ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার বয়স ও বানানোর নিয়ম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
প্রিয় পাঠক আপনি কি ল্যাকটোজেন ১ বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ল্যাকটোজেন ১ বানানোর নিয়ম এবংল্যাকটোজেন ১ এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে ল্যাকটোজেন ১ সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার বয়স এবং ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম ও ল্যাকটোজেন 1 এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি সেগুলো সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
পৃথিবীতে একটি শিশু জন্ম হওয়ার পর তার জন্য সবচেয়ে উপকারী খাবার হচ্ছে তার মায়ের দুধ। যখন বাচ্চা তার মায়ের বুকের পর্যাপ্ত পরিমান দুধ না পায় তখন তাকে ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানো হয়। এটি এমন একটি দুধ যা বাচ্চার খাবারের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি তার শরীরে যত রকমের পুষ্টিগুণ দরকার প্রত্যেকটি এই দুধের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হয়।
বিশ্ব সংস্থা থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় সকল ডাক্তার এবং মেডিকেল এই দুধ বাচ্চার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। এই দুধ সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত যার কারণে বাচ্চা এই দুধের দ্বারা বেশি উপকৃত হতে পারে।
ল্যাকটোজেন ১ এর উপকারিতা
একটি শিশু পৃথিবীতে জন্মের পর তার জন্য সবচেয়ে উত্তম খাবার হচ্ছে তার মায়ের বুকের দুধ। অনেক সময় অনেক কারণে মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য খাওয়ানো যায় না সেক্ষেত্রে ল্যাকটোজেন 1 খাওয়ানো হয়। এই দুধে এমন কিছু উপকারিতা রয়েছে যা শিশুর বেড়ে ওঠা এবং দুধের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।
ল্যাকটোজেন ১ এই দুধে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, মস্তিষ্ক, ভিটামিন আইরন খনিজ উপাদান গুলো রয়েছে যেগুলো একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরী। এই দুধ শিশুকে খাওয়ানোর ফলে শিশুর শরীরে রক্ত কণিকা গঠন হয় এবং শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। শরীরের হাড় এবং দাঁতে যেই পরিমাণ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়
এই দুধে সেই পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে যা একটি শিশুকে খাওয়ালে তার শরীরের হাড় এবং দাঁত শক্ত হয়। একটি শিশুর যতটুকু দুধের চাহিদা থাকে এই দুধ খাওয়ানোর ফলে শরীরে সেই মোতাবেক চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে যত বড় বড় মেডিকেল রয়েছে সেগুলোর মতে মায়ের বুকের দুধে শিশুর জন্য উপযোগী
কিন্তু যখন তা সরবর করা হয় না তখন এই দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। এই দুধের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে তার শিশুকে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার বয়স
ল্যাকটোজেন ১ হচ্ছে সেই সব শিশুদের জন্য যারা পৃথিবীতে আসার পরে থেকে মায়ের দুধ পান করা থেকে বিরত থাকে অর্থাৎ যারা একেবারে নবজাতক তাদের জন্য। এই দুধ তৈরি করা হয়েছে শূন্য থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য। প্রতিটি সপ্তাহে ধারাবাহিকভাবে খাওয়ানোর নিয়ম পরিবর্তন হয়। একেক সপ্তাহে একেক ভাবে খাওয়াতে হয়।
যখন বাচ্চার বয়স আস্তে আস্তে বেশি হতে থাকবে তখন খাওয়ানোর নিয়মও আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে থাকবে। ছয় মাস পার হওয়ার পরে কখনোই তাদেরকে এই দুধ খাওয়ানো উচিত হবে না। তখন তাদের জন্য ভিন্ন দুধ রয়েছে তাদেরকে সেই সময় সেটা খাওয়াতে হবে। ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম এই দুধ বাচ্চাদেরকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম রয়েছে।
- পৃথিবীতে যখন একটি শিশু আসে তখন তাকে এই দুধ খাওয়ানোর নিয়ম ভিন্ন এবং যখন আস্তে আস্তে তার বয়স বেশি হতে থাকবে তখন তাদেরকে এই দুধ খাওয়ানোর নিয়ম ভিন্ন হবে।
- একটি শিশুর বয়স তখন এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ হবে তখন তাদেরকে প্রতিদিন ছয় বার করে এই দুধ খাওয়াতে হবে এবং ৯০ মিলির ফিডারে তিন চামচ মিশাতে হবে। এর বেশি কখনোই দিবেন না।
- বাচ্চার বয়স যখন আরেকটু বেশি হবে অর্থাৎ তিন থেকে চার সপ্তাহ হবে তখন তাদেরকে ১২০মিলে পানিতে চার চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ দিবেন এবং 24 ঘন্টার মধ্যে পাঁচবার করে খাওয়াবেন।
- শিশুর বয়স যখন দুই মাস হবে তখন তার খাবারের চাহিদা আরো বেশি হবে। সে সময় তাকে ১৫০ মিলি ফিদারে ৫ চামচ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাঁচ বার খাওয়াবেন।
- যখন শিশুর বয়স তিন মাস এবং ৪ মাস হবে এই দুই মাসে তাদেরকে ১৮০মিলির ফিদারে ছয় চামচ পরিমাণ ছয় চামচ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে। রাত এবং দিন মিলে পাঁচ বার খাওয়াবেন।
