নবজাতকের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় - গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায়

প্রিয় পাঠক আপনি কি গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোস্টের মধ্যে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়, শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সবজি ও নবজাতকের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় কি কি সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।
নবজাতক শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন কোষ্ঠকাঠিন্য চিরতরে দূর করার উপায়,দুধ খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং কষ্টকাঠিন্য দূর করার প্রাকৃতিক উপায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায় ও চিড়া খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় নাকি সে সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় এবং নবজাতক শিশুর অনেক রকমের সমস্যা অসুস্থতাও হয় তার মধ্যে একটি বিশেষ অসুস্থতা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। কম বেশি সব শিশুর এবং গর্ভবতী মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যা থেকে আস্তে আস্তে বড় আকারের রোগ ধারন করতে থাকে। অনেকে ভাবেন কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় অনেক রকমের খাবার খাওয়া নিষেধ।


এজন্য এ পোষ্টের মধ্যে আলোচনা করব কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি খাওয়া উচিত নয় সেগুলো সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরের পরিবর্তন হওয়ার কারণে এবং বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় অনেক রকমের বিরক্তিভাব কাজ করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ নারী গর্ভ অবস্থায় এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের জন্য কিছু উপায় রয়েছে।

সে উপায়গুলো আপনি ঠিকমতো অনুসরণ করলে দেখবেন গর্ভাবস্থাতেও আপনি এই সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকবেন।
  • ইসবগুলের ভুষি প্রতিদিন দুই বেলা করে খাবেন। এতে করে দেখা যাবে আপনার মলত্যাগের ক্ষেত্রে সহজ হবে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে এবং পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ও দূর করতে সক্ষম এই ইসুবগুলের ভুষি।
  • গর্ভাবস্থায় একটি মহিলার উচিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং শরবত খাওয়ার এতে করে শরীরের পানি শূন্যতার সমস্যা দেখা যায় না এবং শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও হয় না।
  • প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে হাঁটাচলা করা উচিত এতে করে শরীর ভারী হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না এবং পুরা শরীর সুস্থ থাকার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও কমে যাবে।
  • খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আঁশযুক্ত যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো খেতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ভালো করে।
  • শাক সবজি ফলমূল খাওয়ার পরিমান বেশি খেতে হবে।
  • প্রতিদিন খাবারের তালিকায় লাল শাক পালং শাক লাউ শাক আলু গাজর শসা এগুলো থাকতে হবে।
  • প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও ফল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে প্রতিদিন তিনটি করে কলা খেতে হবে। এছাড়াও যদি সম্ভব হয় তাহলে আপেল আঙ্গুর কমলা বেদনা আরো যে ফলগুলো রয়েছে সেগুলো খাবেন।
  • ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই যেসব ফলের খোসা ছাড়ানো ছাড়া খাওয়া যায় খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে এতে করে আপনি পুষ্টিগুণ বেশি পাবেন এবং খোসায় ফাইবার থাকে যা পেটকে ভালো রাখে।
  • ডানা যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেমন বিকাল বেলা অথবা সন্ধ্যার দিকে হালকা-নাস্তায় বাদাম কিসমিস কাজুবাদাম পেস্তা বাদাম এ খাবারগুলো খাবেন। এগুলো আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হওয়ার পাশাপাশি বাচ্চার জন্য উপকারী হবে।
  • যেসব খাবারে ফাইবার রয়েছে সেই খাবারগুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেমন ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে লাল চাউলের ভাত এবং যদি রুটি খান তাহলে লাল আটার রুটি খাবেন।
  • ঘি অথবা দুধ খেতে হবে মোটকথা দুগ্ধ জাতীয় যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন। অনেকে আছে যারা গর্ভ অবস্থায় নাকে গন্ধের কারণে দুধ খেতে পারেন না এক্ষেত্রে তারা পায়েস অথবা দধি করে খাবেন তাহলে দেখবেন আপনি খুব সহজেই খেতে পারবেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকেও নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে এবং মানসিক দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিতে হবে।
  • একসাথে অনেকগুলো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। চেষ্টা করবেন অল্প অল্প করে কয়েকবার খাবার এতে করে আপনার পেটের জন্য ভালো হবে।
  • খাবারের তালিকা থেকে ফাস্টফুড জাতীয় যে খাবারগুলো রয়েছে যেমন নুডুলস পাস্তা ফ্রাইড রাইস চিকেন ফ্রাই নাগা চিকেন চিকেন চাওমিন stek বার্গার স্যান্ডউইচ নাকেট এ জাতীয় খাবারগুলো একেবারে পরিহার করবেন।
  • চা কফি খাওয়া থেকে নিজেকে অনেকটা দূরে রাখবেন। চা কফি শরীরকে আস্তে আস্তে কষা করে দেয়।
  • লেবু পানি অথবা আদা পানি শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং পেটকে ভালো রাখতে সাহায্য করে প্রতিদিন সকালে চেষ্টা করবেন লেবু এবং কুসুম গরম পানি একসাথে করে খেতে অথবা আদা ও কুসুম গরম পানি একসাথে করে খাবেন।
  • খাবার খাওয়ার পরে চেষ্টা করবেন সামান্য পরিমাণে টক দই খাওয়ার এতে করে খাবার আপনার পেটে ঠিকভাবে হজম হবে এবং পেটে কোন রকমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে দিবে।
গর্ভাবস্থায় কম বেশি সবারই এ সমস্যা হয় এজন্য এ সমস্যা হলে অতিরিক্ত চিন্তার কোন কারণ নেই। যে উপায়গুলো বলা হলো সেগুলো মেনে চললে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি আপনি এই সমস্যা থেকে নিজেকে বের করে নিতে পারছেন।

