জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম উপকারিতা বয়স স্টেজ ১ স্টেজ ২

প্রিয় পাঠক আপনি কি জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এ পোষ্টের মধ্যে জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম এবং জুনিয়র হরলিক্স এর উপকারিতা ও জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার বয়স - জুনিয়র হরলিক্স কত বছর সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন জুনিয়র হরলিক্স খেলে কি হয় এবং জুনিয়র হরলিক্স এর দাম কত - জুনিয়র হরলিক্স দাম কত,জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ১ ও জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ২ সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

ছোট বাচ্চাদের শরীরের পুষ্টিগুণ বিকাশে তাদেরকে হরলিক্স খাওয়ানো হয়। হরলিক্স এমন কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করা যা বাচ্চার শরীরের জন্য অনেক জরুরী। দীর্ঘকাল ধরে জুনিয়র হরলিক্স বাচ্চাদের খাওয়ানো হয়ে আসছে। যেসব ছোট বাচ্চা আছে তাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স অনেক উপকারী।


হরলিক্স শুধু শিশুর জন্য উপকারী নয় অনেক ক্ষেত্রে এই জুনিয়র হরলিক্স ছোট বাচ্চাদের জন্য অনেক ক্ষতিকর।

জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম

ছোট বাচ্চাদের জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ালে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াতে হবে। যদি নিয়মের বিপরীতে খাওয়ানো হয় তাহলে তা বাচ্চা শরীরের জন্য উপকারী হবে না বরং তার শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে। দুধ অথবা পানি যেকোনো একটি দিয়েই হরলিক্স খাওয়ানো যায়। দুধ দিয়ে খাওয়ালে পুষ্টিগুণ আরো বেশি পাওয়া যায়।

অনেক বাচ্চারা রয়েছে যারা দুধ খেতে চায় না এক্ষেত্রে আপনি দুধের সাথে হরলিক্স মিক্স করে দিলে তারা খুব সহজেই খেয়ে নিবে এবং অনেক বেশি উপকৃত হতে পারবে। 24 ঘন্টার মধ্যে একবার তাদেরকে হরলিক্স খেতে দেবেন। ২৫০ গ্রাম পানি বা দুধ নিয়ে সেখানে দুই চামচ পরিমাণ হরলিক্স দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করলেই হয়ে যাবে।

পানি বা দুধ কখনোই ঠান্ডা নিবেন না এতে করে ঠিকভাবে মিক্স করা যায় না এবং খেয়েও শান্তি পাওয়া যায় না। কুসুম গরম পানি অথবা কুসুম গরম দুধের সাথে মিক্স করবেন তাহলে খেতে সুস্বাদু হবে এবং আরামে খাওয়া যাবে। হরলিক্স খাওয়ানোর উত্তম সময় হচ্ছে সন্ধ্যার পরে। নাস্তা খাওয়ানোর সময় সকালে নাস্তায় অথবা

রাত্রে ঘুমানোর সময় এই দুই বেলায় কখনো তাদেরকে হরলিক্স খেতে দেবেন না। সবসময় চেষ্টা করবেন সন্ধ্যার পরে খেতে দেওয়ার এতে করে তাদের জন্য আরও বেশি উপকার হবে। একটি বাচ্চার জন্য হরলিক্সকে কখনো প্রধান খাবার হিসেবে রাখা যাবে না। প্রধান খাবার হিসেবে শাকসবজির ফলমূল যেগুলো রয়েছে সেগুলো খাওয়াতে হবে।

হরলিক্সকে নাস্তার খাবার হিসেবে ধরবেন এবং নাস্তার সময়ে খাওয়াতে হবে।

জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ার বয়স - জুনিয়র হরলিক্স কত বছর

প্রত্যেক খাবার খাওয়ানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন হয়। সেই পরিমাণ বয়স না হওয়ার পূর্বে বাচ্চাকে সেই ধরনের খাবার খাওয়ানোর কোনোভাবে উচিত হবে না। আপনার বাচ্চাকে কখনোই শুরুতে হরলিক্স খেতে দিবেন না। প্রথমে প্রাকৃতিক যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

যদি প্রাকৃতিক খাবার গুলো খেতে না চায় তাহলে খাবারগুলোকে ভিন্ন ভাবে রান্না করার মাধ্যমে অথবা পরিবেশন করার মাধ্যমে তাদেরকে খাওয়াতে হবে। প্রাকৃতিক খাবারের মতো কোনো খাবারে পুষ্টি ভিটামিন ক্যালসিয়াম ক্যালোরি পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম কোন কিছু নেই। বাচ্চারা সেইসব খাবার খেতে পছন্দ করে যেসব খাবা তাদের জিব্বাতে স্বাদ লাগে।


