টানা ১৫ দিন নিম পাতার উপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক ও খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আপনি কি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এ পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টে নিম পাতার উপকারিতা এবং নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায় সম্পর্কে বলা হয়েছে। আপনি পড়তে থাকুন আশা করি আপনি নিমপাতা সম্পর্কে অনেক উপকারী তথ্য পেয়ে যাবেন।নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা

এছাড়াও আপনি এই পোস্টে পাবেন নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম, নিম পাতার ক্ষতিকর দিক, নিম পাতা দিয়ে চুলের যত্ন সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে থেকে বাংলাদেশ ও ভারত উপমহাদেশে গাছামু ওষুধের প্রচলন আছে। যেসব ওষুধ খুব কার্যকারী সেসবের মধ্যে একটি হচ্ছে নিমপাতা। নিম পাতার মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে এমন এমন গুণ রয়েছে যেগুলো আপনার অনেক রোগের সমাধান করতে সামর্থ্য রাখে। বর্তমানে ওষুধ খাওয়ার ফলে অনেক সাইড ইফেক্ট দেখা দেয় যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর।


নিম পাতা এমন একটি ওষুধ যা আপনার জন্য কখনো ক্ষতিকর হবে না বরং নিম পাতা খাওয়ার ফলে অনেক উপকৃত হবেন এবং আপনার শরীরের জন্য কার্যকারী। এ পোস্টে নিম পাতা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ভুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে যাতে করে আপনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা জানতে পারেন।

নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম

নিমপাতা এমন একটি জিনিস যেটা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারবেন।
  • সকালে খাটি পেটের খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী।
  • আপনি চাইলে সেটা পিষে খেতে পারবেন।
  • রস হিসেবে খেতে পারেন বা ট্যাবলেট করেও খেতে পারবেন।
  • যদি আপনার খাওয়ার ক্ষেত্রে কষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে আপনি নিম পাতার সাথে মধু মিশ করেও খেতে পারবেন। মধু দিয়ে খাওয়ার ফলে নিম পাতার তিতো ভাব কমে যাবে।
  • আপনি চাইলে নিমপাতা পিষে সেগুলো ট্যাবলেট আকারে করে রোদে শুকিয়ে ট্যাবলেট এর মত করেও খেতে পারেন। এভাবে খাইলে আপনি তিতা ভাব বুঝতে পারবেন না।
  • আপনি চাইলে গোলমরিচ এবং নিমপাতা বেটে এ পদ্ধতিতেও খেতে পারেন।
মোটকথা আপনি যেভাবে খাবেন সেভাবেই নিম পাতার উপকারিতা গুলো আপনি পাবেন। সতর্ক থাকবেন এমন কোন বস্তুর সাথে মিশিয়ে খাবেন না যেগুলো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাছাড়া এই যে আপনার জন্য বিপরীত দিকে বয়ে নিয়ে আনবে।

নিম পাতার উপকারিতা - নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি

নিমপাতাতে সব রকমের উপকারিতা রয়েছে। আপনি চাইলে এটা দিয়ে রোগ ভালো করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারবেন,শরীরের ভিটামিনের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন এবং রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। চলুন এবার নিম পাতা খাওয়ার ফলে যেসব উপকারিতা হয় সেসব সম্পর্কে আপনারা জানুন।
  • চুলকানি রোগের জন্য নিম পাতা খুব উপকারী। আপনি নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে আপনার চুলকানি ভালো হয়ে যায়।
  • আপনি চাইলে নিমপাতা সরিষার তেলের সাথেও মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে ব্যবহার করার পদ্ধতি হচ্ছে সরিষার নিম পাতা গুড়া করে নিয়ে সরিষার তেলের সাথে একসাথে করে ব্যবহার করবেন।
  • নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদ একসাথে পিষে আপনার চুলকানি বা যে জায়গায় ছত্রাক বের হয়েছে সেখানে ব্যবহার করলে আপনার চুলকানি ভালো হয়ে যাবে।
  • যাদের কৃমির রোগের সমস্যা রয়েছে তারা নিমপাতা খাবেন এতে করে আপনার কৃমির রোগ ভালো হয়ে যাবে।
  • যাদের রক্ত পরে বা দাঁতে ঠান্ডা পানি ধরে তারা নিমপাতের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করবেন। এটা আপনার দাঁতের জন্য খুব উপকারী।
  • আপনি নিমপাতা খাওয়ার ফলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে কারণ নিম পাতা সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। যাদের ডাইবেটিস আছে তারা নিম পাতা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • নিমপাতা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং আপনার শরীরে যেগুলো অতিরিক্ত চর্বি রয়েছে সেগুলো কমাতে নিমপাতা খুব উপকারী।
  • নিমপাতা আপনার রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। যাদের দূষিত রক্তের সমস্যা হয়েছে তারা নিমপাতার রস খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার রক্ত পরিষ্কার হবে।
  • যাদের ঠান্ডা লাগে তারা নিম পাতার রস খাবেন এতে করে আপনার কাশি ভালো হয়ে যাবে।
  • বর্তমানে কম বেশি সবারই জন্ডিস হয়ে থাকে। আপনার জন্ডিস হলে আপনি প্রতিদিন নিম পাতার রস খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার জন্ডিসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • ম্যালেরিয়া এবং বাত ব্যথা দূর করার জন্য নিমপাতা খুব কার্যকরী একটি ওষুধ।
  • যাদের চোখে এলার্জি সমস্যা রয়েছে বা চোখে চুলকানোর সমস্যা রয়েছে তারা নিমপাতা সিদ্ধ করে সেই পানি ব্যবহার করুন। আপনার চোখের চুলকানির সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • যাদের শরীরে এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা নিম পাতা দিয়ে গোসল করুন আপনার অ্যালার্জি চিরতরে দূর হয়ে যাবে।
আপনি নিম পাতা খাওয়ার ফলে এসব উপকারিতা গুলো পাবেন। এছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। আপনি চাইলে প্রতিদিন নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন এতে করে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে।

