ইস্ট ব্যবহারের নিয়ম- ইস্ট খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক

প্রিয় পাঠক আপনি কি ইস্ট দিয়ে কি কি বানানো যায় সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ইস্ট দিয়ে কি কি বানানো যায়,ইস্ট ব্যবহারের নিয়ম এবং ইস্ট এর কাজ কি ও ইস্ট এর পরিবর্তে কি কি ব্যবহার করা যায় সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে ইস্ট সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
ইস্ট খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন ইস্ট খেলে কি হয়, ইস্ট তৈরির পদ্ধতি,ইস্ট পাউডারের দাম এবং ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক ও ইস্ট এর উপকারিতা,ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে ইস্ট ব্যবহার হয় যেমন পাউরুটি বানানো,রুটি বানানো এছাড়াও আরও অনেক কাজে। রুটি বা পা রুটি বানানোর ক্ষেত্রে ইস্ট এর বিপরীত কোন কিছু হতে পারে না। ইস্ট আমাদের প্রত্যেকের ঘরেই কম বেশি রয়েছে। ইস্ট যেকোনো সুপার শপে ইস্ট পাওয়া যায় কিন্তু অনেকেই আছে যারা এর উপকারিতা এবং ব্যবহার পদ্ধতি জানে না।

ইস্ট ব্যবহারের নিয়ম

রুটি বানানোর ময়দা তে ইস্ট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবহার করতে হবে তাছাড়া রুটি নরম হওয়ার পরিবর্তে নষ্ট হয়ে যাবে। ইস্ট মূলত একটি উপকারী ছত্রাক। পৃথিবীতে অনেক রকমের ছত্রাক রয়েছে তার মধ্যে কয়েক ধরনের ছত্রাক উপকারী সেই কয়েক ধরনের মধ্যে একটি হচ্ছে ইস্ট।

কোন কিছুতেই ইস্ট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রথমে লবণ ব্যবহার করবেন না। লবণ ব্যবহার করলে ইস্ট নষ্ট হয়ে যায়। ছোট একটি পাত্রে সামান্য পানি নিয়ে সেখানে কিছু পরিমাণ ইস্ট দিবেন এরপরে কিছু সময় অপেক্ষা করলে দেখবেন ইস্ট ফুলতে শুরু করেছে তারপরে ময়দার খামির বানানোর জন্য ব্যবহার করবেন।


যদি দেখেন অনেক সময় হয়ে যাচ্ছে তারপরও ফুলছে না বা ফেনা হচ্ছে না তাহলে আপনার বুঝতে হবে এগুলো মরা ইস্ট। এই ইস্ট কোন কাজে আসবে না। এরকম ইস্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। কখনোই অতিরিক্ত ইস্ট দিবেন না তাহলে রুটি বা বেকারির কোন কিছু তৈরি করার ক্ষেত্রে স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।

রুটি বানানো অথবা বেকারির কোন কিছু বানানোর ছাড়াও আরো অনেক কাজে ইস্ট ব্যবহার হয় সেসব ক্ষেত্রে ব্যবহারের যেই নিয়ম রয়েছে সেই নিয়ম পাতে অর্থাৎ যে পরিমাণ পানি বা যেই পরিমাণ খাবারে যতটুকু ইস্ট ব্যবহারের প্রয়োজন ততটুকুই ব্যবহার করবেন। অনেক রকমের ইস্ট পাবেন যেগুলো মরা সেগুলো ব্যবহার না করাই ভালো।

মরা ইস্ট ব্যবহার করলে আপনার রুটি বা বেকারির যেকোন খাদ্য ফুলবে না এবং নরমও হবে না। সুতরাং ইস্ট ব্যবহার করার আগে আপনার উচিত হবে পানিতে কিছু সময় রেখে পরীক্ষা করে নেওয়া তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন এই ইস্ট জীবিত নাকি মৃত। অনেক রকমের ইস্ট রয়েছে যেগুলো খাবারে ব্যবহার করলে ইস্টের গন্ধ বের হয়

এজন্য এই গন্ধ দূর করতে আপনি ইস্টের সাথে গুঁড়ো দুধ অথবা ভ্যানিলা এসেস যুক্ত করবেন তাহলে আর এই দুর্গন্ধ বের হওয়া সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।

ইস্ট দিয়ে কি কি বানানো যায়

বিভিন্ন রকমের খাবারকে সুস্বাদু করতে এবং ওষুধ বানাতে ইস্ট ব্যবহার হয়ে থাকে। ইস্টের কাজ হচ্ছে পাউরুটি বা বেকারির যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলোকে নরম তুলতুলে করার পাশাপাশি সুস্বাদু করা। বিশেষ করে পাউরুটি পিজ্জা বেকারির যেগুলো খাবার রয়েছে বিস্কিট কেক,রুটি ফুলানো এবং নরম করার জন্য।