আপনি যখন দুধের সাথে হরলিক্স মিক্স করে দেবেন তখন তারা খুব সহজে খেয়ে নিবে এতে করে দুধের মধ্যে এক ধরনের ভিটামিন থাকে যা হরলিক্স মিস করার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে আপনার বাচ্চাকে শুধু দুধ খাওয়ানোর। এক থেকে তিন বছর এবং দুই থেকে ছয় বছর বয়সের বাচ্চাদের জন্য জুনিয়র হরলিক্স তৈরি করা হয়েছে।

আপনি সেই সময়ে আপনার বাচ্চাকে জুনিয়র হরলিক্স খাওয়াবেন যখন তারা কোন খাবার একেবারে খেতে চায় না। জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। ডাক্তার যদি তাদের শারীরিক অবস্থা দেখে খাওয়াতে বলে তাহলে খাওয়াবেন নতুবা প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানোর জন্য বিকল্প পন্থা অবলম্বন করবেন।

জুনিয়র হরলিক্স খেলে কি হয়

বাচ্চাকে কখনোই হরলিক্স খাওয়ানোর অভ্যাস করা যাবে না। যখন আপনি তাদেরকে নিয়মিত এ হরলিক্স খাওয়াবেন তখন তারা এ খাবারের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে যাবে এবং অন্য খাবারের উপর থেকে তাদের চাহিদা আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। নিয়মিত হরলিক্স খাওয়ার কারণে বাচ্চার গ্যাসের সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি শরীরেও বিভিন্ন রকমের দুর্বলতা তৈরি হতে থাকে।

একটি বাচ্চার জন্য প্রধান খাবার হচ্ছে প্রাকৃতিক যে খাবারগুলো রয়েছে সেসব খাবার। ছোট বাচ্চারা এই খাবার গুলো ঠিকমতো খেতে চায় না যার ফলশ্রুতিতে তাদেরকে হরলিক্স খাওয়ানো হয়। এই পথ একেবারে সঠিক নয়। কোন বাচ্চা যদি একেবারে খেতে না চায় তাহলে তাদেরকে কয়েকবারে খাওয়াতে হবে কিন্তু হরলিক্স খাওয়ানোর অভ্যাস করা যাবে না।

হরলিক্স তাদের জন্য যতটুকু উপকারী তার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। হরলিক্স আস্তে আস্তে খাবারের স্বাদকে নষ্ট করে দেয় যার কারণে বাচ্চাদের শরীর আস্তে আস্তে নষ্ট হতে থাকে। আপনি যদি কোন কারণে আপনার বাচ্চাকে হরলিক্স খাওয়াতে চান তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। আপনার বাচ্চা যদি প্রাকৃতিক খাবার ঠিকমতো খায় তাহলে

তাদেরকে সপ্তাহে সর্বোচ্চ একদিন গরম পানির সাথে হরলিক্স মিক্স করে খাওয়াতে পারেন। আমরা ভাবি হরলিক্স বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী আমাদের এই চিন্তা ধারা একেবারেই ভুল। হরলিক্স একটি বাচ্চার জন্য কোন ভাবে উপকারী হতে পারে না। তাই আপনি আপনার বাচ্চাকে নিরাপদ রাখতে চাইলে চেষ্টা করবেন হরলিক্স এবং

এ জাতীয় যে খাবারগুলো রয়েছে সেই খাবারগুলো থেকে তাদেরকে বিরত রাখার এবং প্রাকৃতিক যে খাবার গুলো রয়েছে সেগুলো খাওয়ানোর অভ্যাস করা তাহলে আপনার বাচ্চা উপকৃত হবে এবং পুষ্টিতে ভরপুর হয়ে যাবে।

জুনিয়র হরলিক্স এর উপকারিতা

আমরা মনে করে থাকি horlicks একজন বাচ্চা শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আমাদের এই ধারণা একেবারেই ভুল। হরলিক্স খাওয়ার পরে বাচ্চারা উপকৃত হতে পারে তবে এত বেশি উপকৃত হতে পারে না। সামান্য কিছু উপকারিতা রয়েছে যেগুলো বাচ্চাদের শরীরে প্রবেশ করে। যেসব বাচ্চারা একেবারেই প্রাকৃতিক খাবার খেতে পারে না

তাদের শরীরে যেসব পুষ্টি মিনারেল ভিটামিন ক্যালরি ম্যাগনেসিয়াম এসবের ঘাটতি পরে সেসব ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে জুনিয়র হরলিক্স। এ হরলিক্স এমন ভাবে বানানো হয় যাতে করে এক থেকে তিন বছর এবং দুই থেকে ছয় বছরের বাচ্চারা উপকৃত হতে পারে। তাদের শরীরের অবস্থার দিকে তাকিয়েই এ হরলিক্স বানানো হয়।

