লাউ শাক এবং লাউয়ের বিচি ও লাউ খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি কি লাউ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে লাউ খাওয়ার উপকারিতা এবং লাউ এর অপকারিতা ও লাউ শাক এর অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে লাউ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
লাউ খাওয়ার উপকারিতা
এছাড়াও আপনি পোষ্টের মধ্যে পাবেন লাউ শাকের অপকারিতা এবং লাউ এর রসের উপকারিতা ও লাউ খেলে কি ঠান্ডা লাগে এবং লাউ এর বিচির উপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

লাউ খুব সুস্বাদু একটি সবজি। মহানবী সাঃ এর পছন্দের খাবার। লাউয়ে অনেক পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে গরম কালে পেটকে স্বাভাবিক এবং ঠান্ডা রাখতে লাউয়ের কোন বিকল্প হয় নাই। লাউ এমন একটি সবজি যা বারো মাসই বাজারে পাওয়া যায়।


শুধু লাউ নয় লাউয়ের শাক,লাউয়ের রস এবং লাউ এর বিচি দিয়ে উপকৃত হওয়া যায়।

লাউ খাওয়ার উপকারিতা

লাউয়ের মধ্যে অনেক উপকারিতা রয়েছে। লাউ আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। চলুন এবার আমরা লাউয়ের উপকারিতা গুলো জানি
  • লাউয়ের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে লাউ পেটকে ঠান্ডা এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে যার ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • যাদের হজম শক্তির সমস্যা রয়েছে তারা লাউ খাওয়ার ফলে খুব সহজেই হজম হয়ে যায়।
  • যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন লাউ তাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমাধান। লাউ কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যাকে নিমিষে ভালো করে দিতে পারে।
  • লাউ ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এজন্য যারা ডায়াবেটিসের রোগী আছেন তারা লাউ খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • লাউয়ের ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে যার ফলে আপনি নিয়মিত লাউ খাইলে খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন।
  • যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কম লাউ তাদের জন্য উপকারী একটি সবজি। লাউ লিভারের সমস্যা ভালো করতে সাহায্য করে।
  • লাউ এর মধ্যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যান্সার সৃষ্টি করে এমন কোষকে বৃদ্ধি হতে বাধা দেয় যার ফলে ক্যান্সার থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
  • যাদের শরীরে পানির স্বল্পতা রয়েছে বা পানির ঘাটতির রোগে ভুগছেন তারা নিয়মিত লাউ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। লাউ পানি ঘাটতির সমস্যা খুব সহজে পূরণ করে দিতে পারে।
  • লাউ শরীরকে ঠান্ডা রাখে এতে করে শরীরে গরম তাপ প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • লাউ কিডনির কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
  • যাদের রাতে ঘুমানোর সমস্যায় ভুগেন,ঘুম ঠিক মতো হয় না,এই সমস্যা দূর করতে লাউয়ের ভূমিকা অপরিসীম।
  • লাউ এর মধ্যে পটাশিয়াম এবং ফাইবার থাকে যার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এজন্য হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
  • লাউ আঁশযুক্ত একটি সবজি এজন্য রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল গুলোকে চুষে নিতে সহায়তা করে।
  • লাউয়ের মধ্যে নিউরো ট্রান্সমিটার নামক একটি কোলন থাকে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে তোলে। তাই স্টেসে লেভেল অনেকটাই কমে যায়। সেই সঙ্গে যারা ডিপ্রেশনের সমস্যা রয়েছেন অনেকটা ডিপ্রেশন কমে যায়।
  • লাউ এর মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে এবং সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে এবং ত্বক থেকে তৈলাক্ত ভাবে সমস্যা স্বাভাবিক রাখে।
  • লাউয়ের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
  • লাউ চুলের জন্য বেশ উপকারী। লাউ খাওয়ার ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল পেকে যাওয়া অনেকটা কমে আসে।
  • যাদের পেশাব করার সময় জ্বালাপোড়া সমস্যা হয় বা পেশাব হলুদ কালারের হয়ে থাকে লাউ এই সমস্যা দূর করতে ক্ষমতাশীল।
  • লাউয়ের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকার কারণে দাঁত এবং হাড়কে মজবুত করার পাশাপাশি ঘামজনিত লবনের ঘাটতি দূর করে দেয়।
  • লাউ খাওয়ার ফলে মহানবী সাল্লাল্লাহু সালামের একটি সুন্নত আদায় হয় এবং সওয়াব পাওয়া যায়।

