যেসব কারণে উইপোকা হয়- উইপোকা তাড়ানোর উপায়- উইপোকা মারার বিষের নাম

প্রিয় পাঠক আপনি কি উইপোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোস্টের মধ্যে উইপোকা তাড়ানোর উপায় - উইপোকা কেন হয় এবং উইপোকা দমনে কীটনাশক - উইপোকা দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে উইপোকা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
উইপোকা দূর করার উপায়
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন উইপোকা মারার বিষের নাম - উইপোকা মারার ওষুধ এবং উইপোকার উপকারিতা - উইপোকা কি খায় ও উইপোকার ঢিবি - ঘর থেকে উইপোকা তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

উইপোকা ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট করে দেয় যার কারণে ঘরে কোন আসবাবপত্র রাখা বড়ই মুশকিল হয়ে যায়। বিশেষ করে কাগজপত্রে অথবা বই খাতায় বা কাঠের জিনিসে যদি উইপোকা লাগে তাহলে তা একেবারে সর্বনাশ করে দেয়। বই পত্র ও কাঠের জিনিসের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে উইপোকা। উইপোকা কোন বাসা বাড়িতে প্রবেশ করলে সেখান থেকে তা আস্তে আস্তে বংশবিস্তার শুরু করতে থাকে।


এটি এমন ধরনের পোকা যার সংখ্যা কমানো অতি কঠিন, তা ক্রমগত বাড়তে থাকে এবং ক্ষতি করে যায়।

উইপোকা তাড়ানোর উপায় - উইপোকা কেন হয়

উইপোকার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেকে অনেক রকমের পথ পন্থা অবলম্বন করে। সেগুলোর কোনটাই কাজ করে আবার কোনটাই কাজ করে না। এজন্য আমি এখন উইপোকা তাড়ানোর এমন কিছু পরীক্ষিত উপায় বলবো যেগুলো ব্যবহার করলে আপনি অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।
  • যেই স্থানে উইপোকার উপদ্রব দেখতে পাবেন সেখানে কালোজিরা রেখে দিন। কালোজিরা এমন সব পোকা দূর করতে সক্ষম যেগুলো বইয়ের পাতা কাঠ নষ্ট করে।
  • উইপোকা থাকতে পারে এমন সম্ভাবনা যেইসব স্থানে রয়েছে সেই জায়গায় ন্যাপথলিন গোল করে রেখে দিবেন। ন্যাপথলিনের ঘ্রাণের জন্য উইপোকা আসতে পারেনা।
  • আসবাবপত্র কখনো এক স্থানে বেশিদিন ফেলে রাখবেন না। মাঝে মাঝে সেগুলো নাড়াচাড়া করবেন এতে করে সেসব আসবাবপত্রে উইপোকা বাসা বাধতে সক্ষম হবে না।
  • নিম পাতা যেমনভাবে শরীরের জন্য উপকারি তেমনভাবে উইপোকা দূর করতেও নিমপাতা কার্যকারী। নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে সেই গুঁড়ো আলমারিতে বা আসবাবপত্র এমন স্থানে রেখে দিবেন। নিম পাতার গন্ধে উইপোকা সেখানে আসতে পারবে না।
  • ঘরের দেয়ালে যদি উইপোকার আক্রমণ হয় সেখানে কর্পুল গুঁড়ো করে গুঁজে রাখবেন এতে করে উইপোকা সেখান থেকে নিমিষেই পালিয়ে যাবে।
  • তিতা যেসব ফল রয়েছে সেগুলোর রস উইপোকা বাসা বাধতে পারে বা বাসা বেধেছে এমন স্থানে ছিটিয়ো রাখবেন। উইপোকা কখনোই তিতো রস সহ্য করতে পারে না।
  • লবনও উইপোকা তাড়াতে বেশ কার্যকারি। উইপোকা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে এমন স্থানে লবণ ছিটিয়ে রাখলেও আপনি ভাল ফলাফল পাবেন।
  • কাঠের যেসব আসবাবপত্র রয়েছে সেগুলোতে কেরাসিন ব্যবহার করুন। কেরোসিন ব্যবহার করলে উইপোকা সেখানে কোনোভাবেই প্রবেশ করতে পারে না।
  • রান্নাঘর এবং বাড়ির আঙিনা ও ঘরের কোণা সবসময় পরিষ্কার রাখবেন। স্যাতস্যাঁতে ভাবের কারণে সেখান থেকে উইপোকা বেশি জন্ম নেয়।
  • কোন স্থানে উইপোকা দেখলে সেই স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন যাতে সেখানে তারা দীর্ঘদিন বাসা বাঁধতে না পারে।
  • নিম অথবা করোরা রস বোতলে ভরে আলমারিতে এবং কাঠের আসবাবপত্রে স্প্রে করে রাখবেন এভাবেই স্প্রে করে রাখার ফলে উইপোকা আসে না।
  • যেসব আসবাবপত্রে উইপোকা লেগেছে সেগুলো রোদে দিবেন। রোদের আলোতে উইপোকা চলে যায়। উইপোকা জন্ম নেওয়ার এবং বাসা বাঁধার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হচ্ছে অন্ধকার এজন্য মাঝেমধ্যে আসবাবপত্র রোদে দিবেন।
  • উইপোকা দমনে আপনি বরিক এসিড ব্যবহার করতে পারবেন। বরিক এসিড ব্যবহার করলে উইপোকাদের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব পড়ে এবং তারা খুব শীঘ্রই মারা যায় এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
  • ভিনেগার এবং পানি একসাথে মিক্স করে উইপোকা বাসা বাঁধে এমন স্থানে স্প্রে করবেন। ভিনেগার উইপোকা দমনে কার্যকরী।
  • পানি ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্রের উপরে স্প্রে করে রাখবেন লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে যা উইপোকা ধ্বংস করে দেয়।
উপরে যেসব উপায়গুলো বলা হলো এগুলোর প্রত্যেকটি পরীক্ষিত এবং কার্যকারী উপায়। আপনি এই উপায়গুলো অবলম্বন করলে উইপোকার চিরতরে আপনার বাসা বাড়ি থেকে দূর করে ফেলতে পারবেন এবং আপনি উইপোকার যাবতীয় সমস্যা থেকে রেহাই পেয়ে যাবেন।

