মেকআপ করার জিনিসের নাম ও ব্যবহার- ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আপনি কি মেকআপ করার জন্য কি কি লাগে তা জানতে চাচ্ছেন,তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে মেকআপ করার জন্য কি কি লাগে এবং নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে ও ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে খুব সহজেই আকর্ষণীয় মেকআপ করার পদ্ধতি জানতে পারবেন।
মেকআপ করার জন্য কি কি লাগে
এছাড়াও আপনি পোস্টের মধ্যে পাবেন ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম,পার্টি মেকআপ করার নিয়ম ও হালকা মেকআপ কিভাবে করে সেই সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

মেকআপ করার মাধ্যমে একজন মেয়ে তার চেহারা সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করে তুলে। মেয়েরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় মেকআপ করে থাকেন ঘুরতে গেলে,কোন অনুষ্ঠানে,কোন পার্টিতে আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে মেকআপ করতে হয়। মেকআপ করার ক্ষেত্রে অনেকে পারফেক্ট ভাবে মেকআপ করতে না পারার কারণে মেকাপের দ্বারা তার চেহারা সৌন্দর্য নষ্ট হতে থাকে।


নিজেকে সুন্দর ভাবে প্রদর্শন করার জন্য অবশ্যই পারফেক্ট ভাবে মেকআপ করতে জানতে হবে।

মেকআপ করার জন্য কি কি লাগে

সুন্দর করে মেকআপ করার জন্য কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। সেই জিনিসগুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে একটি সুন্দর লুক চলে আসে।
  • ফেস সিরাম
  • প্রাইমার
  • ময়েশ্চারাইজার
  • কন্সিলার
  • টোনার
  • লেন্স
  • ফাউন্ডেশন
  • কাজল
  • ফেক ল্যাশ
  • লিপস্টিক
  • হাইলাইটার
  • কমপ্যাক্ট পাউডার
  • বিউটি ব্লেন্ডার
  • স্ক্রাবিং
  • মেকআপ ব্রাশ
  • আইলাইনার
  • মাসকারা
  • সেটিং স্প্রে
  • ব্রোঞ্জার
  • লিপবাম
  • লিপলাইনার
  • আইভ্রু কিট
  • মেকআপ টুলস
টোনার :: মুখে মশ্চারাইজার ক্রিম দেয়ার পূর্বে ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার করার ফলে মুখের লোমগুলোকে ছোট করে দেয় এবং যাদের চেহারা অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের তৈলাক্ত ভাব স্বাভাবিক রাখে যার ফলে মেকআপ চেহারায় সুন্দরভাবে ব্যবহার বসে থাকে।

ময়েশ্চারাইজার :: মুখের আদ্রতা বজায় রাখতে মশ্চারাইজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রোডাক্ট। মেকআপ করার পূর্বে মশ্চারাইজার মুখে ভালোভাবে মেখে নিলে মেকআপ সুন্দরভাবে মুখে বসে থাকে এবং স্কিন ভালো থাকে।

কন্সিলার :: আমাদের প্রত্যেকের মুখে কম বেশি কোন না কোন দাগ থেকে যায়। মেকআপ করার পরে সেই দাগগুলো ঢাকতে কন্সিলার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কন্সিলার মুখের ডার্ক সার্কেল,ব্রণের দাগ,চোখের,নাকের দাগগুলো সুন্দরভাবে ঢেকে দেয়।

স্ক্রাবিং:: সকলের মুখে কিছু না কিছু ময়লা জমে থাকে। ময়লা অবস্থায় মুখে মেকআপ করলে মেকাপ সেভাবে সুন্দর দেখায় না এজন্য মেকআপ করার পূর্বে এটি ব্যবহার করে নিবেন। এটি ব্যবহার করলে মুখের যাবতীয় ময়লাকে দূর করে দেয় এবং মেকআপ কে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে।

প্রাইমার :: মেকাপ করার ক্ষেত্রে প্রাইমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পণ্য। প্রাইমার মুখের মেকআপকে দীর্ঘ সময় ধরে ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং মেকআপের ক্ষতিকর প্রভাব যেন আমাদের স্কিনে না পরে সেই দিকেও লক্ষ্য রাখে। এজন্য অবশ্যই মেকআপের আইটেমের মধ্যে প্রাইমার রাখা অত্যন্ত জরুরী।