লাউয়ের মধ্যে যেসব ভিটামিন থাকে

প্রতি ১০০ গ্রাম লাউয়ে আছে
  • কার্বোহাইড্রেট ২.৫ গ্রাম।
  • প্রোটিন ০.২ গ্রাম।
  • ফ্যাট ০.৬ গ্রাম।
  • ভিটামিন-সি ৬ গ্রাম।
  • ক্যালসিয়াম ২০ মি.গ্রা.।
  • ফসফরাস ১০ মি.গ্রা.।
  • পটাশিয়াম ৮৭ মি.গ্রা.।
  • নিকোটিনিক অ্যাসিড ০.২ মি.গ্রা. রয়েছে।

এছাড়া এতে রয়েছে খনিজ লবণ।ভিটামিন বি-১, বি-২, আয়রন আরও নানা উপাদান।এসব উপকারিতা পাওয়ার জন্য আপনার উচিত হবে লাউ খাওয়ার প্রতি আগ্রহী হওয়ার এতে করে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে।

লাউ এর অপকারিতা

লাউয়ের উপকারিতা অনেক সেই তুলনায় অপকারিতা খুবই কম। লাউ খাওয়ার ফলে সামান্য পরিমাণ কিছু অপকারিতা সম্মুখীন হতে পারে। চলুন এবার সেই অপকারিতা গুলো জানি
  • যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে বা লাউ খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তারা লাউ খাওয়া থেকে বিরত থাকবে।
  • ডায়াবেটিসের রোগীরা লাউ খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরী।
  • লাউয়ের রস তিতো হয়ে থাকে যার ফলে বমি ভাব, ডায়রিয়া বা পেটে বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়।
  • অতিরিক্ত লাউ খাওয়ার ফলে পেট ফাঁপার সমস্যা হয়ে থাকে।
  • যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা কম পরিমাণে লাউ খাবেন। অতিরিক্ত লাউ খাওয়ার ফলে গ্যাসের এবং পাঁচনের সমস্যা হয়।
  • অতিরিক্ত লাউ খাইলে রক্তের শর্করা একেবারে কমে যেতে পারে।
লাউ খাওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন তাহলে আপনি ক্ষতিকর কিছু দিক থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন এবং অসংখ্য উপকারিতা আপনার শরীরে প্রবেশ করবে।

লাউ শাক এর উপকারিতা

লাউ শাক স্বাদে অনেক সুস্বাদু। আমরা প্রত্যেকেই লাউ শাক খেয়ে থাকি। লাউ থাকে এমন কিছু উপকারিতা রয়েছে যা আমরা কখনও কল্পনাও করিনি।
  • লাউ শাকে আয়রন থাকে যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে এবং লোহিত কণিকার সংখ্যা তৈরি করতে সাহায্য করে।
  • লাউয়ের সাথে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা হাড়কে শক্ত এবং মজবুত করে ও ক্যালসিয়াম জনিত যেইসব রোগ রয়েছে সেসব রোগের ঝুকি কমায়।
  • লাউ শাকেও ক্যালরি কম থেকে এবং কোলেস্টেরল ও ফ্যাট একেবারে থাকে না যার ফলে ওজন কমানো খুব সহজ হয়।
  • লাউ শাক একটি পটাশিয়ামযুক্ত খাবার আর পটাশিয়াম হৃদরোগ এবং রক্তচাপের সমস্যা থেকে নিরাপদ রাখে।
  • লাউ শাকের মধ্যে বিটা ক্যারোটিন থাকে৷ এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখে।
  • লুটেইন ও জিয়েজ্যান্থিন নামক এই দুইটি উপাদান লাউ শাক এর মধ্যে থাকে। এই উপাদানগুলো চোখের রোগ থেকে মুক্ত রাখে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • গর্ভবতী মহিলা লাউ শাক খাওয়ার ফলে বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে।
  • লাউ শাকের মধ্যে ভিটামিন সি থাকে যা শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ করে।
  • লাউ শাক একটি আঁশযুক্ত খাবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এবং পাইলসের সমস্যাকে দূরে রাখে।
  • লাউ শাক মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে পারে এবং ঘুম না হওয়ার সমস্যাকে দূর করে দিতেও কার্যকারী।
  • লাউ শাক রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকারী। যার ফলে ডাইবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • লাউশাকে ফলিক অ্যাসিড থাকে। ফলিক অ্যাসিড একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত জরুরি। ফলিক এসিডের অভাবে শিশুর মস্তিষ্ক বিকৃতি,প্যারালাইসিস এমনকি মৃত্যু হতে পারে এজন্য গর্ভ অবস্থায় মহিলাদের নিয়মিত লাউ শাক খাওয়ানোর চেষ্টা করা উচিত।
  • যাদের কাশির সাথে রক্ত বের হয় তারা লাউ শাকের রস খাওয়ার ফলে এই সমস্যা ভালো হয়ে যায়।
  • লাউ শাকে ভিটামিন সি,আয়রন,ফাইবার, পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম থাকে এসব প্রত্যেকটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
  • লাউ শাক খাওয়ার ফলে পাকস্থলী সুস্থ থাকে এবং পাকস্থলির যত রকমের রোগ হয়েছে সেসব রোগ থেকে নিরাপদ থাকা যায়।