উইপোকা হওয়ার পিছনে কিছু কারণ থাকে সব সময় চেষ্টা করবেন এসব কারণগুলোকে এড়িয়ে চলার এতে করে আপনার ঘরে কখনোই উইপোকা হবে না। ঘরের কোথাও বা আশেপাশে পানি জমতে দিবেন না। পানি জমে থাকার কারণে সেই জায়গা স্যাতসেতে হয়ে থাকে যার কারণে সেখান থেকে উইপোকার উৎপত্তি হয়।

এমনকি কোন আসবাবপত্র দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে ফেলে রাখার কারণেও সেই সেখান থেকে উইপোকার জন্ম নিতে পারে। কোন আসবাবপত্র দীর্ঘদিন ধরে রোদে না দিয়ে রাখবেন না চেষ্টা করবেন মাঝেমধ্যে রোদে দেওয়ার। দীর্ঘ সময় রোদে না দেয়ার কারণে সেখানে উইপোকা জন্ম নেয়।  আসবাবপত্র বই খাতা চেষ্টা করবেন এগুলো মাসে বা সপ্তাহে নাড়াচাড়া করার।

দীর্ঘ সময় ধরে এগুলো ফেলে রাখার কারণে উইপোকা জন্ম নেয়। এসব কারণগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারলে আপনার ঘরে কখনোই উইপোকা বাসা বাধার সাহস পাবে না। শুধু উইপোকায় নয় বিভিন্ন রকমের পোকা মাকড় থেকে আপনার ঘরবাড়ি নিরাপদ থাকবে।

