চিরতরে এলার্জি দূর করার উপায় - এলার্জি হলে রক্ত দেয়া যাবে কি

প্রিয় পাঠক, আপনি কি এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন এলার্জি দূর করার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোস্টে এলার্জি দূর করার উপায় এবং রক্তে এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বলবো। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন, আশা করি আপনি এলার্জি সম্পর্কে সবকিছু জেনে যাবেন।
এলার্জি দূর করার উপায়
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের ভিতরে পাবেন চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়, ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় এবং এলার্জি হলে রক্ত দেয়া যাবে কি এই সকল সমাধান আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে এই পোস্টটি পড়ে নেয়া যাক।

ভূমিকা

এলার্জি এমন একটি সমস্যা যেটা আমাদের কম বেশি সবারই হয়ে থাকে। এলার্জি বিভিন্ন রকমের হয় কারো ঠান্ডা এলার্জি, কারো ধুলাই এলার্জি, এরকম আরো বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম,কারো কারো খাবারের এলার্জি রয়েছে। এলার্জি ছোট বয়স থেকে শুরু হয়,বড় হবার পরেও হতে পারে। এর্লাজি এমন একটি বিষয় আপনার হওয়ার সাথে সাথে আপনাকে সম্পূর্ণভাবে বিরক্ত মধ্যে ফেলে দেবে।আপনি কোন কিছুতেই শান্তি পাবেন না এরকম একটা ব্যাপার।


এলার্জি থেকে বাঁচার জন্য আমরা অনেক সময় অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকি বা অনেক রকমের ওষুধ খেয়ে থাকি ।এলার্জি হলে এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করার কিছু নাই আপনি নিয়ম মেনে চলুন এবং ওষুধ খান আপনার এলার্জি ভালো হয়ে যাবে।

এলার্জি দূর করার উপায়

আমরা এলার্জি দূর করার জন্য অনেক রকমের উপায় গ্রহণ করে থাকি। প্রথমে জানা উচিত এলার্জি কেন হয়।এলার্জি হওয়ার প্রধান কিছু কারণ রয়েছে 
  • নির্দিষ্ট রকমের কিছু খাবার
  • ধুলাবালি আবহাওয়া সহ্য করতে না পারা
  • অন্য রকমের ওষুধ সেবন করা 
  • মানসিক চাপ
মূলত এসব কারণেই আমাদের এলার্জি হয়ে থাকে। তাহলে এবার এনার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
  • এলার্জির জন্য আমরা দুই রকমের চিকিৎসা নিয়ে থাকতে পারে প্রথমত আমাদের উচিত এলার্জি হবে এরকম কোন খাবার বা কাজ না করা যাতে করে আমাদের শরীরে এলার্জি না হতে পারে আর দ্বিতীয়ত অ্যালার্জি হলে সে মোতাবেক চিকিৎসা নেওয়া।
  • আপনার যে খাবারগুলোতে এলার্জি হয় একেক জন আর একেক রকম খাবার এলার্জি হয়ে থাকে এজন্য আপনার যে খাবারগুলোতে এলার্জি হয় সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
  • ডাস্ট মাইন্ড থেকে বেঁচে থাকা।ডাচ মাইন্ড হচ্ছে ছোট ছোট পোকা যেগুলো আমাদের ঝরে যাওয়া চামড়া খেয়ে থাকে। এজন্য আমাদের ঝরে যাওয়া চামড়া পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেই জায়গাটুকু পরিষ্কার করে নেওয়া।
  • চর্ম ও ছত্রাক হতে দেবেন না। শরীরের ছত্রাক হতে না দেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা ,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় চোপড় পড়া , আপনি যেখানটায় বসবাস করবেন সেখানে পরিষ্কার রাখা এবং নিজের শরীর সবসময় পরিষ্কার রাখা।
  • গরম এবং ঘাম এই দুই জিনিস থেকে বেঁচে থাকবেন। আপনি ঘেমে যাওয়ার কারণে আপনার সেখান থেকে চুলকানি এবং এলার্জি হতে পারে । গরম লাগার কারণেই আমরা সাধারণত ঘেমে থাকি।এজন্য গরম এবং ঘাম থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে । ঘাম হওয়ার সাথে সাথেই আমাদের মুছে ফেলতে হবে।
  • যাদের ঠান্ডায় এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা ঠান্ডা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেন কারণ ঠান্ডা লাগার কারণে আপনাদের এলার্জি শুরু হয়ে যেতে পারে এজন্য ঠান্ডার সময় সতর্ক থাকা উচিত।
  • ধুলাবালি এবং পশু পাখির লোম থেকে বেঁচে থাকবেন এগুলোর কারণে এলার্জি হয়ে থাকে।