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় - বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুদের হজম শক্তি অনেক কম এজন্য তাদেরকে খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সাবধানতার সাথে খাওয়ানো হয়। এরপরও দেখা যায় অনেক সময় তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দেখা দেয়। বাচ্চাদের যদি ঠিকভাবে মলত্যাগ না হয় তাহলে তাদের পেটে বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যেভাবে দূর করবেন জানুন
  • বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খাওয়াতে হবে কারণ তাদের হজম শক্তি কম তাদের পেটে যে খাবারগুলো হজম হবে তাদেরকে সেই খাবার খাওয়ানোর চেষ্টাই করতে হবে।
  • প্রতিদিন সকালে অথবা রাত্রে তাদেরকে হাফ গ্লাস করে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন। যদি সম্ভব হয় তাহলে দুধের মধ্যে পাঁচ ছয়টি কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সে কিসমিস গুলো খাওয়াবেন।
  • বাচ্চাদেরকে কখনোই রাতে ভারী কোন খাবার খেতে দেবেন না। এতে করে গ্যাস হবার অথবা পেট ফাঁপার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • তাদেরকে কোন খাবার রান্না করে দিলে অবশ্যই তাতে মসলার পরিমাণ কম দিবেন এবং সেই খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করবেন।
  • যে সময় বাচ্চা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগবে তখন তাকে কোনভাবে প্যাকেটজাত যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো খেতে দিবেন না।
  • তাদেরকে নিয়ম করে প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়াতে হবে। কখনো নিয়মের বিপরীতে বিভিন্ন সময় খাবার খাওয়াবেন না। এতে করে তাদের পেটে ঠিকভাবে হজম হবে না এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিবে।
  • তাদেরকে মলত্যাগ করানোর জন্য নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী মলত্যাগ করাতে হবে। দিনের অথবা রাতের এই দুই থেকে তিন সময় তাদেরকে তাদের বাথরুমের উপরে বসিয়ে দিবেন এবং কিছু সময় পরে তুলে নেবেন।
  • বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি,ফলের রস এগুলো খাওয়াবেন। এগুলো খাওয়ানোর ফলে তাদের হাইড্রেশনের মাত্রা সাহায্য করে।
  • বাচ্চাদেরকে যেসব ফল খেতে দিবেন অথবা যে খাবারগুলো খাওয়াবেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন খাবারগুলোতে যেন ফাইবারের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে ফাইবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
  • বাচ্চাদেরকে কখনোই ভাজাপোড়া এবং ফাস্টফুডের খাবার খেতে দিবেন না। তাদের পেটে এ খাবারগুলো কোনভাবে সহ্য হয় না যার ফলে তারা ঠিকভাবে হজম করতে না পারার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় এবং বমি হয়।
  • বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন খেলাধুলা করতে দেবেন। যদি আপনার কাছে সেই পরিমাণ সুযোগ থাকে তাহলে তাদেরকে সাঁতার কাটার ব্যবস্থা করে দিবেন।
  • বাচ্চাদেরকে গোসল করানোর সময় কখনই ঠান্ডা পানিতে গোসল করাবেন না। কুসুম গরম পানিতে গোসল করাবেন এতে করে তাদের ত্বক ভালো থাকবে এবং তাদের স্বস্তিবোধ হবে।
  • যদি তাদের ঠিকমত মলত্যাগ না হয় সে ক্ষেত্রে পেট মাসাজ করবেন। কিছু সময় ধরে প্রতিদিন পেট মাসাজ করতে হবে।
  • তাদের পছন্দ মত বাথরুম দেওয়ার চেষ্টা করুন। বাচ্চাদের জন্য অনেক রকমের ডিজাইনের বাথরুম পাওয়া যায় সব সময় চেষ্টা করবেন তাদের জন্য সুন্দর বাথরুম নিয়ে আসার এতে করে তারা আগ্রহ সহকারে মলত্যাগ করবে।
  • বাচ্চাদেরকে ভাত খাওয়ানোর সময় সবজি খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই আঁশযুক্ত যে সবজিগুলো রয়েছে সেগুলো খাওয়াবেন যেমন কচু শাক আলু কলমি শাক পুদিনা পাতা পুঁইশাক মুলা শাক লাউ মিষ্টি কুমড়া।