উইপোকা দমনে কীটনাশক - উইপোকা দূর করার উপায়

উইপোকা দমনের উপায়ের পাশাপাশি কীটনাশকও রয়েছে। আপনি এই কীটনাশক গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমেও ঘরবাড়ি থেকে উইপোকা দমন করতে পারবেন।
  • উইপোকা যদি গাছপালায় লাগে সেক্ষেত্রে আপনি একতারা 25 ডব্লিউজি এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। এই কীটনাশক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ২.৫ গ্রামের জন্য ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমির উপরে ভালোভাবে গাছগুলোতে স্প্রে করবেন তাহলে আপনার কাছ থেকে উইপোকা চলে যাবে।
  • উইপোকা দূর করার জন্য আরেকটি কীটনাশকের নাম হচ্ছে ডার্সবান। এই স্প্রে বিভিন্ন বীজের উইপোকা দূর করে।
  • Premise ঘর থেকে উইপোকা দূর করতে এই কীটনাশকটির ব্যবহার করতে পারবেন। এই কীটনাশকের বোতল ২৫০ মিলির হয়। এটি খুবই ভালো এবং এটি ব্যবহার করার কারণে কোন রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় না।
  • kangyu kill insect এটি একটি পাউডার জাতীয় কীটনাশক। এই কীটনাশকও উইপোকা চিরতরে দূর করে দিতে পারে।
  • Finis insect powder এই পাউডার ব্যবহার করার মাধ্যমেও আপনি উইপোকা নির্মূল করতে পারবেন। যেসব স্থানে উইপোকা বাসা বাঁধে সেগুলো স্থানে এ পাউডার ছিটিয়ে দিবেন দেখবেন উইপোকা চলে যাবে।
এইসব কীটনাশক ব্যবহার করলে আপনি আপনার বাসাবাড়ি থেকে এবং গাছ ও ফসল থেকে উইপোকা চিরতরে দূর করে ফেলতে পারবেন।

এসব কীটনাশক বাদেও আপনি যদি উইপোকা দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায় গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রেও বেশ কিছু উপায় রয়েছে। নিমপাতা গুড়ো করে ব্যবহার করার মাধ্যমে অথবা নিম পাতার রস স্প্রে করার মাধ্যমেও উইপোকা দূর হয়। তিতা জাতীয় ফল যেমন করলা আরো এরকম যে ফলগুলো আছে সেগুলোর রস স্প্রে করার মাধ্যমেও উইপোকা দূর হয়।


কর্পূল,ন্যাপথলিন এগুলো উইপোকা দূর করতে সক্ষম।কেরোসিন তেল, লবণ এগুলো ছিটিয়ে রাখার মাধ্যমে উইপোকাকে দূর করা যায়। আসবাবপত্র রোদে দেয়ার মাধ্যমে এবং দীর্ঘদিন এক স্থানে ফেলে না রেখে মাঝেমধ্যে সেগুলো নাড়াচড়া করার মাধ্যমেও উইপোকে দূর করা যায় এবং উইপোকা হওয়া থেকেও বিরত রাখা যায়।

আপনি এসব উপায় গুলো অবলম্বন করলেও উইপোকা দূর করতে পারবেন। কীটনাশক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে আর আপনি যদি এই উপায় গুলো মোতাবেক কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে সামান্য খেয়ালের সাথে কাজগুলো করলেই ভালো ফলাফল পাবেন।

উইপোকা মারার বিষের নাম - উইপোকা মারার ওষুধ

উইপোকা মারার যেসব কীটনাশক রয়েছে আপনি সেগুলো ব্যবহার করলেও বিষ ব্যবহার করার কাজ দিবে। এছাড়াও কিছু বিষ রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে উইপোকা দূর হয়
  • Highlight bifenthrin 10% এই বিষ ব্যবহার করলে উইপোকা খুব দ্রুতই মারা যায় এবং এই বিষ অনেক বেশি কার্যকরী।
  • Wood presertive কাঠের ফার্নিচারে উইপোকা লাগলে এই বিষ ব্যবহার করলে উইপোকা চিরতরে খুব দ্রুত দূর হয়ে যায়। এই বিষকে উইপোকার যম হিসেবে গণ্য করা হয়।
  • ক্লোরব্যান 20 ইসি এই বিষ ইদুর মারার পাশাপাশি বাগান থেকে উইপোকা ও মেরে ফেলতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
  • Dahao cockroach killer bait এই বিষ ব্যবহার করলে আপনার ঘর থেকে ছারপোকার পাশাপাশি তেলাপোকা ও উইপোকা দূর হয়ে যাবে। এই বিষের কার্যকরী ক্ষমতা বেশ কয়েকটি প্রকার পোকা দূর করতে পারে।
এইসব বিষ ব্যবহার করলে আপনি উইপোকা দূর করতে পারবেন। এছাড়া উপরে বেশ কয়েকটি কীটনাশক এর নাম বলা হয়েছে সেগুলো উইপোকা দূর করতে কার্যকরী।