আপনি যদি এইসব উপকারিতা গুলো পেতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন লাউ শাক খাবারের তালিকায় যুক্ত করা। লাউ এবং লাউ শাক বছরের প্রতিটি সময় পাওয়া যায় এবং দামের দিক দিয়েও খুব কম।

লাউ শাকের অপকারিতা

লাউ শাক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি তেমনিভাবে লাউ শাকের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কিছু লাউ শাক আছে যেগুলো এলার্জির জন্য সমস্যা করে তাই যাদের অ্যালার্জি রয়েছে খাবার থেকে বিরত থাকবেন এবং এমন প্রজাতির লাউ শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন যেগুলো এলার্জি রিঅ্যাকশন সৃষ্টি করে।

ভালো জাতের লাউ শাক না খাওয়ার ফলে ত্বকে চুলকানি ও লাল লাল দাগ হতে পারে। লাউ শাকের ফাইবার থাকে যার ফলে অতিরিক্ত লাল শাক করে গ্যাসের সমস্যা হয়। যাদের এসব সমস্যা গুলো রয়েছে তারা লাউ শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন তাহলে আর কোন রকমের কোন সমস্যা হবে না এবং অতিরিক্ত কখনো খাবেন না।

লাউ এর রসের উপকারিতা

লাউ রস করেও খাওয়া যায়। লাউয়ের রস স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এবার আমরা জানি লাউয়ের রস দ্বারা কি কি উপকৃত হওয়া যায়
  • যারা ওজন কমানোর অনেক পন্থা অবলম্বন করেছেন কিন্তু কোন কাজ হয় না তারা নিয়মিত প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লালের রস খেতে শুরু করুন। লাউয়ের রস খুব দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • যাদের হজম শক্তি কম তাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে লাউয়ের রস বেশ কার্যকারী।
  • যাদের পেটে বিভিন্ন রকমের সমস্যা রয়েছে তারা লাউয়ের রস খাওয়ার ফলে সমস্যাগুলো আস্তে আস্তে দূর হতে শুরু করে।
  • যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে কোনভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয় না তারা নিয়মিত সকালে লাউয়ের রস খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে খুব সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা চলে যাবে।
  • যাদের ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে তারা লাউয়ের রস খাওয়ার ফলে রক্তচাপের সমস্যা আস্তে আস্তে কমতে থাকে।
  • লাউয়ের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে এবং শরীরের তাপ প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • লাউয়ের রস হার্ট সুস্থ রাখে এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা লাউয়ের রস পান করার ফলে লিভারের সমস্যা আস্তে আস্তে দূর হতে থাকে এবং লিভার পরিষ্কার হয়ে যায়।
  • লাউ এর রসে ভিটামিন সি এবং এন টক্সিজেন আছে যা ত্বকের বয়স কমায় এবং চেহারা থেকে বার্ধক্য চাপ দূর করে দিয়ে ত্বককে সুন্দর রাখে।
  • মানুষের শরীরে অনেক ধরনের বিষাক্ত টক্সিন থাকে সেই টক্সিক থাকার কারণে পেশাব করার সময় জ্বালাপোড়া করে লাভের রস টক্সিন দূর করতে সক্ষম যার ফলে পেশাবের জ্বালাপোড়া দূর হয়ে যায়।
  • লাউয়ের মধ্যে সেডাটিভ নামক উপাদান থাকে এই উপাদান মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা মানসিক চাপে রয়েছে তারা লাউয়ের রস খাওয়ার ফলে মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়।
  • লাউয়ের রস এবং সামান্য পরিমাণ তিল একসাথে মিশিয়ে খাওয়ার ফলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • লাউয়ের রসে ভিটামিন ডি থাকে। ভিটামিন ডি চুল পাকা রোধ করতে শক্তিশালী।
  • লাউয়ের রস গরম কালে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। গরম কালে অতিরিক্ত ঘামার কারণে শরীরে পানির ঘাটতি পরে লাভের রহস্যে ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করে।
লাউ এর রস একটু তিতো ভাব থাকে যার কারণে আপনি যদি শুধু লাভের রস খেতে না পারেন তাহলে তার সাথে মধু মিক্স করে নিবেন এতে করে আপনার খাওয়া সহজ হবে। যদি আপনি ঠিকমত খেতে না পারেন তাহলে তিতো ভাবের কারণে বমি হতে পারে। বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। এমনকি যদি হজম শক্তি কম হয় তাহলে পেটের ডায়রিয়া হতে পারে।

এজন্য লাউয়ের রস খাওয়ার আগে ভালোভাবে ভেবে নিবেন আপনি বাস্তবে খেতে পারবেন নাকি খেতে পারবেন না।