- বাচ্চার বয়স যখন পাঁচ মাস চলবে অর্থাৎ ছয় মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে ২১০ মিলির ফিডারে সাত চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে রাত এবং দিন মিলে পাঁচবার খাওয়াবেন।
ছোট বাচ্চাদের শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সের খাওয়ানোর নিয়ম এটাই। এর বেশি কখন খাওয়াবেন না তাহলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে এবং খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খাওয়াবেন যেন দুধ বাচ্চার গলায় আটকে না যায়। তাছাড়া অসতর্কতার সাথে খাওয়ালে বাচ্চার বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
ল্যাকটোজেন ১ বানানোর নিয়ম
যখন ছোট বাচ্চার জন্য দুধ তৈরি করা হবে তখন অবশ্যই আপনাকে সতর্কতার সাথে দুধ তৈরি করতে হবে এবং যেই ফিদারে খাওয়াবেন সেই ফিডার সব সময় গরম পানিতে ধুয়ে নিবেন যাতে করে সেখানে কোন রকমের জীবাণু না থাকে এবং ফিদার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো কোম্পানির যেসব ফিডার রয়েছে সেই ফিডারে খাওয়াবেন
তাছাড়া যেকোনো কমা কোম্পানির ফিডারে খাওয়ালে জীবাণু থাকতে পারে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। প্রথমে বাচ্চাকে যেই পরিমাণ দুধ খাওয়াবেন সেই পরিমাণ পানি গরম করে নিবেন এরপর কিছু সময় রেখে দেবেন যাতে করে পানি এমন ঠান্ডা হয় যা বাচ্চা খেতে পারে। এরপর ফিডার ভালোভাবে গরম পানিতে ধুয়ে নেবেন।
এক এবং দুই সপ্তাহের বাচ্চাদেরকে ৯০ মিলির ফিডারে তিন চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে খাওয়াবেন। তিন এবং চার সপ্তাহের বাচ্চাদের ১২০ মিলি ফিডারে চার চামচ পরিমাণল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে তাদের জন্য দুধ বানাবেন। বাচ্চার বয়স যখন দুই মাস হবে তখন ১৫০ মিলির ফিডারে ৫ চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ মিশাবেন।
বাচ্চার বয়স যে সময় তিন এবং চার মাস থাকবে তখন তাদেরকে ১৮০ মিলি ফিডারে ছয় চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে পান করাবেন। বাচ্চার বয়স যখন পাঁচ মাস হবে এবং ছয় মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত থাকে 210 মিনিট ফিডারে সাত চামচ পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে পান করাবেন। দুধ বানানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালোভাবে খেয়াল করবেন
যাতে কোন ভাবে গুড়োগুড়ো ভাব না থাকে। সম্পূর্ণ যাতে পানির সাথে মিশে যায় এবং একেবারে তরল হয় যাতে করে বাচ্চা আরামে খেতে পারে। অন্যথায় গুঁড়ো জমা হয়ে থাকলে বাচ্চা খেতে পারবে না অথবা বাচ্চার গলায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
ল্যাকটোজেন ১ দাম কত
বাংলাদেশে তিন রকমের প্যাকেটে ল্যাকটোজেন ১ পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন রকমের প্যাকেটের দাম বিভিন্ন রকম।
- ১৮০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ২৫০ টাকা।
- ৩৫০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ৬৫০ টাকা।
- ৪০০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ৮৫০ টাকা।
সারা বছর এরকমই দাম থাকে। আপনি অবশ্যই দোকানে কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে লেখা দাম ভালোভাবে দেখে নেবেন এবং মেয়াদও দেখে নিবেন যাতে করে বাচ্চাকে একদম পিওর দুধ খাওয়ানো যায়।
ল্যাকটোজেন ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যখন আপনার শিশুকে এই দুধ নিয়মের বিপরীতে খাওয়াবেন এবং পরিমাণের তুলনায় অতিরিক্ত খাওয়াবেন তখন তার শিশুর জন্য ক্ষতিকর হবে এবং বিভিন্ন রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। যেমন বমি হওয়া পেট খারাপ হওয়া পাতলা পায়খানা ঠিকমতো হজম না হওয়া বাচ্চাকে শান্ত না করার মত সমস্যা দেখা দিবে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তখনি দেখা দেয় যখন বাচ্চাকে নিয়মের বিপরীতে খাওয়ানো হয়। অবশ্যই কোন বাচ্চাকে এ দুধ খাওয়ানোর পূর্বে নিয়ম ভালোভাবে পড়ে নেবেন তাহলে আর আপনার বাচ্চার কোন রকমের ক্ষতি হবে না এবং কোন রকমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ের প্রভাব পড়বে না। এই দুধকে মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে ধরা হয় অর্থাৎ
আরো পড়ুন :: ইসলামিক, আধুনিক, আনকমন এবং সুন্দর ১৪১২ টি নাম
খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে নিয়ম দেখে নিবেন এবং সতর্কতার সাথে খাওয়াবেন তাহলে আপনার বাচ্চার জন্য এই দুধ উপকারী হবে এবং কোন রকমের ক্ষতি হবে না।
শেষ কথা
যখন একেবারে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো সম্ভব হবে না তখনই তাদেরকে এই দুধ খাওয়াবেন । এ দুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন যাতে করে বাচ্চা সম্পূর্ণ উপকৃত হতে পারে এবং বিপদের হাত থেকে বেঁচে থাকতে পারে।
আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও ল্যাকটোজেন ১ সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে এবং উপকৃত হয়।
সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url