আপনি এসব উপায় গুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই আপনার বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে পারবেন এবং বাচ্চা ঠিকমতো মলত্যাগ হবে ও কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা খুব দ্রুতই ভালো হয়ে যাবে। বাচ্চার অনেক কোমল স্বভাবের হয় এজন্য তাদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোমল ভাবে যত্ন নিতে হবে তাছাড়া অনেক রকমের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সবজি - কোষ্ঠকাঠিন্য চিরতরে দূর করার উপায়

এমন কিছু খাবার ও সবজি রয়েছে যেগুলো খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ভালো হয়ে যায়। যদি সোজা কথা বলা হয় আপনি যদি এ খাবারগুলো খেতে থাকেন দেখবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য খুব তাড়াতাড়ি চলে গেছে।
  • এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেগুলো ফাইবার বেশি থাকে এবং খাবারগুলো আঁশযুক্ত হয়
  • কলমি শাক
  • পালং শাক
  • আলু
  • ডাল
  • লাল চালের ভাত
  • মিষ্টি কুমড়া
  • লাউ
  • লাউ শাক
  • শসা
  • গাজর
  • টমেট
  • ধনেপাতা
  • সিম
  • পুঁইশাক
  • লাউয়ের ডাটা
  • আমলকি
  • কিসমিস
  • বাদাম
  • মেথি
আপনি এই সবজিগুলো খেলে ভালো ফলাফল পাবেন। সবজি বাদেও কিছু ফল রয়েছে যেগুলো প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং শরীরের জন্য উপকারী।
  • কলা
  • পেয়ারা
  • আপেল
  • কমলা
  • ঘি
  • মেথি
  • মটরশুঁটির
  • তিল
  • ব্রকলি
  • মিষ্টি আলু
  • ডুমুর
  • ক্যাস্টর অয়েল
  • আদা
  • লেবু
  • মধু
  • ইসুবগুলের ভুষি
একজন কোষ্ঠকাঠিন্য রুগী এই খাবারগুলো খেলে সুস্থ হয়ে উঠবে কারণ এ খাবারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত এবং ফাইবার ও আঁশযুক্ত যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা চিরতরে খুব সহজে দূর করতে সাহায্য করে। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন খাবারে সবজি রাখা সবজি আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

নবজাতকের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

একটি শিশু জন্মের পরে কয়েক মাস হও পর্যন্ত তাদের বিভিন্ন রকমের সমস্যা হয়। সেগুলোর মধ্যে মৌলিক একটি সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। সেই সময় বাচ্চাদের খাবার বলতে একটি থাকে তা হচ্ছে দুধ। এছাড়া তাদেরকে ওই সময় কোন রকমের খাবার খাওয়ানো যায় না। নবজাতক শিশুদেরকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কখনো একেবারে পেট ভর্তি করে খাওয়াবেন না।

কয়েকবারে সামান্য সামান্য পরিমাণ করে খাওয়াবেন এতে করে তাদের পেটে সহজে হজম হবে। যখন দেখবেন তারা দুধ পান করার পরে বমি করতে শুরু করছে তখন বুঝতে হবে তার দুধ তাদের পেটে ঠিকভাবে হজম হচ্ছে না এজন্য ওই সময় তাদেরকে কখনো জোরাজোরি করে দুধ খাওয়াবেন না। প্রতিদিন চেষ্টা করবেন তাদের পেট সামান্য পরিমাণে মালিশ করার