ফাউন্ডেশন :: মেকআপ করার পরে স্কিনকে আরো উজ্জ্বল করতে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়। ফাউন্ডেশন মুখের ডার্ক সার্কেল এবং স্কিনটোন দূর করে চেহারাকে উজ্জ্বল করে তোলে। ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণ স্কিনের উপরে নির্ভর করে। একেক রকম স্কিনের জন্য একেক রকমের ফাউন্ডেশন হয়।

কমপ্যাক্ট পাউডার :: ফাউন্ডেশন এবং কন্সিলারকে সুন্দরভাবে মুখের উপরে সেট করার জন্য কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং এই পাউডার চেহারাকেও উজ্জ্বল করে তোলে। যাদের মুখে তেল তেল ভাব রয়েছে তারা এই পাউডার ব্যবহার করার ফলে মেকআপের সময় তেল তেল ভাব দূর হয়ে যায়।

ফেস সিরাম :: মুখের স্কিনকে সুস্থ রাখতে এবং রোদে পোড়া থেকে নিরাপদ রাখার জন্য ফেস সিরাম ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত স্কীনকে আদ্র এবং সূর্যের ক্ষতিকর রোশনি থেকে নিরাপদ রাখে।

ব্লাশ :: মেকআপ করার ক্ষেত্রে ব্রাশ অত্যন্ত জরুরি একটি প্রোডাক্ট। ব্রাশ দিয়ে মেকআপ করার ফলে গাল সুন্দর গোলাপী দেখায় এবং মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। ব্রাশ বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।

হাইলাইটার :: হাইলাইটার মেকআপকে হাইলাইট করার জন্য এবং স্কিনকে বিভিন্ন দিক থেকে গ্যালাটি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। হাইলাইটার মুখের চিক, নাক,কান কপাল,আইভ্রর আশেপাশে ব্যবহার করলে মেকআপ আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

ব্রোঞ্জার :: এটা মেকআপকে স্কিনের সাথে ভালোভাবে লেগে থাকতে সাহায্য করে। এটা কেনার সময় আপনার ত্বক যেমন হবে সেই অনুপাতে কিনতে হবে। আপনার ত্বক যদি নরমাল অথবা হালকা তেল তেল ভাব হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে পাওডার ব্রোঞ্জার ব্যবহার করা উচিত আর যদি আপনার ত্বক ডাই হয় সেক্ষেত্রে ক্রিম টাইপের ব্রোঞ্জার ব্যবহার করা উচিত হবে।

আইভ্রু কিট :: আইভ্রুকে ঘন এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে আইভ্রু কিট ব্যবহার করা হয়। আইভ্রু কিট বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। আপনি মেকাপের সময় এটা ব্যবহার করলে আপনার আইভ্রুকে সুন্দর আকৃতি দিয়ে থাকবে।

সেটিং স্প্রে :: চেহারার উপরে মেকআপকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখার জন্য সেটিং স্প্রে ব্যবহার করা হয় এবং মেকআপ যাতে একেবারে পারফেক্ট হয় সে ক্ষেত্রেও সেটিং স্প্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি মূলত তরল পদার্থ।

কাজল :: চোখকে সুন্দর এবং মায়াবী করার জন্য কাজল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চোখে কাজল ব্যবহার করার ফলে চোখের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কাজলের ভিতরে এক ধরনের মায়া থাকে।

আইলাইনার :: চোখের পাতায় আইলানার ব্যবহার করার ফলে চোখের মেকআপকে আকর্ষণীয় করে তুলে। আইলাইনার বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে তবে কালো আইলাইনার বেশি জনপ্রিয় এবং কালো আইলাইনার ব্যবহার করার ফলেই দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। সরু ক্যাট,আয় বিভিন্ন ডিজাইনের আইলাইনার হয়। এগুলো সাধারণত লিকুইড বা পেন্সিলের মতো হয়।