উইপোকার উপকারিতা - উইপোকা কি খায়

উইপোকার তেমন কোন বিশেষ উপকারিতা নেই। উইপোকা বরাবরই ঘরের আসবাবপত্র,বই,খাতা,গাছ ফসলের ক্ষতি করে। উইপোকার উপকারিতা বলতে শুধু একটি রয়েছে তা হচ্ছে উইপোকা মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়। যেইসব মাটি শুষ্ক সেগুলোর মরুময়তা ঠেকাতে উইপোকা বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে।

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধ করতেও এই পোকা সক্ষম। গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী উইপোকার ঢিবি মাটির পুষ্টি সংরক্ষণ করে রাখে। উইপোকা জমিতে অসংখ্য ছিদ্র তৈরি করে আফ্রিকা ল্যাটিন আমেরিকা এবং এশিয়ার তৃণভূমি বক্ষহীন ভূমি যেগুলো প্রায় শুষ্ক এলাকায় সেগুলো ছিদ্র করে রাখার ফলে ভালোভাবে পানি চলাচল করতে পারে এবং মাটি আর্দ্র থাকে।

জমিতে পানি দেওয়া হলে উইপোকা জমির প্রতিটি স্থানে ভালোভাবে পানি পৌঁছাতেও সহায়তা করে। উইপোকা কেবলই শুষ্ক মাটির জন্য উপকারিতা বয়ে আনে। যদি আপনার আদ্র জমিতে উইপোকা দেখতে পান সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে উইপোকা তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে আর যদি শুষ্ক জমিতে থাকে সেক্ষেত্রে উইপোকা আপনার জমির জন্য বেশ উপকারী হবে।

এছাড়া উইপোকা ঘরের কোনরকমেরই উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে না বরং অপকারিতা বয়ে নিয়ে আনে। উইপোকা তার জীবন যাপনের জন্য মৃত উদ্ভিদের দেহ,কাঠ,পাতার বর্জ্য,মাটি,প্রানীর বর্জ্য এগুলো খেয়ে জীবন যাপন করে। উইপোকার সবচেয়ে পছন্দের খাবার হচ্ছে কাঠ,পাতা এবং মাটি ও বই খাতা তারা এগুলোতে বেশি বাসা বাঁধে এবং আস্তে আস্তে এগুলোকে বিন্যাস করে দেয়।

রানী উইপোকা প্রতিদিন ৩০০০০ পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে এবং রানী উইপোকা নিজে চলাচল করতে পারে না তাকে ছেড়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শত শত উইপোকার প্রয়োজন হয়।

উইপোকার ঢিবি - ঘর থেকে উইপোকা তাড়ানোর উপায়

উইপোকা অধিকাংশগুলায় মাঝারি আকারের হয় এবং লম্বায় চার থেকে পাঁচ মিমি হয়ে থাকে আর যে সব রানী উইপোকা রয়েছে সেগুলো ৭০ মিমি পর্যন্ত লম্বা হয়। পুরো পৃথিবীর উইপোকার প্রজাতি মিলিয়ে ১৯০০ প্রজাতির উইপোকা রয়েছে। অনেকে এক ধরনের উইপোকাকে পিঁপড়া বলে থাকে যা সম্পন্নই ভুল। উইপোকা আজ থেকে পৃথিবীতে ২০ কোটি বছর আগে এসেছে।

প্রজাতি হিসেবে উইপোকার ঢিবি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রত্যেক ধরনের উইপোকাকে রাজা এবং রানী মিলে লালন পালন করে। প্রত্যেক ধরনের উইপোকা বন্ধ্যা অন্ধ এবং ডানাহীন। উইপোকা বিভিন্নভাবে তাদের নিজেদের বাসা তৈরি করে। অনেকেই আছে যারা আদ্র মাটির নিচে আবার কেউ শুকনা মাটির উপরিভাগে নিজেদের বাসা তৈরি করে।

অনেক উইপোকার বাসা মাটির নিচে থাকে এবং তা যখন উপরে উঠে তখন বিভিন্ন আকৃতি নেই এই ধরনের ভাষাকেই উইপোকার ঢিবি বলা হয়। প্রত্যেক প্রজাতির ভাষা তৈরির কৌশল এবং বৈচিত্র ভিন্ন। পৃথিবীতে যুক্তরাজ্যের সমান অঞ্চল জুড়ে উইপোকার একটি বিশাল রাজ্য রয়েছে। ধারণা করা হয় এখানে ২০ কোটি ঢিবি রয়েছে।