পরোটা বানাতে জিলাপি বানাতে যেকোনো রকমের চপ যেমন ডিমের চপ আলুর চপ কিংবা গোশতের চপ এসবগুলোতে ইস্ট ব্যবহার করা হয়। ইস্ট ব্যবহার করার ফলে এগুলো খেতে অনেক সুস্বাদু হয় এবং অনেক বেশি ফুলে যার কারণে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। বর্তমানে নান রুটি খুব ফেমাস। নান রুটি বানানোর জন্য অবশ্যই ইস্ট প্রয়োজন।

ইস্ট ছাড়া নান রুটি কোন ভাবে নরম হবে না এবং ফুলবে না। খাবার উপকরণ বানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের ওষুধ বানানোর ক্ষেত্রেও ইস্ট ব্যবহার করা হয়। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট প্রস্তুত করার জন্য ইস্টের প্রয়োজন হয়। ইস্ট দিয়ে শুধু খাবার তৈরি বা ওষুধ বানানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই উপজাতিরা ইস্ট দিয়ে চোলাই মদ তৈরি করে।

বাসা বাড়িতে প্রতিনিয়ত খাবার তৈরি করতে ইস্টের প্রয়োজন হয়। রেস্টুরেন্ট বা যেকোন হোটেলের প্রতিটি খাবারে ইস্ট ব্যবহার করা হয়। এছাড়া তারা যেসব খাবার তৈরি করে যেমন পুরী চপ পরোটা রুটি আরো যে খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো ইস্ট ছাড়া কোনোভাবেই তৈরি করতে সক্ষম হবে না। গ্রাম অঞ্চলে পিঠা বানানোর ক্ষেত্রেও ইস্ট ব্যবহার করা হয়।

পিঠাতে ইস্ট ব্যবহার করলে খেতে অনেক বেশি মুচমুচে ও সুস্বাদু হয়। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন ইস্ট আমাদের কি কি কাজে লাগে। এখন থেকে আপনি আপনার রুটি অথবা পিজ্জা সুস্বাদু করার জন্য বা পাউরুটি বানানোর ক্ষেত্রে ইস্ট ব্যবহার করবেন তাহলে খেতে অনেক বেশি মজাদার হবে।

ইস্ট এর কাজ কি

ইস্ট হচ্ছে এক ধরনের উপকারী ছত্রাক। ইস্ট খাবারের গ্লুকোজকে ভেঙে দেয়। বেকারি শিল্পে যত রকমের খাবার তৈরি করা হয় যেমন কেক পাউরুটি বিস্কিট এগুলোর প্রত্যেকটিতে ইস্ট ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া এগুলো বানানো কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। ইস্ট মূলত খাবারকে সুস্বাদু করার পাশাপাশি নরম ও ফুলিয়ে তুলে।

এছাড়াও বাসা বাড়িতে রুটি পরোটা বানানোর জন্য ইস্ট ব্যবহার হয়ে থাকে। রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে প্রতিটি খাবারে ইস্ট ব্যবহার করা হয়। ইস্টের বিকল্প তারা খাবার তৈরি করতে সক্ষম নয়। বিভিন্ন রকমের ওষুধ তৈরি করতেও ইস্ট ব্যবহার হয়। ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ট্যাবলেট তৈরি করতে ইস্টের গুরুত্ব অপরিসীম।


মোটকথা বলা যায় খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করা এবং খাবারকে নরম করায় ইস্ট এর কাজ। রুটি জাতীয় কোন কিছুতে ইস্ট ব্যবহার করার আগে অবশ্যই আপনাকে ইস্টকে একটিভ করে নিতে হবে তাছাড়া ইস্ট কোনোভাবে কাজ করবে না এবং ইস্ট এর সাথে কখনোই লবণ ব্যবহার করবেন না এতে করে মারা যায় এবং কাজ করে না।

ইস্ট এর পরিবর্তে কি ব্যবহার করা যায়

অনেক সময় বাড়িতে রুটি বা পিজা পাউরুটি বানানোর ক্ষেত্রে হাতের নাগালের মধ্যে ইস্ট পাওয়া যায় না এতে করে সেসব রুটি বা পাউরুটি নরমও হয় না এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু কম হয়। ইস্টের বিকল্প এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো ব্যবহার করলে ইস্ট এর মত কাজ করবে এবং আপনার খাবারকে সুস্বাদু করে তুলবে।