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি সাধারণত চামড়ায় হয়ে থাকে আবার কারো কারো রক্তে হয়ে থাকে।আমরা উপরে এ কিভাবে এলার্জি দূর করতে হয় সম্পর্কে যা যা জানলাম এসব চামড়াই যে সবে এলার্জি থাকে সেসব দূর করার নিয়ম এবং এবার আমরা রক্তের মধ্যে এলার্জি থাকলে কিভাবে দূর করবেন সেই সম্পর্কে জানব।
  • কাঁচা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আমরা অনেক রকমের কাঁচা খাবার খেয়ে থাকি যেগুলো আমাদের রক্তে এলার্জির জন্য সমস্যা হয়ে দেখা যায় এজন্য কাঁচা কাবা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • টক দই নিয়মিত টক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন টক দই রক্তের এলার্জি কমাতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে প্রতিদিন অল্প অল্প করে হলেও টক দই খাবেন। আপনি খুব সহজে রক্তে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পাবেন।
  • গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করুন। আপনার যদি রক্তে এলার্জি থেকে থাকে তাহলে আপনি লাল চা খাওয়ার বদলে গ্রিন টি খাওয়া শুরু করুন এতে করে আপনার রক্তে এলার্জি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন অর্থাৎ কাচা লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন যদি আপনার লবণ খাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে ভেজে লবণ খাবেন।
  • ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যেমন নুডুলস, বার্গার, চিকেন, স্যান্ডউইচ এরকম যত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার আছে এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলো আপনার রক্তে এলার্জি সমস্যা বৃদ্ধি করে দেয়। যেটা আপনার জন্য ক্ষতিকর তাই ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
রক্তে এলার্জির কিছু লক্ষণ রয়েছে আমি সেগুলো উল্লেখ করছি যাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয় আপনার রক্তে এলার্জি আছে নাকি নেই।
  • নাক দিয়ে পানি ঝরার পরিমাণ বেড়ে যাবে। আমাদের সাধারন তো লাগবে অল্প পানি পড়ে যখন আপনার রক্তে সমস্যা হবে এলার্জি হবে তখন আপনাকে পানি পড়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে।
  • তল পেটে ব্যথা করবে। আমাদের পেটে কোন সমস্যা হলে নরমাল জায়গায় ব্যাথা করে কিন্তু আপনার যদি রক্তে এলার্জি থাকে তাহলে আপনার তল পেটে ব্যথা করবে।
  • চোখ লাল হয়ে যাবে। তখন আপনার বুঝতে হবে আপনার রক্তে এলার্জি রয়েছে।
  • শরীরের বিভিন্ন অংশে চাকা চাকা গোল হয়ে যাওয়া। রক্তে এলার্জির কারণে সাধারণত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে চাকা চাকা হয়ে যায়।
  • মাঝে মধ্যে আপনার এলার্জির কারণে বমি হতে পারে। যদি আপনার এলার্জির কারণে বা শরীর চুলকানোর কারণে বমি হয় তাহলে আপনার রক্তে এলার্জি আছে বলে ধারণা করা যায়।
  • আপনার ঘ্রাণ শক্তি কমে যাবে। যখন আপনি কোন কিছুর ঘ্রাণ নিতে গিয়ে সমস্যা হবে তখন বুঝবেন আপনার রক্তে এলার্জি থাকতে পারে ।

এলার্জি হলে রক্ত দেয়া যাবে কি

আমরা অনেকেই মানুষের উপকারার্থে রক্তদান করে থাকি। অনেক সময় আমাদের এলার্জির কারণে আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি যে এলার্জি হলে রক্ত দেওয়া যাবে কি না । তাই চলুন এবার এলার্জি হলে রক্ত দেওয়া যাবে কি সে সম্পর্কে জেনে নেই।
  • সব সময় রয়েছে কিংবা যাদের রক্তে এলার্জি রয়েছে তারা রক্ত দিয়া থেকে বিরত থাকবেন। এতে করে আপনি যাকে রক্ত দেবেন তার জন্য সমস্যা হতে পারে।
  • যাদের নরমাল চামড়ায় এলার্জি রয়েছে বা মাঝে মধ্যে এলার্জি হয় যেমন বিশেষ কোনো খাবার খেলে বা ধুলাবালি বা ঠান্ডা লাগার জন্য জন্য তারা রক্ত দিতে পারেন এতে করে কোন রকম কোন সমস্যা হবে না।