বিজ্ঞানীরা এখান থেকে ১১ টি ঢিবি থেকে মাটির নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন এগুলোর মধ্যে কোনটি প্রায় ৩৮২০ বছর আগের এবং এগুলোর গড়ে আড়াই মিটার উঁচু ও ৯ মিটার চওড়া।

ঘর থেকে উইপোকা তাড়ানোর জন্য যেসব জায়গায় উইপোকা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতে কূর্পূল অথবা ন্যাপথলিন রেখে দিবেন। এগুলো রাখার কারণে উইপোকা আসতে পারে না। সব সময় বাসা বাড়ি এবং আঙ্গিনা পরিষ্কার করে রাখতে হবে কখনো কোথাও পানি জমতে দেয়া যাবে না। পানি জমার কারণে উইপোকা জন্ম নেয়।

নিমের পাতা গুঁড়ো করে অথবা নিমপাতা রস ব্যবহার করতে পারবেন। লবণ ছিটিয়ে রাখার মাধ্যমে বা কেরোসিন তেল স্প্রে করার মাধ্যমেও উইপোকা দূর হয। লেবু এবং পানি অথবা পানি এবং ভিনেগার একসাথে করে স্প্রে করলেও উইপোকা দূর হয়। লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড যা উইপোকাকে মেরে ফেলে।


করলার রস অথবা এই জাতীয় যেগুলো ফল রয়েছে সেগুলোর রস ছিটিয়ে রাখার মাধ্যমে অথবা স্প্রে করলেও উইপোকা দূর হয়। আমাদের রান্নাঘরে সবারই জিরা থাকে এই কালোজিরা আলমারিতে বা বই খাতার মধ্যে রেখে দিলে সেই জায়গায় উইপোকা আসতে পারে না। উইপোকা দূর করার জন্য আপনি এসব উপায় গ্রহণ করবেন।

উপরে আরও বেশ কিছু উপায় বলা হয়েছে সেগুলো উপায় গ্রহণ করলেও আপনি ওই পোকা দূর করে ফেলতে পারবেন।

উইপোকা সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর

১ প্রশ্ন উই পোকা কাঠ থেকে কি খায়?

উত্তর

কাঠ হচ্ছে উইপোকার প্রিয় কয়েকটি খাবারের মধ্যে একটি। উইপোকা প্রচুর পরিমাণে কাঠ খায় এবং যেই ফার্নিচারে উইপোকা লাগে সেই ফার্নিচার একেবারে শেষ করে দেয়।

২ প্রশ্ন কাঠ থেকে উইপোকা বের করার উপায়?

উত্তর

কাঠ থেকে উইপোকা বের করার জন্য আপনি নিমের রস স্প্রে করতে পারেন অথবা লেবুর রস বা পানি ও ভিনেগার এছাড়াও কিছু কীটনাশক রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করলেও তার থেকে উইপোকা বের হয়ে যায়।

৩ প্রশ্ন উইপোকা কি উড়ে?

উত্তর

উইপোকা কখনো উড়তে পারে না। উইপোকা তাদের শরীরের ওপর ভর করে চলাফেরা করে। তাদের কোন উড়ার শক্তি নেই।

৪ প্রশ্ন উইপোকার প্রভাব?

উত্তর

উইপোকাকে যদি শুরুতেই শেষ করা না হয় তাহলে তা আস্তে আস্তে দীর্ঘ একটি প্রভাব ফেলতে থাকে এবং যেই আসবাবপত্রে অথবা যেই জিনিসে উইপোকা লাগবে তা আস্তে আস্তে ধ্বংস করে দিবে এজন্য উইপোকা যে জিনিসপত্র লাগবে তার শুরুতেই ধ্বংস করে দিতে হবে যাতে করে তারা প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।

শেষ কথা

আসবাবপত্র সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য উইপোকায় যথেষ্ট। এছাড়াও আলমারিতে কাপড় কাটা এবং বইখাতাও নষ্ট করে দিতে পারে। তাই ঘরের কোথাও উইপোকা দেখা দিলে অবশ্য উইপোকা দূর করা যেসব উপায়গুলো রয়েছে সেগুলো অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তাহলে আপনার জামা কাপড় এবং আসবাবপত্র নিরাপদ থাকবে।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও তাদের বাসা বাড়ি থেকে উইপোকার উপদ্রব দূর করতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url