মানসিক চাপে থাকলে যা যা করতে হয় - মানসিক চাপ কমানোর উপায়

প্রিয় পাঠক, আপনি কি মানসিক চাপ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোস্টে মানসিক চাপ কমানোর উপায় এবং মানসিক চাপ থেকে বাঁচার ইসলামিক উপায় ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তির সব রকমের সমাধান বলবো।সম্পন্ন পড়তে থাকুন আপনি আপনার সমাধান পেয়ে যাবেন।মানসিক চাপ থেকে বাঁচার উপায়
এই পোস্ট পড়লে মানসিক চাপের লক্ষণ,এই সময় কি করা উচিত,কিভাবে বুঝবেন আপনি মানসিক চাপে আছেন,এটা থেকে রক্ষা পাবার উপায়, ইসলামিক ভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় এবং দোয়া।

ভূমিকা

মানসিক চাপ এমন একটা বিষয় যা মানুষকে ভিতরে ভিতরে মেরে ফেলে। মানসিক চাপ বলতে বোঝাই শারীরিক এবং মানসিক এমন প্রতিক্রিয়া যেটা স্বাভাবিক না এবং যেটা আপনার ভালো থাকার জন্য প্রতিবন্ধক হয় সেটাকেই মানসিক চাপ বলে। মানসিক চাপের সময় আপনি যত ভেঙে পরবেন আপনার জন্য ততই ক্ষতিকর।


এজন্য এই সময় নিজেকে অনেক বেশি শক্ত রাখা উচিত যাতে কোন কিছু আপনাকে ভাঙতে সক্ষম না হয়।

মানসিক চাপের লক্ষণ - মানসিক চাপ কাকে বলে

মানসিক চাপ কেউ একটি রোগ হিসেবে ধরা হয়। বিভিন্ন রোগের বিভিন্ন রকমের লক্ষণ দেখা দেয় তেমনি ভাবে মানসিক চাপ হলেও কিছু লক্ষণ আমাদের ব্যবহারে এবং শরীরে প্রকাশ পায়। একটা সুস্থ মানুষ এবং মানসিক চাপে অসুস্থ মানুষ এই দুইজনার ভিতরে অনেক রকমের পার্থক্য গড়ে ওঠে। মানসিক চাপে যে ব্যক্তি আক্রান্ত সে কখনোই একজন স্বাভাবিক মানুষের মত হতে পারবেনা।

মানসিক চাপ যখন হয় তখন অস্থিরতা কাজ করে ,ভিতরে ভয় কাজ করে,মন খারাপ থাকে, ঘুম হয় না ঠিকমতো। এটাকে তখন-ই মানসিক চাপ বলা হবে যখন সেটা আপনার কাছে স্বাভাবিকের চেয়ে কঠিন মনে হবে। এই সময় আপনাকে একাকীত্ব চেপে ধরবে,আত্মহত্যা করতে মন চাইবে,চুপচাপ থাকতে পছন্দ করবেন।

মানসিক চাপ থেকে বাঁচার উপায় - মানসিক চাপ কমানোর উপায়

প্রতিটি রোগে যেমন চিকিৎসা রয়েছে তেমনিভাবে মানসিক রোগ থেকে বাঁচারও কিছু উপায় রয়েছে। সে উপায় গুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই মানসিক চাপ অথবা মানসিক অশান্তি থেকে বের হওয়া যায়। অতিরিক্ত চিন্তা বাদ দিন। সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে নিন। আপনার ভাগ্য যা আছে সেটাই হবে সুতরাং চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন।

নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। ব্যস্ত মানুষদের সাধারণ কষ্ট,দুঃশ্চিতা থাকে না আর থাকলেও সেটা খুবই কম।আপনি আপনার আশেপাশের মানুষের দিকে লক্ষ্য করে দেখবেন যে কর্মহীন মানুষের মানসিক চাপ বেশি।নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া।আপনি সবসময় সবার চেয়ে নিজেকে বেশি ভালো রাখবেন।নিজের পছন্দের কাজগুলো বেশি বেশি করুন।

আপনি যখন নিজেকে নিয়ে বেশি ভাববেন তখন মানসিক চাপ কম হবে।আবেগ কমিয়ে দিন। আপনি সবসময় বাস্তবতা মেনে নিতে শিখুন এবং বাস্তবাদী হোন।আবেগ আপনাকে বেশি হতাশায়, চিন্তায় ভুগাবে এবং মানসিক ভাবে ভীষণ চাপের মধ্যে রাখবে।প্রতিদিন নিয়ম করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন

বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটান,হাসাহাসি করুন দেখবেন আপনার মানসিক চাপ অনেকটা কমে যাবে।ঘুম।সবসময় চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত পরিমাণে তৃপ্তি সহকারে ঘুমানোর।অনেক সময় ঘুম না হওয়ার জন্য ভিতরে অস্থিরতা কাজ করে এবং মাথায় চিন্তা বেশি আসে।লেখালেখি করা। প্রতিদিন অল্প করে হলেও নিজেকে নিয়ে বা নিজের আশেপাশে যেসব দেখেছেন সেসব নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন।

যতটুকু সম্ভব হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এসব থেকে দূরে থাকুন,স্যাোসাল মিডিয়া দিনদিন মানুষের মানসিক চাপে অনেক বড় একটা প্রভাব ফেলছে এবং স্যাোসাল মিডিয়ার জন্যই অনেক সমস্যা আমাদের চারিপাশে বিস্তার হচ্ছে।

মানসিক চাপ থেকে বাঁচার ইসলামিক উপায় 

মানসিক চাপ থেকে বাঁচার দুই রকমের উপায় রয়েছে। এক হচ্ছে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ দুই ইসলামিক উপায়।সবসময় নিজের স্রষ্ঠার দিকে মনোনিবেশ রাখবেন।কখনও তাঁর বলা রাস্তা থেকে সরে যাবেন না।আপনার ধর্মে যেসব আদেশ করা হয়েছে সেসব মেনে চলুন এবং যেসব নিষেধ করা হয়েছে সেসব থেকে বিরত থাকুন।

প্রতিদিন প্রার্থণা করুন।আপনার প্রার্থণা আপনার সমস্যা দূরে করে দিতে পারে এবং আপনি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। সবসময় পাক এবং পবিত্র থাকুন।নাপাক অবস্থায় কখনও থাকবেন না এবং অপরিষ্কার অবস্থায় থাকবেন না।আমাদের রাসূল (স) যখন হতাশায়,চিন্তাই এবং মানসিক চাপে থাকতেন তখন তিনি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতেন এবং তিনি আমাদেরকে এমনটাই শিক্ষা দিছেন।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে -যে ব্যক্তি প্রতিদিন তওবা ইসতেগফার পাঠ করবে আল্লাহ তার সব অভাব দূর করে দিবেন।সমস্যার সমাধান বের করে দিবেন।তার দুঃশ্চিতা দূর করে দিবেন এবং তাকে আল্লাহর খাজানা থেকে অফুরন্ত রিজিক দিবেন (আবু দাউদ)নিয়মিত নামাজ পড়ুন,কোরআন পড়ুন।আপনি যখনই ইবাদত থেকে দূরে সরে যাবেন তখনই আপনার পেরেশানি বেড়ে যাবে।

বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ নাই, সকল সমস্যার জন্য তার কাছে চাইতে হবে এবং কান্নার মাধ্যমে মোনাজাত করে তাঁর থেকে সেটা হাসিল করে নিতে হবে।এক আল্লাহওয়ালা বলেন "ছোট বেলায় আমরা যেভাবে কান্না করে সব সমাধান করে নিতাম ঠিক তেমনি ভাবে এখনও আমরা আল্লাহর কাছে কান্না করে সব সমস্যার সমাধান করে নিতে হবে

"প্রতিদিন তওবা করা এবং ইসতেগফার পড়া।আমরা যত গুনাহ করি আমাদের অন্তরে তত দাগ পরে যায় আর এই কারণে আমরা হতাশায় ভুগি এজন্য আমাদের নিয়মিত তওবা করতে হবে এবং ইসতেগফার পড়তে হবে যাতে করে আল্লাহ আমাদের গুনাহ মাফ করে দেয়। বেশি বেশি দুরুদ শরিফ পড়া।


রাসূল (স) এর উপরে আমরা যত দুরুদ পড়বো আমাদের অন্তরে তত শান্তি মিলবে।এটা হচ্ছে প্রশান্তির কয়েকটা কার্যকারী মাধ্যমের মধ্যে একটা।দান সদকা করা।আপনি যখন অসহায় মানুষকে দান করবেন তখন আপনার ভিতরে ভালো লাগা কাজ করবে এবং আপনি আল্লাহর কাছে এটার জন্য উত্তম পুরস্কার পাবেন।

শেষ কথা

পরিশেষে বলবো আপনার সৃষ্টিকর্তা যেন আপনার সকল সমস্যা সমাধান করে দেয় আমি এই দোয়াই করছি। কখনও ভেঙে পরবেন না,সব সমস্যার সমাধান আছে।পৃথিবী যেমন স্থায়ী না ঠিক তেমনিভাবে পৃথিবীর কোন সমস্যাও স্থায়ী না।ধৈর্য্য ধরুন,নিজের সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

আশা করি আপনি আপনার উত্তর এবং সমাধান পেয়ে গেছেন। আপনার যদি পোস্টটা ভালো লাগে এবং আপনি উপকৃত হোন তাহলে আপনার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুমহলে শেয়ার করবেন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url