চর্ম এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জির মধ্যে এক প্রকার হচ্ছে চর্ম এলার্জি আমাদের যাদের এলার্জি হয়ে থাকে তাদের অধিকাংশই চর্ম এলার্জি হয়ে থাকে তাই চলুন এবার চর্ম এলার্জি কিভাবে দূর করবেন সেই সম্পর্কে জেনে নেই
  • এলার্জি দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে নিম পাতা আপনি নিমপাতা বেটে শরীরের যেসব অঙ্গে এলার্জি রয়েছে সেসব অঙ্গে লাগান দেখবেন আপনি খুব দ্রুত ফল পাবেন।
  • বেশি চুলকানো যাবে নাআপনার যেই অঙ্গে চর্ম এলার্জি রয়েছে সে অঙ্গে বেশি চুলকানো যাবে না
  • চেষ্টা করবেন খুব কম সেখানে হাত দেয়ার।
  • কর্পূর এবং নারিকেল তেল একসাথে করে আপনার যে অঙ্গে যেখানে চর্ম এলার্জি রয়েছে সেখানে লাগাতে পারেন এতে করে আপনার চর্ম এলার্জি সমস্যা দূর হবে।
  • অ্যালোভেরা এমন একটি জিনিস যেটা সব ত্বকের রোগ এবং ত্বকের উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে কাজে দেয় আপনি এলোভেরার ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনার চর্ম এলার্জি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  •  শরীরে খোলা বাতাস যেমন প্রাকৃতিক বাতাস লাগানোর চেষ্টা করবেন।
  • পিওর এবং নিরাপদ পানি পান করার চেষ্টা করবেন দিনের মধ্যে কমপক্ষে তিন থেকে চারবার পানি পান করার চেষ্টা করবেন এতে করে পানি আপনার শরীরের সব অঙ্গকে তরতাজা রাখবে।
  • ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি আপনার অঙ্গে এলার্জির স্থানে ব্যবহার করুন এতে করে আপনার ত্বকে যে এলার্জি রয়েছে তাকে আমরা চরম এলার্জি বলে থাকে সেটা ভালো হয়ে যাবে।

ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায়

এক ধরনের এলার্জি রয়েছে যা শুধু ঠান্ডা লাগার কারণে হয়ে থাকে এটাকে ঠান্ডা এলার্জি বলা হয়। বিশেষ করে শীতকালে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় এবং যেকোনো সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করার কারণে অথবা ধুলাবালির জন্য এই সমস্যা হয়ে থাকে।
  • ঠান্ডা এলার্জি  দূর করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে নিজের শরীরকে সবসময় গরম রাখা এবং ঠান্ডা থেকে বেঁচে থাকা।
  • যদি আপনার শেষ রাতে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে তাহলে আপনি শেষ রাতে ফ্যান বন্ধ করে দেবেন বা মোটা কাপড় পড়ে নেবেন।
  • এমন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যেমন ঠান্ডা পানীয় বা এই জাতীয় যেসব খাবার আছে সেগুলো খাবার খাওয়া থেকে।
  • ঠান্ডা পরিবেশে যেমন এসির মধ্যে কম থাকার চেষ্টা করা। এই যাবতীয় ঠান্ডার যে বিষয়গুলো রয়েছে সেসব থেকে আপনি একটু খেয়াল করে বেঁচে থাকলেই ঠান্ডা এলার্জি থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।

শেষ কথা

এলার্জি খুব বিরক্ত করো কিন্তু এটা মারাত্মক কোন রোগ না এটা সাধারণত ১০ বছরের পর থেকে হয়ে থাকে। ছোট বাচ্চাদের দুধ কিংবা ডিম থেকে এলার্জি হতে পারে এজন্য ছোট বাচ্চাদের দুধ ডিম খাওয়ানো থেকে একটু সতর্ক থাকবেন। এলার্জি দূর করার নিয়ম কানুন মেনে চলুন এবং ওষুধ খান

এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলে আপনার বন্ধু মহল এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে শেয়ার করবেন যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url