নিম পাতার ক্ষতিকর দিক 

নিম পাতার উপকারিতা যেমন অনেক বেশি তেমনভাবে কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। সেগুলো জানা জরুরী যাতে করে আপনি সেগুলো ক্ষতিকরতা থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।
  • কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না আপনি অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার পরে আপনার এলার্জি সমস্যা ভালো হওয়ার বিপরীতে আরও বেড়ে যাবে।
  • নিমপাতা খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
  • নিমপাতা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে সন্তান প্রসবের ক্ষমতা কমে যায়। এজন্য সীমার মধ্যে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • আপনি ত্বকের যত্নের জন্য অতিরিক্ত নিমপাতা ব্যবহার করলে সেটি আপনার ত্বক আরো নষ্ট করে দিবে।
  • ছোট বাচ্চাদের নিম পাতা খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন।

আপনি এসব ক্ষতিকর দিকগুলা এড়িয়ে চললে আপনি নিমপাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে একদম নিরাপদ থাকবেন।

নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা - ত্বকের যত্নে নিম পাতার উপকারিতা

নিম পাতা শুধু শরীরের জন্যই নয় বরং নিমপাতা রূপচর্চার কাজে অতি গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এবার নিম পাতা দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করবেন সে সম্পর্কে জানুন
  • নিম পাতা ছত্রাক দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য আপনি নিম পাতা ত্বকে ব্যবহার করলে ব্রণ উঠা থেকে নিরাপদ থাকবেন।
  • অনেকের মাথার খুশকি এবং চুলকানির ভাব থাকে এজন্য আপনি নিম পাতা ব্যবহার করলে আপনার মাথার খুশকি দূর হয়ে যাবে।
  • আপনি নিমপাতার সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে তা ত্বকের ব্যবহার করলে আপনার চেহারা উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাাবে।
  • আপনি নিমপাতা রোদে শুকিয়ে সেসব গুড়া করে প্রতিদিন গোসলের আগের ফেস প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার চেহারা উজ্জ্বল হবে এবং চুলকানি হতে নিরাপদ থাকবে।
  • নিমপাতা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী এজন্য আপনি চাইলে নিমপাতা এবং সাবান একসাথে করে নিমপাতা সাবান বানিয়ে নিতে পারেন। এতে করে আপনি পুরো শরীরে ব্যবহার করতে পারবেন।

চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা - নিম পাতা দিয়ে চুলের যত্ন

নিম পাতার উপকারিতা খাওয়ার সাথে সাথে রূপচর্চা এবং চুলের যত্নের জন্য বেশ কার্যকারী উপাদান। চলুন এবার আপনি নিমপাতা দিয়ে কিভাবে চুলের যত্ন নিবেন সে সম্পর্কে জানুন
  • নিম পাতা আপনার খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে এজন্য নিম পাতা সিদ্ধ করে নিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করুন এতে করে আপনার মাথার খুশকি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • আপনি নিম পাতার গুড়া এবং শ্যাম্পু দিয়ে একসাথে মাথায় মাখলে আপনার চুল অনেক বেশি সিল্কি হবে এবং কালো হবে।
  • মেথি টক দই আর নিমপাতার গুড়া একসাথে আপনি মাথায় ব্যবহার করলে আপনার মাথার উকুনের সমস্যা দূর হবে এবং আপনার মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।
  • আপনি নারিকেল তেল এবং নিমের রস একসাথে করে মাথায় মাসাজ করুন এতে করে আপনার মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করবে এবং আপনার চুলের গোড়া শক্ত করবে।

শেষ কথা - নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিমপাতা প্রাকৃতিক জিনিস এজন্য এটার কোন সাইড ইফেক্ট নাই। আপনি এটা নিয়ম অনুযায়ী খান এবং ব্যবহার করুন তাহলে আপনি নিমপাতা খাওয়ার উপকারিতা পাবেন। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন কিছু পরিমাণ হলেও নিম পাতা খাওয়া যাতে করে আপনার রক্ত পরিষ্কার থাকে।


আমার এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url