আপনার বাচ্চা যদি প্রাকৃতিক খাবারের অভ্যস্ত হয়ে যায় তাহলে কোনোভাবেই তাদেরকে হরলিক্স খাওয়াবেন না। যখন দেখবেন আপনার বাচ্চা খাবারের প্রতি অনীহা প্রচুর। কোন কিছুই খেতে চায় না এবং দিন দিন পুষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে তখন তাদেরকে হরলিক্স খাওয়াতে পারেন তাহলে আপনার বাচ্চা উপকৃত হতে পারবে।


যদি আপনার বাচ্চার প্রাকৃতিক খাবার খেতে থাকে তাহলে হরলিক্স বা এ জাতীয় কোন কিছু খাবার খেতে দেওয়া উচিত হবে না। আর হরলিক্স খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কিছুদিন অব্দি খাওয়াবেন। কখনোই এ খাবারের উপর একটি বাচ্চাকে নির্ভর করবেন না। যদি বাচ্চারা হরলিক্সের উপরে নির্ভরশীল হয়ে যায় তাহলে তারা অনেক রকমের পুষ্টি ভিটামিন থেকে বঞ্চিত হবে।

একটি কথা আরেকবার মনে রাখতে হবে হরলিক্সের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবারের বেশি উপকারিতা লুকায়িত রয়েছে এজন্য হরলিক্সকে কম খাওয়ায় প্রাকৃতিক খাবার বেশি খাওয়াইতে হবে।

জুনিয়র হরলিক্স এর দাম কত - জুনিয়র হরলিক্স দাম কত

আপনি দোকান থেকে কিনুন অথবা অনলাইন থেকে কিনুন অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে দাম যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। যদি আপনি ভালভাবে দাম যাচাই-বাছাই না করে নেন তাহলে আপনি প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
  • ৫০০ গ্রাম জুনিয়র হরলিক্স এর দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
জুনিয়র হরলিক্স কেনার আগে আরেকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরি তা হচ্ছে হরলিক্সের মেয়াদ আছে নাকি নাই। অবশ্যই আপনাকে মেয়াদের দিকে নজর রাখতে হবে। যদি এই মেয়াদ না থাকে এবং ওই পণ্য আপনার বাচ্চাকে খাওয়ালে বাচ্চার মৃত্যু হতে পারে। এজন্য মেয়াদের দিকে ভালোভাবে নজর দেয়া অবশ্যই জরুরী।

জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ১

জুনিয়র হরলিক্স দুই ভাগে বিভক্ত। পৃথক পৃথক বয়সের জন্য পৃথক পৃথকভাবে বানানো হয়। স্টেজ ১ হচ্ছে ১ থেকে ৩ বছরের বয়সের বাচ্চাদের জন্য। যদি কোন মা চায় যে তার সন্তানকে এক বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে হরলিক্স খাওয়াবে তাদের জন্য এ হরলিক্স তৈরি করা হয়েছে। বাচ্চাদেরকে এ সময় হরলিক্স খাওয়ানো একেবারে উচিত নয়।

এরপরও যদি খাওয়ানোর দরকার হয় তাহলে তাদেরকে স্টেজ ১ খাওয়াতে হবে। ৫০০ গ্রাম জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ১ এর দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। আপনি যেকোনো কনফেকশনারির দোকানে অথবা অনলাইনে অনেক পেজ রয়েছে সেখানে পেয়ে যাবেন। কেনার আগে দাম এবং মেয়াদ ভালোভাবে দেখে নেবেন তাহলেই হবে।

জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ২

যেসব বাচ্চার বয়স দুই থেকে ছয় বছর পর্যন্ত তাদেরকে স্টেজ ২ খাওয়ানো হয়। বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধির দিকে নজর রেখে দুই থেকে ছয় বছর বয়সের বাচ্চাদের জন্য এই হরলিক্স তৈরি করা হয়। বয়সের সাথে সাথে হরলিক্সের ভিন্নতা হয়। দুই থেকে ছয় বছর বয়সের বাচ্চাদের চেষ্টা করতে হবে প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানোর এবং হরলিক্স খাওয়ানোর পরিমাণ কম করা।


যদি কোন কারণে হরলিক্স খাওয়াতে হয় তাহলে তাদেরকে এ হরলিক্স খাওয়াতে হবে। 500 গ্রাম জুনিয়র হরলিক্স স্টেজ ২ এর দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। কেনার আগে ভালোভাবে মেয়াদ এবং দাম যাচাই করে নেবেন তাহলে আপনি আর প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

শেষ কথা

একটি বাচ্চাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ করে গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে জোরে হচ্ছে প্রাকৃতিক খাবার। প্রাকৃতিক খাবার পারে তাদেরকে পরিপূর্ণ পুষ্টি যোগাতে যতোটুকু সম্ভব হয় তাদেরকে হরলিক্স কম খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন এবং খাওয়ালেও নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াতে হবে।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও তাদের বাচ্চাদের জুনিয়র হরলিক্স খাওয়ানোর ব্যাপারে সবকিছু জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url