বেল্ট সিস্টেম এবং ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর নিয়ম এবং দাম

প্রিয় পাঠক আপনি কি ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর নিয়ম এবং ওয়াশেবল ডায়াপার দাম ও ওয়াশেবল ডায়াপার কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করব।
ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর নিয়ম
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন লুজ ডায়াপার এবং ডায়াপারের ক্ষতিকর দিক ও বেল্ট সিস্টেম ডায়াপার পরানোর নিয়ম সম্পর্কে তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক

ভূমিকা

বাচ্চারা ঘন ঘন পেশাব করে এবং তারা মুখে প্রকাশ করতে পারে না যার কারণে তাদের পোষাক অনেক নষ্ট হয়। এমনকি বিছানা এবং ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র এতে করে নষ্ট হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ডায়াপার পরানো হয়। ডায়াপার ছোট বাচ্চাদের পেশাব চুষে নেওয়ার মাধ্যমে জায়গা এবং কাপড় পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।


বিশেষ করে যেসব চাকরীজীবী মা রয়েছে তারা সন্তান লালিত পালিত করার জন্য ডায়াপার বেশি ব্যবহার করে। বারবার শিশুদের পায়জামা চেঞ্জ করার কারণে অনেক বিরক্তকর পরিস্থিতি তৈরি হয় যার ফলশ্রুতিতে এই ডায়াপার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর নিয়ম

ডায়াপার অনেক ধরনের হয় সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়াশেবল ডায়াপার। এই ডায়াপার বাচ্চাকে পরানোর পরে ধুয়ে দিয়ে আবার পরানো যায়। ৩ থেকে ১৮ কেজি ওজনের বাচ্চাদের এই ডায়াপার পরানো যাবে। এ ডায়াপার প্যান্টের মতো এবং তা ওয়াটারপ্রুফ কাপড় দিয়ে তৈরি করা। বাচ্চাকে পরানোর আগে কাপড়ের নিচে লেয়ার দেয়ার জায়গা রয়েছে

সেখানে নরম কাপড় রেখে দিলে সে কাপড় পেশাব চুষে নেয় এবং উপরের কাপড় ওয়াটার প্রুফ হওয়ার কারণে ভিজে না। অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা পেশাব করার পরে কান্না করে না। এক্ষেত্রে বুঝতে না পারার কারণে তাদের চুলকানি বের হবার সম্ভাবনা থাকে। এই ডায়াপার ব্যবহার করলে এরকম সমস্যা থেকে আপনি আপনার বাচ্চাকে নিরাপদ রাখতে পারবেন।

পেশাব করার পরে বাচ্চা যদি কান্নাও না করে তারপরও কোন সমস্যা নেই। এই ডায়াপার পেশাব চুষে নিতে সক্ষম। প্রতিদিন ব্যবহার করানোর পরে এটিকে ধুয়ে নিতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনি আবার পরাতে পারবেন। এই ডায়াপার এর কোমরে অনেক রকমের বোতাম দেয়া রয়েছে যার কারণে সব ওজনের বাচ্চাদের এটাই পরানো সহজে পরানো যায়।

বিশেষ করে ৬ থেকে ১৬ মাস বয়সের বাচ্চাদের এটা পড়ালে রাত্রে মা এবং শিশু দুজনেরই আরামে ঘুম হবে। এই ডায়াপার এর একটি মুখ থাকে সেই মুখের মধ্যে দিয়ে তিনটি লেয়ার দিয়ে দেবেন। যদি সম্ভব হয় তাহলে একটি সুতি কাপড় লেয়ারের এর সাথে দিলে আরো ভালো হবে। সুতি কাপড় দিলে অবশ্যই তিনটি লেয়ারের একেবারে নিচে দিতে হবে।