এবং তাদেরকে শোয়ায় রেখে খেলা করতে দেওয়ার এতে করে তাদের ক্ষুধা লাগবে। নবজাতক বাচ্চাদের যদি দীর্ঘ সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা কারণ অনেক সময় মায়ের দুধ বাচ্চাদের পেটে সমস্যা তৈরি করে এবং এখান থেকে গ্যাসও হয়। এজন্য ডাক্তার সেই বিষয়ে ভালো করে বুঝে

যদি প্যাকেটের দুধ লিখে দেয় সেক্ষেত্রে তাদেরকে সেই দুধ খাওয়ানো উত্তম হবে। দু একদিন কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হলে চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই। তাদেরকে ভালো ভাবে দুধ খাওয়াবেন এবং পেট মালিশ করবেন তারপরেও যদি সমস্যার সমাধান না হয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের নিকটবর্তী হবেন এবং ডাক্তার যে পরামর্শ দেয় সে পরামর্শ মোতাবেক বাচ্চাকে খাওয়াবেন।

দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি আপনার বাচ্চা সুস্থ হয়ে উঠবে। আপনার বাচ্চার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

দুধ খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়

দুধ এমন একটি পানীয় জিনিস যা পেট পরিষ্কার রাখতে অত্যন্ত উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন রাত্রে গরম দুধ পান করেন তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। যদি আপনার পক্ষে সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে দুধের সাথে আপনি মধু মিশিয়ে নিলে আরো ভালো ফলাফল পাবেন।

আরো একটি পদ্ধতি রয়েছে তা হচ্ছে দুধ খাওয়ার পর কিছুক্ষণ পূর্বে দুধের মধ্যে ৫ থেকে ৬ টি কিসমিস ভিজিয়ে রাখবেন এবং সে কিসমিস সহকারে খেয়ে নেবেন এতে করে আপনার পেটের জন্য আরও বেশি উপকারী হবে। দুধ-পেটকে খুব সহজেই পরিষ্কার করতে পারে। রসুন এবং দুধ একসাথে গরম করে খেলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

আপনি এই তিন পদ্ধতির যেকোনো এক পদ্ধতিতে খেলে অথবা শুধু দুধ খেলেও আপনি উপকৃত হতে পারবেন। অনেকে আছে যারা দুধের গন্ধ সহ্য করতে পারে না তারা পায়েস বানিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে অথবা দধি হিসেবেও খেতে পারেন। আপনার যেভাবে সম্ভব হবে আপনি সেভাবে খাবেন তাহলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন।


অনেকে ধারণা করে দুধ কষ্ট কাঠিন্য সমস্যা বৃদ্ধি করে দেয় এটি একটি সম্পূর্ণ মানুষের ভুল ধারণা। দুধ কখনই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাকে বৃদ্ধি করে না বরং দুধ কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যাকে একেবারে দূর করে পেটকে পরিষ্কার করে দেয়।

চিড়া খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়

আপনার আশেপাশে এমন অনেক ব্যক্তিকে পাবেন যারা প্রতিদিন সকালে চিড়া খায় এটা। তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। এছাড়াও বিশেষ করে আমের মৌসুমে আম এবং চিরা এ খাবারটি সকলের কাছে কম বেশি প্রিয়। অনেক সময় দেখা যায় চিড়া পেটে ঠিকভাবে হজম হয় না এর পিছনে কারণ হচ্ছে চিড়া একটি শক্ত খাবার।

পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাবার কারণেও তা পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্ত থাকে যার কারণে ঠিকভাবে হজম হয় না অথবা এখান থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চিড়া পাতলা পায়খানার সমস্যা দূর করতে অনেক উপকারী। আপনি যদি পাতলা পায়খানা সময় চিরা খান সেক্ষেত্রে আপনার এ সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হবে কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় আপনার ভুলেও চিড়া খাবেন না।

যাদের পেটে চিড়া একেবারে সহ্য হয় না তারা চিড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকুন আর যাদের পেটে তা খুব ভালোভাবে সহ্য হয় তারা অতিরিক্ত খাবেন না। অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে আপনারও পেটে সমস্যা হতে পারে। সব সময় খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো খাবেন। যে কোন খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে খাওয়া উচিত।

আপনি যদি দুধ এবং চিড়া একসাথেও খান সেক্ষেত্রেও কোষ্ঠকাঠিন্যর সম্ভাবনা থাকতে পারে এজন্য আপনার উচিত হবে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা চিনা থেকে একেবারে দূরে থাকবে এবং যারা চিরা খান তারা অল্প পরিমানে চিরা খাবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি খাওয়া উচিত নয়

এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের পেটের জন্য কোনোভাবেই উপকারী নয়। এ খাবার গুলো পেটে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতি করে। বিশেষ করে হজম শক্তির এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য এ খাবারগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী। খাবার রান্না করার ক্ষেত্রে কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে তেল মশলা দিয়ে রান্না করবেন না।

অতিরিক্ত পরিমাণে তেল মশলা দিয়ে খাবার রান্না করলে খেতে সুস্বাদু হলেও তা আমাদের পেটের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। বাইরের খাবার একেবারে এড়িয়ে চলবেন ফাস্টফুড জাতীয় যে খাবারগুলো রয়েছে তা কখনো হাত দিয়ে ধরবেন না। এছাড়াও গ্রিল নেহারি আরও যেরকমের খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো থেকেও একেবারে এড়িয়ে চলবেন।

চা কফি এগুলো খাবেন না। মাংস খাওয়ার পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দিবেন। মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে এমন মাংস খাবেন যে মাংসগুলোতে চর্বির পরিমাণ কম। বেকারি যে পণ্যগুলো রয়েছে সে পণ্যগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। পাকা কলা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীর জন্য উপকারী কিন্তু কাঁচা কলা ঠিক ততটাই অপকারী এজন্য কাঁচা কলা এড়িয়ে চলতে হবে।

ভাজাপোড়া জাতীয় যে খাবারগুলো রয়েছে পরি সিঙ্গারা সমচার মোগলাই এগুলো কখনোই মুখে দিবেন না। কোন রকমের নেশা জাতীয় কিছু খাওয়া যাবে না। মদ গাঁজা এরকম যত রকমের নেশা রয়েছে এগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। ধূমপানকে না বলতে হবে। আপনি এই খাবারগুলো এড়িয়ে চললে আপনার পেট এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

এ খাবারগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরকে অনেক বেশি দুর্বল করে দেয় এজন্য এই খাবারগুলো এড়িয়ে চললে আপনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হতে পারবেন এবং পেটের সমস্যাও দূর করতে পারবেন। শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য থাকাকালীন নয় যেকোনো সময় এগুলো খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই চেষ্টা করবেন এ খাবারগুলো যত কম পারা যায় খাবার।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায় - কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার প্রাকৃতিক উপায়

এমন কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো মেনে চললে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়ে যাবে। সে উপায় গুলো অবশ্যই নিয়ম মত মেনে চলতে হবে এবং উপায় গুলো অতি সহজ। খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত মসলা তরকারিতে ব্যবহার করা যাবে না। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।

চা কফি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। খাবার তালিকায় সবজির পরিমাণ বেশি করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। নিয়ম মত প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খেতে হবে। এমন মাংস খেতে হবে যেগুলোতে চর্বি কম। লাল শাক পালং শাক কলমি শাক এগুলো বেশি খেতে হবে। লাউ পেটের জন্য অনেক উপকারী নিয়মিত লাউ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

যেসব ফল এবং সবজি খোসা ছাড়ানো ছাড়াই খাওয়া সম্ভব সেগুলো খোসা ছাড়াই খাবেন। লাল চাউল এবং রুটি খাওয়ার ক্ষেত্রে লাল আটা রুটি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। নিজের পেটের উপর কখনোই অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। লেবু পানি অথবা আদা পানি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাবেন। ইসুবগুলের ভূষি কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।


নিয়মিত দুইবার ইসুবগুলের ভুষি খাবেন। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করবেন অথবা ব্যায়াম করবেন। যদি গোসল করার ক্ষেত্রে সাঁতার কাটার সুযোগ থাকে তাহলে সাঁতার কাটবেন। আপনি উপায়গুলো অনুসরণ করলে আপনার কষ্ট কাটানোর সমস্যা ভালো হয়ে যাবে আপনি যদি নিমপাতার রস খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে নিম পাতার রসও খাবেন।

এটাও আপনার শরীরকে ভালো রাখবে এবং পেতে যাবতীয় সমস্যা দূর করে দেবে।

শেষ কথা

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এটা কম বেশি সবারই হয় এজন্য বেশি চিন্তিত না হয়ে উপায় গুলো অনুসরণ করলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ভালো হয়ে যাবে আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও নিজের বাচ্চাদের এবং গর্ভবতী মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি করণীয় সেগুলো জানতে পারে

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url