মাস্কারা :: চোখের পাপড়ি এবং লেসকে ঘন এবং সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে মাস্কারা ব্যবহার করা হয়। মাস্কারা তাদের জন্য ব্যবহার করা উচিত যাদের চোখের পাপড়ির ঘনত্ব কম। এটি ব্যবহার করার ফলে চোখের মেকআপকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে।

লিপস্টিক :: ঠোঁটকে সুন্দর এবং আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে লিপিস্টিক ব্যবহার করা হয়। লিপস্টিক বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে। ঠোঁটের ওপর নির্ভর করে লিপিস্টিকের কালার নির্ভর নির্ধারণ করা উচিত। পোশাকের সাথেও লিপিস্টিকের কালারের বেশ মিল রাখার প্রয়োজন হয়। ম্যাথ,সীমার,বুলেট এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের লিপস্টিক হয়ে থাকে।

বর্তমানে আপনি বাজারে লিকুইড লিপিস্টিকও পাবেন। এছাড়া ওয়াটার প্রুভ লিপস্টিকও পাওয়া যায়।

লিপবাম :: ঠোঁটকে নরম এবং গোলাপি করার জন্য লিপব্যাম ব্যবহার করা হয়। লিপবাম অনেক কালারের হয়ে থাকে। লিপবাম ঠোঁটে ময়শ্চারাইজারের কাজ করে যার ফলে ঠোঁট আর্দ্র এবং সুন্দর থাকে।

লিপলাইনার :: ঠোঁটে সীমানায় লিপলাইনার ব্যবহার করা হয় এজন্য যে যাতে করে ঠোঁটের গঠন হাইলাইট করতে পারে। লিপলাইনার ব্যবহার করার ফলে ঠোঁটের গঠন দেখতে সুন্দর হয় এবং অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগে।

বিউটি স্পঞ্জ :: ব্রাশের পরিবর্তে আপনি এটা দিয়েও মেকআপ করতে পারবেন। এটা দিয়ে মেকআপ করার ফলে মেকআপ খুব সুন্দর ভাবে চেহারার প্রতিটি কোনায় করা যায়।

আপনি এইসব প্রোডাক্ট দিয়ে মেকআপ করলে আপনার মেকআপ খুবই সুন্দর হবে এবং দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে। মেকআপ করার সময় চেষ্টা করবেন সবকিছু নিয়ম রক্ষা করে মেকআপ করার তাহলে আপনার মেকআপ অনেক বেশি সুন্দর দেখাবে।

নরমাল মেকআপ করতে কি কি লাগে

অনেকে আছে যারা নরমাল মেকআপ করতে অভ্যস্ত বা কোথাও তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার ক্ষেত্রে নরমাল মেকআপ করে থাকে। চলুন এবার আমরা জানি কিভাবে নরমাল মেকআপ করলেও আপনাকে দেখতে অনেক বেশি সুন্দর দেখাবে। নরমাল মেকআপ করার জন্য আপনাকে প্রথমে মশ্চারাইজার মুখে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে।

এরপরে প্রাইমার ব্যবহার করে নিবেন। প্রাইমার ব্যবহার করার ফলে আপনার স্কিনে মেকআপ অনেক সময় ধরে থেকে যাবে। তারপর ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন। ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার ফলে আপনার ত্বকে পারফেক্ট একটা লুক দিবে। যারা নরমাল মেকআপ করতে চান তাদের জন্য ফাউন্ডেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার ফলে অনেক কিছু ব্যবহার না করলেও আপনার চেহারায় গ্লো ভাব আসবে। আপনার মুখে যদি ব্রণের দাগ বা বিভিন্ন রকমের দাগ অথবা ডার্ক সার্কেল থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি সামান্য পরিমাণ কন্সিলার ব্যবহার করে নিবেন। কন্সিলর ব্যবহার করার ফলে আপনার চেহারা থেকে যাবতীয় দাগ ঢেকে দিয়ে আপনার চেহারাকে সুন্দর দেখাবে।