লাউ এর বিচির উপকারিতা

লাউ এমন একটি সবজি তার বিচিও আমাদের জন্য উপকারী। আমরা এই বিচি অনেকে ফেলে দেই। এই বিচি থেকে এমন এমন উপকারিতা আমরা পেতে পারি তা আমাদের কল্পনার বাহিরে লাউয়ের বিচিতে ওমেগা 3, ফেটি অ্যাসিড,ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। লাউয়ের বিচি শুকিয়ে গুড়ো করে আপনি সেইগুলো সকালে খালি পেটে পানি এবং মধু দিয়ে গুলে খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়ে যায়।

বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।লাউয়ের বিচি মূলত ঔষধি গুনাগুনের দ্বারা সমৃদ্ধ।আমাদের উচিত হবে লাউয়ের বিচি ফেলে না দিয়ে তা শুকিয়ে গুঁড়ো করে সেগুলো খাওয়ার চেষ্টা করা এতে করে আমাদের পেটের সমস্যা দূর হবে এবং মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে।

লাউ খেলে কি ঠান্ডা লাগে

লাউ এমন একটি সবজি যা আপনি বছরের প্রতিটি মাসে এবং প্রতিদিনই খেতে পারবেন। লাউ খাওয়ার ফলে কখনো ঠান্ডা লাগে না। লাউয়ের ভিতরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকে যা শরীর মস্তিষ্ক এবং পেটকে ঠান্ডা রাখতে ভীষণ কার্যকরী। গরমকালে লাউ খাওয়ার ফলে শরীর বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে নিরাপদ থাকে।

বিশেষ করে যাদের পেশাবের জ্বালাপোড়া করে তারা সারা বছরে লাউ খেতে পারবেন। অনেকে ভেবে থাকেন শীতকালে লাউ খাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। শীতকালে লাউ খাওয়ার ফলে বরং সমান উপকৃত হওয়া যায়। শীতকালে মানুষের সাধারণত শরীর চর্চা অনেকটা কমে যায় যার ফলে ওজন বাড়তে থাকে।


নিয়মিত শীতকালে লাউ খেলে ওজন স্বাভাবিক থাকে এবং ওজন কমতেও সাহায্য করে। শীতকালে কিছু রোগ বেশি দেখা যায় যেমন জ্বর কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের সমস্যা লাউ খাওয়ার ফলে এই সমস্যাগুলো থেকে আপনাকে মুক্ত রাখবে। গরমকালে লাউয়ের দ্বারা উপকৃত বেশি হওয়া যায় এবং শীতকালে লাউ দ্বারা আপনি সেই সবই উপকারিতা পাবেন যেগুলো আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন।

তাই আপনার উচিত হবে গরমকালে লাউ খাওয়ার প্রতি যথেষ্ট পরিমাণে আকৃষ্ট হওয়া এবং শীতকালে মধ্যম আকারে লাউ খাওয়া।

লাউ সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর

১ প্রশ্ন লাউ খেলে কি ঘুম হয়?

উত্তর

লাউয়ের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকে যার শরীরকে এবং মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে কার্যকরী। এজন্য লাউ খেলে অনিদ্রা সমস্যা দূর হয় এবং ঠিকমতো রাতে ঘুম হয়।

২ প্রশ্ন ওজন কমাতে লাউ জুস কখন খাওয়া উচিত?

উত্তর

ওজন কমানোর জন্য আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লাউয়ের জুস খাওয়ার চেষ্টা করবেন। খালি পেটে লাউয়ের জুস খাইলে তাড়াতাড়ি ওজন কমে।

৩ প্রশ্ন প্রতিদিন লাউ খাওয়া যাবে কি?

উত্তর

আপনি প্রতিদিন কিছু পরিমাণ করে তরকারি রান্না করে লাউ খেতে পারবেন অথবা লাভের জুস করেও খেতে পারবেন বা লাউ পাতার শাক খেতে পারবেন। এই তিন পদ্ধতিতেই পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে।

৪ প্রশ্ন লাউ শাকে কি ভিটামিন আছে?

উত্তর

লাউ শাকের মধ্যে ভিটামিন সি,ভিটামিন ডি,আয়রন,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ফলিক এসিড,ফাইবার থাকে যেগুলো প্রত্যেকটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও লাউয়ের শাঁক খাওয়ার ফলে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি হতে থাকে।

৫ প্রশ্ন লাউ এর ইংরেজি নাম কি?

উত্তর

লাউ এর ইংরেজি নাম হচ্ছে Bottle gourd

শেষ কথা

লাউ আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। সবজি লাউ খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রকমের উপকারিতা গুলো আমরা পেতে পারি তাই আমাদের উচিত হবে সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন খাবারের তালিকায় লাউকে যুক্ত করা।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মধ্যে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও লাউ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পায় এবং লাউ খাওয়ার দ্বারা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url