এক কোনা থেকে আরেক কোনা পর্যন্ত সম্পূর্ণ জায়গায় এ লেয়ার ঢুকিয়ে দিবেন। ডায়াপারের বাটন থাকবে সামনের দিকে আর যে মুখ রয়েছে সেটি থাকবে পিছনের দিকে। এরপর বাচ্চাকে সেখানে বসিয়ে বোতাম লাগিয়ে দিলেই হয়ে যাবে। বোতাম লাগানো সম্পূর্ণ নির্ভর করবে বাচ্চা স্বাস্থ্যের উপরে। বাচ্চার স্বাস্থ্য অনুযায়ী যতটুকু বোতাম লাগানোর প্রয়োজন হয়

সেই মোতাবেক বোতাম লাগিয়ে নিবেন তাহলে এই ওয়াসেবল ডায়াপার পরানো হয়ে যাবে। আপনার বাচ্চাকে যদি ডায়াপার পরানোর চিন্তা করেন তাহলে এই ডায়াপার সবচেয়ে ভালো হবে। এটি এমন একটি ডায়াপার আপনি যতবার ইচ্ছা ততবার ওয়াশ করতে পারবেন। এই ডায়াপার পড়ালে বাচ্চার ঠান্ডা লাগা সম্ভাবনা একেবারেই কম অর্থাৎ আপনার বাচ্চা অনেক রকমের রোগ হতে নিরাপদ থাকবে।

ওয়াশেবল ডায়াপার দাম

এই ডায়াপার একবার কিনে বারবার ওয়াশ করা যায় যার কারণে এই ডায়াপারের সুবিধা অনেক বেশি। বিভিন্ন জায়গায় ওয়াশেবল ডায়াপার দাম বিভিন্ন রকম নিয়ে থাকে। দাম সম্পন্ন নির্ভর করে সেই ড্রাইপার এর মান এর উপরে এবং কাপড়ের উপরে লক্ষ্য করে। ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৯০০ টাকা দামের পর্যন্ত ওয়াশেবল ডায়াপার পাওয়া যায়।


আপনি যত দাম দিয়ে কিনবেন ততই ভালো মানের পাবেন। কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে কাপড়কে যাচাই করে নেবেন। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো অনেক ভালো। আপনি আপনার বাচ্চাকে ওয়াশেবল ডায়াপার পরানোর কথা চিন্তা করলে এ দামের মধ্যে কেনা ভালো হবে। বর্তমান সময়ে দারাজে এই ডায়াপার পাওয়া যায়।

ওয়াশেবল ডায়াপার কোথায় পাওয়া যায়

যুগ উন্নত হওয়ার সাথে সাথে এ ডায়াপার কেনার রাস্তাও সহজ হয়ে গেছে। বিভিন্ন ফার্মেসিতে আপনি এ ডায়াপার পাবেন। যদি আপনি চান ফার্মেসি থেকে কিনবেন না তাহলে অনলাইনে অনেক রকমের পেজ রয়েছে সে পেইজে অর্ডার করে আপনি এই ডায়াপার কিনে নিতে পারবেন। এমনকি দারাজে এই ডায়াপার বিক্রি হয়।

দারাজে অর্ডার করলে খুব সহজেই আপনি এই ডায়াপার পেয়ে যাবেন। ফেসবুকে অনেক পেজ রয়েছে যারা শিশুদের জন্য এ ধরনের ডায়াপার বিক্রি করে। আপনি সেই পেজ থেকেও কিনতে পারবেন। পেজ থেকে কেনার আগে অবশ্যই সতর্কতার সাথে কিনবেন। পণ্য হাতে পাওয়ার পরে তারপরে দাম দিবেন কখনোই আগে দাম দিবেন না।

সবচেয়ে ভালো হয় নিজে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে অথবা ছোট বাচ্চাদের যেসব দোকান রয়েছে সেই সব দোকানে গিয়ে কেনা। তাহলে আপনি একদম সাইজ মত কিনতে পারবেন এবং আপনার বাচ্চা ব্যবহার করে আরাম পাবে।

লুজ ডায়াপার

এক ধরনের ডায়াপার আছে সেটাকে লুজ ডায়াপার বলা হয়। অধিকাংশ বাচ্চাকে এই ডায়াপার পরানো হয়। এটা ব্যবহার করতেও আরামদায়ক এবং বাচ্চারা পড়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। একবার এটা পড়ালে তিন চারবার পর্যন্ত বাচ্চারা এখানে পেশাব করতে পারে। এতে করে দীর্ঘ একটি সময় পর্যন্ত বাচ্চার কাপড় বদলানোর ঝামেলা থাকে না।