এই মেকআপ গুলোকে সুন্দরভাবে চেহারার সাথে সেট করার জন্য সেটিং স্প্রে ব্যবহার করবেন। সেটিং স্প্রে ব্যবহার করলে আপনি যত রকমের মেকআপ করবেন সবগুলো আপনার চেহারার উপরে সুন্দরভাবে দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী থাকবে। এরপর আপনার চোখের জন্য আইলাইনার ব্যবহার করবেন। আইলানের ব্যবহার করা ফলে আপনার চোখের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করে তুলবে।

আপনি যদি লিকুইড আইলাইনার ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন সেক্ষেত্রে পেন্সিল লাইনের ব্যবহার করবেন। আইলেনার বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে আপনি আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি ব্যবহার করবেন। তারপর মাস্কারা ব্যবহার করবেন। মাস্কারা ব্যবহার করার ফলেও চোখের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বেশি ফুটে ওঠে।


মেকআপ করার ক্ষেত্রে মাসকারা একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পণ্য। মাস্কারা ব্যবহার করার ফলে আপনার লুক সম্পন্ন হয়। ঠোটের জন্য হালকা লিপবাম অথবা লিপস্টিক ব্যবহার করবেন। লিপবাম অথবা লিপিস্টিক ব্যবহার করার ফলে থাকে ঠোঁট আদ্র থাকে এবং সুন্দর দেখায় ও আকর্ষণীয় করে তোলে।

আপনি এই কয়েকটি পন্য ব্যবহার করলে সাধারণের মধ্যে অনেক আকর্ষণীয় লুক নিয়ে আসতে পারবেন এবং আপনাকে অনেক বেশি সুন্দর দেখাবে। মেকআপ করার ক্ষেত্রে সাধারণ মেকাপের জন্য এইসব পণ্যগুলো অবশ্যই প্রয়োজন।

ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম

মেকআপ করার জন্য অনেকে পার্লারে গিয়ে মেকআপ করে। আবার কেউ কেউ চেষ্টা করে ঘরে বসে নিজে মেকআপ করার। মেকাপ করার ক্ষেত্রে অনেকের মেকআপ করা খারাপ হয়ে যায় যার জন্য দেখতে দৃষ্টিকটু লাগে। চলুন এবার আমরা জানি কিভাবে আপনি ঘরে প্রপারলি মেকআপ করবেন। প্রথমে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিবেন এরপরে এসে তা কিছু সময় ধরে শুকাবেন।

তারপরে দেখবেন মুখের কোথাও চকচক করে কিনা। তারপর একটি টিস্যু পেপার মুখের উপরে দিবেন এটা পরীক্ষা করার জন্য যে কোথাও তেলতেল ভাব আছে নাকি। যদি তেলতে ভাব থাকে সেক্ষেত্রে ভালোভাবে তা মুছে নিবেন। মুখ শুকানোর পরে মুখের ওপরে টোনার ব্যবহার করে নিবেন। টোনার ব্যবহার করা হলে ফলে চেহারা থেকে তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায় এবং যেসব ময়লা রয়েছে সেসব ময়লা গুলো চলে যায়।

এরপর ভালোভাবে মুখে মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। মশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়ে গেলে এক থেকে দুই মিনিট তা ভালোভাবে শুকাতে দিন। এরপর প্রাইমার ব্যবহার করুন। প্রাইমার ভালোভাবে মুখের প্রতিটি কোনায় ব্যবহার করবেন। ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যেন কোন অংশ বাদ না থাকে। এর পরে ফাউন্ডেশন মুখে এবং গলায় নিন।

তারপর একটি মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে মাসাজ করে নিবেন যেন কোথাও কোনো রকমের ফাঁকা না থাকে। এরপর ব্রোঞ্জার নিন। ব্রোঞ্জার একটি ব্রাশের সাহায্যে চোয়ালে,চিক বনে এবং নাকের হাড়ে মাঝে ভালোভাবে লাগাবেন। ব্রাশ নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই যে ব্রাশের মাথা খুব নরম সেই ব্রাশ নিবেন।