টক দই আমরা বিভিন্ন রকমের খাবারে ব্যবহার করে থাকি। অনেকেই জানে না যে ইস্ট এর পরিবর্তে টক দই ব্যবহার করলেও ইস্ট এর মতই উপকার পাওয়া যায়। ইস্ট যেমনভাবে খাবারকে নরম ও সুস্বাদু করে তেমন ভাবে টক দইও খাবারকে নরম ও সুস্বাদু করতে সক্ষম। ইস্টের পরিবর্তে বেকিং সোডা ও ব্যবহার করা যায়।

বেকিং সোডা ব্যবহার করলেও খাবার অনেক ফুলে এবং মুচমুচে হয়। এখন থেকে যদি আপনার বাসায় প্রয়োজনের সময় ইস্ট না পান সেক্ষেত্রে আপনি টক দই বা বেকিং সোডা ব্যবহার করবেন তাহলে আপনি ইস্ট এর মত উপকারিতা পাবেন আর কোন দুশ্চিন্তার কারণ হবে না।

ইস্ট খেলে কি হয়

ইস্ট খাবারের স্বাদকে বৃদ্ধি করে এবং আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। শরীরে ক্যান্সার তৈরি করে এমন একটি পদার্থের নাম হচ্ছে ফ্রী রেডিক্যাল। এই পদার্থ আমাদের শরীরের মধ্যে বসবাস করে যার কারণে শরীরে ক্যান্সার তৈরি হয়। ইস্ট খাওয়ার ফলে এই পদার্থের সাথে ছত্রাক লড়াই করতে সক্ষম যার কারণে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়

এবং ক্যান্সার সংক্রান্ত যেগুলো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতেও শক্তিশালী। অনেক ক্ষেত্রে ইস্ট খাওয়ার কারণে শরীরে এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে বা অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে। যাদের অ্যালার্জির সম্ভাবনা বেশি থাকে বা আগে থেকে শরীরে এলার্জি রয়েছে তারা ইস্ট খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

আপনি খাবারে ইস্ট ব্যবহার করলে আপনার খাবার অনেক বেশি মুচমুচে নরম এবং সুস্বাদু হবে যার কারণে আপনার খাবারের রুচি অনেকটাই বৃদ্ধি হবে। শরীরের ভিতরে সেরকমের কোন ক্ষতি করে না বরং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উপকার করে। ইস্ট সবসময় স্বাভাবিক মাত্রায় খাবারে ব্যবহার করবেন।

অতিরিক্ত ব্যবহার করার কারণে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হবে এবং খাবারের স্বাদও নষ্ট হয়ে যাবে। ইস্ট কখনো শুধু শুধু খাবেন না। খাবার তৈরি করার সময় ময়দায় ইস্ট ব্যবহার করে খাবেন তাহলে আমাদের জন্য উপকার হবে। এটি হচ্ছে ইস্ট খাওয়ার পদ্ধতি। খালি পেটে শুধু ইস্ট খাওয়ার ফলে পাকস্থলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ইস্ট তৈরির পদ্ধতি

বাজার থেকে ইস্ট কিনে আনার পরে বাসায় এসে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তা মরা ইস্ট এবং খাবারে ব্যবহার করলে কোন রকমের ফলাফল পাওয়া যায় না বরং খাবারের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় এবং খাবার থেকেও দুর্গন্ধ বের হয়। এজন্য এখন এমন একটি পদ্ধতি বলব যে পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি বাসা থেকে নিয়ে নিতে পারবেন

এবং দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করে খাবারে ব্যবহার করার মাধ্যমে খাবার খেয়ে সুস্বাদু করে তুলতে পারবেন। ইস্টের জন্য প্রথমে আপনাকে একটি বাটিতে গরম পানি নিতে হবে। এরপর সেখানে কিছু পরিমাণ চিনি দিবেন এবং চিনি নাড়াচাড়া করতে থাকবেন। সেই সময় পর্যন্ত নাড়াচাড়া করবেন যাতে করে চিনির কোন দানা পানিতে অবশিষ্ট না থাকে।

সব দানা গুলো একেবারে পানির সাথে ভালোভাবে মিশে যায়। চিনি ভালোভাবে পানির সাথে মিক্স হয়ে গেলে এরপর সেখানে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ আটা অথবা ময়দা দিবেন। এরপর ভালোভাবে নাড়াচাড়া করবেন যখন তা পানির সাথে মিশে যাবে এরপর আবারও দুই টেবিল চামচ ময়দা বাটা সেসবের সাথে মিক্স করবেন।