বিশেষ করে রাত্রে ঘুমানোর সময় এটা পড়ায় ঘুমাইলে রাত্রে ভালোভাবে ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দামের দিক দিয়েও এই ডায়াপার এর দাম কম। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ টাকার মধ্যে প্রতিটি লুজ ডায়াপারর দাম হয়। আপনি চাইলে আপনার বাচ্চাকে এই ডায়াপার ব্যবহার করাতে পারেন। বাচ্চাদের জন্য অনেক ভালো।

বেল্ট সিস্টেম ডায়াপার পরানোর নিয়ম

এক ধরনের ডায়াপার রয়েছে সেটা বেল সিস্টেমের। অনেকে আছে যারা তাদের বাচ্চাকে এই ডায়াপার ব্যবহার করান। এই ডায়াপার ৪ সাইজের হয়। ৩ থেকে ৬ কেজি ওজনের বাচ্চাদের জন্য স্মল সাইজ। ৪ থেকে ৯ কেজি ওজনের বাচ্চাদের জন্য মিডিয়াম সাইজ। ৭ থেকে ১৮ কেজি ওজনের বাচ্চাদের জন্য লার্জ সাইজ এবং 11 থেকে 25 কেজি ওজনের বাচ্চাদের জন্য XL সাইজ।

এই ডায়াপার লম্বা এবং চওড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ বড়। বাচ্চাকে ডায়াপারের মাঝখান সোজা বসিয়ে দুই পাশ দিয়ে বেল্ট লাগিয়ে দিলেই হয়ে যাবে। এই ডায়াপার পরানো একেবারেই সহজ এবং 6 থেকে 7 ঘন্টা পর্যন্ত এই ডায়াপারবাচ্চাদের পরিয়ে রাখা যায়। বেল ডাইভারের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

বাচ্চাকে এ ডায়াপার ব্যবহার করানো অনেক সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়। দামের দিক দিয়েও মধ্যবর্তী হওয়ায় সহজে কেনা সম্ভব হয়। আপনি চাইলে আপনার বাচ্চাকে বেল্ট সিস্টেম ডায়াপার ব্যবহার করাতে পারেন।

ক্লথ ডায়াপার

এই ডায়াপার কাপড়ের তৈরি। বাচ্চাকে ব্যবহার করানো হলে আপনি ধুয়ে দিতে পারবেন এরপর শুকিয়ে গেলে আবার পরাতে পারবেন। শুধু ভিতরে যে লেয়ার রয়েছে সে লেয়ার চেঞ্জ করতে হবে। এই ডায়াপার বাচ্চাদের পরানো সহজ এবং বাচ্চারা ব্যবহার করেও অনেক আরাম পায়। এই কাপড় সম্পূর্ণ ওয়াটারপ্রুভ হওয়ার কারণে বাচ্চা পেশাব করলে ডায়াপার ভিজে না।


শুধু ভিতরে লেয়ার ভিজে যায় যার ফলে বাচ্চার ঠান্ডা লাগার কোন সম্ভাবনা নেই। এই ডায়াপার এর দাম ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৯০০ টাকা পর্যন্ত হয়। আপনি যদি কিনার চিন্তা করেন তাহলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো কিনা ভালো হবে। এই ডায়াপার একবার কিনলে আপনি অনেক দিন পর্যন্ত ব্যবহার করাতে পারবেন।

শেষ কথা

ডায়াপার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো ডায়াপার কিনতে হবে তাছাড়া ডায়াপার ভালো না হলে সেখান থেকে বাচ্চার বিভিন্ন রকমের চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে দায়ী পার বাচ্চাকে পড়িয়ে রাখা থেকেও বিরত থাকুন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও তাদের বাচ্চাকে পরানোর জন্য কোন ডায়াপার ভালো হবে সে সম্পর্কে জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url