এতে করে আপনার চেহারা আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। মেকআপ করার জন্য ব্রাশ অত্যন্ত জরুরী। ব্রাশ নেয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে ক্রিম ব্রাশ ব্যবহার করা। এটি চেহারায় আলাদা রকমের একটি সৌন্দর্য এনে দেয়। মুখের যেসব অংশ গুলোতে সূর্যের আলো পড়ে সেই জায়গা গুলোতে হাইলাইটার ব্যবহার করবেন তাহলে আপনার চেহারা আরো বেশি পারফেক্ট এবং আকর্ষণীয় হবে।

গালের দুই পাশের হাড়ের উপরে নাকের উপরে কপালে থুতনি এবং ঠোটের উপরে ব্যবহার করতে পারেন। মেকআপ এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় পণ্য হচ্ছে হাইলাইটার।এরপর চোখের পাতার উপরে আপনার পছন্দমতো আইশ্যাডো ব্যবহার করবেন। আইশ্যাডো ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আঙ্গুলের উপরে অথবা নরম কোন কিছুর উপরে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।


আইশ্যাডো ব্যবহার করার ফলে চোখ বেশি আকর্ষণীয় ও সুন্দর হয়ে ওঠে। আপনি যদি চোখকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে চান সেক্ষেত্রে আইলাইনার ব্যবহার করা আপনার জন্য জরুরি। চোখে সুন্দরভাবে কালো কালারের আইলাইনার ব্যবহার করলে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। আইভ্রতে আইভ্র কপি ব্যবহার করবেন।

আইভ্র কিট ব্যবহার করার ফলে আইভ্রর ঘনত্ব বৃদ্ধি হয় এবং দেখতে সুন্দর লাগে। চোখে কাজল ব্যবহার করার ফলে মেকআপকে পরিপূর্ণ দেখায় এবং কাজল চোখকে অনেক বেশি সুন্দর করে তুলে। তাই আপনার উচিত হবে অবশ্যই মেকআপ করার ক্ষেত্রে কাজল ব্যবহার করা। এরপর ঠোঁটে লিপিস্টিক বা লিপবাম লাগিয়ে নিন।

আপনি আপনার পছন্দমত যে কালার ভালো লাগে সেই কালারের লিপিস্টিক বা লিপ বাম ব্যবহার করবেন। লিপিস্টিক বা লিপবাম ব্যবহার করলে ঠোঁট বেশি সুন্দর হয় এবং আদ্র থাকে। এসব কাজগুলো হয়ে গেলে মুখের উপরে সেটিং স্প্রে ব্যবহার করে নিবেন। সেটিং স্প্রে ব্যবহার করার ফলে আপনার মেকআপ দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয় এবং কোন রকমের গলে যাওয়া বা কোন সমস্যা হয় না।

আপনি এভাবে মেকআপ করলে খুব সহজে ঘরে বসে আকর্ষণীয় লোক নিয়ে আসতে পারবেন এবং আপনাকে দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগবে। মেকআপ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা পণ্য ব্যবহার করার পরে আরেকটা পণ্য ব্যবহার করার আগে কিছু সময় অপেক্ষা করবেন। তাড়াহুড়ো করে মেকআপ করার ফলে মেকআপের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।

ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম

ন্যাচারাল মেকআপ করার ফলে ভিন্ন রকমের একটি সৌন্দর্য চেহারার মধ্যে আবির্ভাব হয়। অনেকে আছে যারা ন্যাচারাল মেকআপ করতে পছন্দ করে। চলুন এবার আমরা জানি আপনি কিভাবে ন্যাচারাল মেকআপ করবেন। মেকআপ করার আগে অবশ্যই আপনাকে আপনার স্কিন ঠিক করে নিতে হবে। তাই আপনাকে প্রথমেই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে ক্লিন করে নিতে হবে।

যদি সম্ভব হয় তাহলে সিট মাস্ক এপ্লাই করতে পারেন তারপর চেহারায় ভালোভাবে মশ্চারাইজার মাখিয়ে নিবেন। আপনি যদি দিনের বেলায় মেকআপ করেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জন্য উচিত হবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। এতে করে আপনার চেহারা রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে। এরপর প্রাইমার ব্যবহার করে নিবেন।