আপনি চাইলে এই আটার সাথে সাথে কিছু মধু মিক্স করে নিতে পারেন তাহলে আপনার ইস্ট আরো দ্রুত সময়ে তৈরি হবে। এরপর সেগুলো একসাথে নাড়াচাড়া করতে করতে একেবারে সুন্দরভাবে সবকিছু মিশিয়ে নিবেন যাতে করে কোন দানা ভাব না থাকে। এরপর গরম চুলার পাশে অথবা সেই বাটির ওপরে একটি প্লেট দিয়ে তোয়ালের সাহায্যে


১২ থেকে ১৩ ঘন্টা ঢেকে রাখবেন যাতে করে ভিতর থেকে কোনভাবে গরম ভাব বের হতে না পারে। বাসায় যদি ওভেন থাকে তাহলে আপনি বন্ধ ওভেনের মধ্যেও রেখে দিতে পারেন। এরপরে খুললেই দেখবেন আপনার ইস্ট তৈরি হয়ে গেছে। যখন ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা রেখে দিবেন সেই সময় কখনোই সেই বাটি থেকে থালা সরাবেন না এতে করে আপনার ইস্ট নষ্ট হয়ে যাবে

এবং সঠিক পদ্ধতিতে তৈরি ও হবে না। এরপর আপনি চাইলে এভাবেই বাটিতে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। এভাবে তৈরি করলে ৭ থেকে ১০ দিন ভালো থাকে। আপনি চাইলে তা রোদে শুকিয়ে গুড়ো করেও ব্যবহার করতে পারবেন।

ইস্ট পাউডার এর দাম

ইস্ট বিভিন্ন কোম্পানির হয়। একে কোম্পানির একেক রকমের দাম হয়ে থাকে। এছাড়াও আপনি অনলাইনেও অর্থাৎ দারাজেও ইস্ট কিনতে পাবেন।
  • Angle instant dry yeast এই ইস্টের ৫০০ গ্রামের দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হয়।
  • Saf instant dry yeast এই ইস্টের ১০০ গ্রামের দাম ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা হয়।
  • Active dry yeast এই ইস্টের ১২৫ গ্রামের দাম ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা হয়।
এছাড়াও আপনি দারাজে বিভিন্ন রকমের ইস্ট পাবেন সেগুলোর একেক রকমের দাম এক এক ধরনের। কোনটির দাম ৩৪০ টাকা আবার কোনটির দাম ৩৫০,কোনটির দাম ৩২০,৩৮০ এভাবে প্রত্যেকটি দামের রয়েছে। এছাড়াও আপনি ১২০ টাকা ১১০ টাকা থেকে ইস্ট পেয়ে যাবেন। এগুলো মূলত ওজনের উপরে দাম নির্ধারণ করা হয়।

সচরাচর ইস্ট এর দাম এরকমই হয়ে থাকে। আপনি যেকোন সুপারশপ অথবা মুদিখানার দোকানেও ইস্ট পাবেন সেগুলো ২৫ গ্রাম অথবা ৫০ গ্রামের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা নিয়ে থাকে।

ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক

ইস্ট যেমনভাবে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে তেমনভাবে ইস্টের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যখন স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত মাত্রায় ইস্ট খাবেন তখন পাকস্থলির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে তারা খাবারে ইস্ট ব্যবহার করলে এলার্জি বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

এছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় ইস্ট খাওয়ার কারণে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত মাত্রায় ইস্ট খেলে পেট ব্যথা,গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এবং হজম শক্তির সমস্যাও দেখা দেয়। অনেক সময় খাবারে অতিরিক্ত ইস্টের কারণে পেট ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যাদের ত্বক অনেক বেশি সেনসিটিভ তারা ইস্ট খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন

এছাড়া ত্বকের উপরে বিভিন্ন রকমের ফুসকুড়ি লাল লাল ভাব বা চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে। কোন খাবারে খাওয়া অতিরিক্ত উচিত নয় তেমনভাবে ইস্ট যখন অতিরিক্ত মাত্রায় খেতে থাকবেন তখন আপনার শরীরের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর হবে। এছাড়াও খাবারে অতিরিক্ত ইস্ট মিশালে সেই খাবার আমাদের রক্তে সমস্যা তৈরি করে।

গর্ভবতী অবস্থায় বা সন্তানকে দুধ পান করানোর সময় ইস্ট খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। এছাড়া আপনার শরীরের জন্য এবং বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হবে। ইস্ট খাওয়ার পরে যদি বারবার আপনার শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় অথবা প্রতি বার এলার্জি সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।

