমস্যা আরও দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে যা আপনার শরীরের উপরে খারাপ প্রভাব ফেলবে। সিজার হওয়ার তিন সপ্তাহ পরে মিষ্টি খেতে পারবেন। যদি আপনি তিন সপ্তাহ পরে দেখেন সিজারের স্থান অনেকটাই শুকিয়ে গেছে তাহলে আপনি সামান্য পরিমাণ মিষ্টি খেতে পারবেন।

তিন সপ্তাহ আগে আপনার মিষ্টি খাওয়া উচিত হবে না এতে করে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। যদি তিন সপ্তাহের আগেও দেখেন সেই স্থান অনেকটা শুকিয়ে গেছে তারপরও আপনার মিষ্টি খাওয়া উচিত হবে না কারণ স্থান উপরের দিকে শুকালেও ভেতরের দিকে ক্ষত অনেকটাই রয়ে যাবে যার জন্য আপনি মিষ্টি খেলে সে স্থানে প্রভাব পড়বে

এজন্য তিন সপ্তাহ পার হওয়ার পরে যখন আপনার মনে হবে অনেক শুকিয়ে গেছে বা আপনি ডাক্তার দেখানোর পরে যদি ডাক্তার অনুমতি দেয় তাহলে আপনি মিষ্টি খাবেন। এর আগে আপনার মিষ্টি খাওয়া উচিত হবে না।

সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবে না

ফল একজন মানুষের শরীরের জন্য উপকারী। সিজারের রোগীর জন্য সব রকমের ফল খাওয়া উচিত নয়। সিজারের রোগীর জন্য অনেক রকমের ফল থাকে যেগুলো খাওয়া অনেক উপকারী এবং সেগুলো খাওয়ার কারণে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। কিছু ফল থাকে যেগুলো খেলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি হয়ে যায়। এমনকি সিজারের স্থান শুকাতে আরও বেশি সমস্যা হবে।


সুগার জাতীয় যেসব ফল রয়েছে অর্থাৎ যেসব ফলে সুগারের পরিমাণ অনেক বেশি সেইসব ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন আম লিচু কাঁঠাল। কাঁঠাল খাওয়ার কারণে পেটেও সমস্যা হতে পারে।  সিজারের ক্ষত শুকাতে দেরি হবে পাশাপাশি সিজারের ক্ষত পেকে যেতে পারে এবং সেই স্থান দেখা করার মত বা ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেবে।

এজন্য সিজার হওয়ার পরে যেসব ফল খাওয়া উচিত আপনি সেই সব ফলে খাবেন এবং যেগুলো ফল খেলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে সেই এড়িয়ে চলবে তাহলে আপনি খুব দ্রুত সুস্থ হতে পারবেন।

শেষ কথা

সিজারের পরে কোন খাবার খেলে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খাবেন এবং ঠিকভাবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত খাবারের নিয়ম-কানুন মেনে চলবেন তাহলে আপনার সুস্থ হওয়ার সহজ হবে এবং ক্ষত খুব দ্রুত শুকাবে।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও সিজারের পরে কি কি ফল খাওয়া যাবেনা সেগুলো সম্পর্কে জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url