প্রাইমার ব্যবহার করার ফলে চেহারায় ন্যাচারাল লুক আসে। চেহারায় ন্যাচারাল লুকানোর জন্য অবশ্যই প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। এরপর ফাউন্ডেশন চেহারার উপরে ভালোভাবে ব্যবহার করে নিবেন। ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে আপনার চেহারায় আকর্ষণীয় ভাব আসবে এবং দেখতে অনেক সুন্দর লাগবে।

এরপর চেহারা হাইলাইট করার জন্য কন্সিলার ব্যবহার করবেন। কন্সিলার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে একসাথে বেশি পরিমাণে কন্সিলার ব্যবহার করবেন না। সামান্য পরিমাণ ফাউন্ডেশন এবং কাউন্সিলর ব্যবহার করলেই আপনার চেহারায় ন্যাচারাল লুক আসতে শুরু করবে। এরপর চেহারায় সামান্য পরিমাণে হাইলাইটার ব্যবহার করবেন।

হাইলাইটার ব্যবহার করার ফলে আপনার চেহারায় প্রাকৃতিক যে কালার রয়েছে তা থেকে একটু বেশি বেবি পিংক,টাইম কোরাল কালার নিয়ে আসবে এবং দেখতে অনেক বেশি ন্যাচারাল দেখাবে। যাদের চেহারায় ব্রণের দাগ আছে বা চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল রয়েছে তারা ব্রোঞ্জার ব্যবহার করে নিবেন এতে করে আপনার চেহারা সকল দাগ এবং ডার্ক সার্কেল ঢেকে যাবে।

চোখের পাতায় হালকাভাবে আইলাইনার ব্যবহার করে নিবেন এবং চোখের পাপড়িতে কাজল ব্যবহার করবেন। কাজল ও আযইলাইনার ব্যবহার করার ফলে আপনার চোখ সিম্পলের মধ্যে অনেক বেশি সুন্দর দেখাবে। এরপর ঠোঁটে হালকা ভাবে লিপবাম ব্যবহার করবেন এতে করে আপনার ঠোঁট আর্দ্র থাকবে এবং দেখতে সুন্দর লাগবে।

তারপর ভালো মানের একটি সেটিং স্প্রে মুখের উপরে ব্যবহার করে নিবেন তাহলে আপনার মেকআপ ঘেমে যাওয়া বা নষ্ট হওয়ার ভয় থাকবে না ও দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হবে। আপনি এরকম ভাবে মেকআপ করলে খুব সহজেই ন্যাচারাল লুক নিয়ে আসতে পারবেন এবং আপনাকে সিম্পলের মধ্যে অনেক বেশি গর্জিয়াস দেখাবে।

পার্টি মেকআপ করার নিয়ম

পার্টিতে অথবা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার পূর্বে আকর্ষণীয় মেকআপ করা জরুরী এতে করে পার্টিতে সবার মধ্যে নিজেকেও দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও সুন্দর লাগে। প্রথমে আপনাকে সুন্দরভাবে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপরে চেহারায় টোনার ব্যবহার করবেন। টোনার ব্যবহার করার ফলে আপনার চেহারা থেকে ময়লা দূর হয়ে যাবে।

তারপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন যদি দিনের পার্টিতে যান সেক্ষেত্রে বা কোন অনুষ্ঠানে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার ফলে আপনার চেহারা রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ থাকবে। এরপর ভালোভাবে মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। মশ্চারাইজার ব্যবহার করা হলে আঙ্গুলে প্রাইমার নিয়ে তা সম্পূর্ণ মুখে হালকা ভাবে মাসাজ করবেন।

এরপর আপনার ত্বকের সাথে যে ফাউন্ডেশন ম্যাচ হয় সেই ফাউন্ডার ব্যবহার করবেন। ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার পরে একটি ব্রাশ বা স্পঞ্জ করে তা ভালোভাবে মুখে ব্লেন্ড করে নিবেন যাতে সম্পূর্ণভাবে মুখের সাথে লেগে যায়। ফাউন্ডেশন আপনার মুখের কালো দাগ ঢাকতে সাহায্য করবে। এরপর ভালোভাবে চোখের উপরে নিচে এবং নাকের আশেপাশে কন্সিলার ব্যবহার করবেন।