এছাড়া যাদের অ্যালার্জি সমস্যা রয়েছে বা শরীরে বিনা কারণে চুলকানি ফুসকুড়ির মত সমস্যা দেখা দেয় তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন অন্যথায় আপনার শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেবে।

ইস্ট এর উপকারিতা

ইস্টের উপকারিতা অনেক। খাবারে ব্যবহার করলে খাবার অনেক সুস্বাদু হয় এবং খাবার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক নরম হয় যার কারণে খেয়েও আরাম পাওয়া যায়। রেস্টুরেন্ট এবং প্রত্যেকটি হোটেলে খাবারের সাথে ইস্ট মিশানো হয় এতে করে খাবার অনেকটাই উন্নত মানের হয়। বেকারির কোন কিছু খাবার তৈরি করতে অথবা বাসায় পাউরুটি, রুটি পিজ্জা তৈরি করতে ইস্টের গুরুত্ব অপরিসীম।

ইস্ট আমাদের শরীরের ক্যান্সার তৈরি করে এমন পদার্থের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সাহায্য করে যার কারণে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। ইস্টে ফাইবার থাকে যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক কার্যকারী। এছাড়াও ইস্টখাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এবং পেটের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দূর হয়ে যায়।

ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ট্যাবলেট তৈরি করতে অনেক ইস্টের ব্যবহার হয়। ইস্ট আমাদের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করে । ইস্টে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। ইস্ট একটি উপকারী ছত্রাক। ইস্ট খাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন রকমের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে

এবং বিভিন্ন রকমের জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে আমাদের শরীরকে নিরাপদ রাখে। রূপচর্চা করতেও আপনি ইস্ট ব্যবহার করতে পারবেন। ইস্ট দিয়ে রূপচর্চা করলে তখন অনেকটাই পরিষ্কার হয় এবং উজ্জ্বল দেখায়। গরুর খাবারের সাথে ইস্ট ব্যবহার করলে খাবারের রুচি অনেকটাই বেড়ে যায় এবং ওজনও খুব দ্রুত বৃদ্ধি হয়।

যাদের খাবারের রুচি কম অথবা মুখে স্বাদ নেই তারা খাবারে ইস্ট ব্যবহার করবেন তাহলে আপনার খাবারের রুচি ফিরে আসবে এবং খাবার খেতেও অনেক ভালো লাগবে। এসব উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই উচিত হবে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করার এবং অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার তাহলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন।

ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ইস্ট এমন একটি জিনিস যেখানে উপকারিতা এবং অপকারিতা উভয়টাই রয়েছে। ইস্ট যেমন ভাবে আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনভাবে ইস্ট আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারী। ইস্ট খাওয়ার ফলে পেটের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দূর হয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ইস্ট অনেক ভালো একটি সমাধান।

এছাড়াও খাবারে ব্যবহার ইস্ট ব্যবহার করলে হজম শক্তির জন্য অনেক ভালো কার্যকর হয়। ইস্ট শরীরে ক্যান্সার তৈরি করে এমন সব পদার্থের সাথে লড়াই করতে পারে যার কারণে শরীরে ক্যান্সার সম্ভাবনা অনেকটাই কম হয়। ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ট্যাবলেট তৈরি করতে ইস্ট ভূমিকা রাখে। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে এবং খাবারকে নরম সুস্বাদু করতেও ইস্ট এর ব্যবহার হয়।


রূপচর্চার কাজেও ইস্ট ব্যবহার করা যায়। বিপরীতে আপনি যখন অতিরিক্ত মাত্রায় ইস্ট খাবেন তখন আপনার পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এমন কি পেট ফুলে যাওয়া সম্ভাবনাও থাকে। যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য ইস্ট খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। ইস্ট অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। যাদের ত্বক অনেক বেশি সতর্কতামূলক তারা ইস্ট খাওয়ার ফলে ত্বকে বিভিন্ন রকমের চুলকানি বা ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গর্ভবতী অবস্থায় খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন আর খাইলেও ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে খাবেন। এই হচ্ছে ইস্ট এর উপকারিতা এবং অপকারিতা উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে তাহলে আপনি উপকারী থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।

শেষ কথা

ইস্ট কেনার আগে অবশ্যই দেখে ভালোভাবে কিনবেন কারণ অনেক দোকানে ইস্ট যেগুলো বিক্রি করে সেগুলো মরা ইস্ট। সেগুলোর দ্বারা ভালো কোন ফলাফল পাওয়া যায় না এবং ইস্ট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করবেন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও ইস্ট দিয়ে উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url