কন্সিলার ব্যবহার করা ফলে যেসব আলো পড়ে সেসব অঙ্গ চাকচিক্য দেখায়। এসব ভালোভাবে মুখের উপরে ফিট করার জন্য কমম্প্যাক্ট পাউডার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। ব্রাশ অথবা স্পঞ্জের মাধ্যমে তা মুখের সম্পূর্ণ অংশে ব্যবহার করবেন। এটা ব্যবহার করা ফলেও আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হবে। চোখে কাজল,আইলাইনার ও মাশকারা ব্যবহার করবেন।


এগুলো ব্যবহার করার ফলে আপনার চোখ অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও মানানসই এবং সুন্দর দেখাবে। ভ্রতে ব্রাশের মাধ্যমে সামান্য আইশ্যাডো ব্লেন্ড করে নিলে ভ্র দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। এটা দিনের পার্টির ক্ষেত্রে করবেন। চোখের উপরের পাতায় আইশ্যাডো ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিবেন। আইশ্যাডো বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে।

আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি কালারের ব্যবহার করে নিবেন। ঠোঁটে লিপবাম অথবা লিপিস্টিক ব্যবহার করবেন। ঠোটে লিপিস্টিক অথবা লিপবাম ব্যবহার করা ফলে ঠোঁট আর্দ্র থাকে এবং সুন্দর দেখায়। আপনি এভাবে মেকআপ করলে আপনাকে কোন অনুষ্ঠান বা পার্টিতে সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখাবে। পার্টি বা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মেকআপ যত বেশি ন্যাচারাল ও চাকচিক্য হয় ততই বেশি ভালো লাগে।

মেকআপ সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর

১ প্রশ্ন স্কুলের ছবির জন্য কোন মেকআপ ভালো?

উত্তর

স্কুলের ছবির জন্য মেকআপ করার ক্ষেত্রে বেশি চাকচিক্য মেকাপ করা উচিত নয়। খুব সামান্য পরিমাণে যেমন মুখে মশ্চারাইজার এবং প্রাইমার ও হালকা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে দেখতে সুন্দর লাগে।

২ প্রশ্ন ছবিতে কোন মেকআপ ভালো লাগে?

উত্তর

ছবি তোলার ক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত মেকআপ বা চকচকে মেকআপ হয় তাহলে ছবি খারাপ হয়ে যায় এবং ঝলসে যায়। তাই ছবি তোলার আগে অতিরিক্ত মেকআপ করা উচিত নয়।

৩ প্রশ্ন মেকআপে ফাউন্ডেশনের কাজ কি?

উত্তর

ফাউন্ডেশন হচ্ছে চেহারায় ব্রণের দাগ অথবা বিভিন্ন দাগ ও চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল ঢেকে রাখতে এবং চেহারায় প্রাকৃতিক কালার দিতে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

৪ প্রশ্ন প্রতিদিন কতজন মানুষ মেকআপ করে?

উত্তর

২০১৯ সালে সমীকরণ অনুসারে ৬১% মহিলা প্রতিদিন মেকআপ করত। ২০২৩ সালে সমীকরণে দেখা গেছে ৭৩% মহিলা প্রতিদিন মেকআপ করে।

৫ প্রশ্ন দিনে কতক্ষণ মেকআপ করা উচিত?

উত্তর

আপনার ত্বক যতক্ষণ পর্যন্ত মেকাপ সহ্য করে থাকতে পারবে ততক্ষণে মেকআপ রাখা উচিত। কখনো অতিরক্ত সময় মেকাপ রাখা উচিত নয়। অতিরিক্ত মেকাপ রাখার ফলে ত্বকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়।

শেষ কথা

মেকআপ করার আগে অবশ্যই নিজের ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন এবং মেকআপ করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করে ধীর স্থির ভাবে মেকআপ করবেন। এতে করে আপনার চেহারার উপরে মেকআপ সুন্দর ভাবে লেগে থাকে এবং দেখতে সুন্দর লাগবে।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও মেকআপ করার যাবতীয় পদ্ধতি জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url