গোলাপ ফুলের অপকারিতা ও উপকারিতা- গোলাপ পাতার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি কি গোলাপ ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে গোলাপ ফুলের উপকারিতা - গোলাপ ফুলের চা এর উপকারিতা এবং গোলাপ ফুল দিয়ে রূপচর্চা - গোলাপের পাপড়ি গুড়া দিয়ে রূপচর্চা নিয়ে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে গোলাপ ফুল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও আপনি পোষ্টের মধ্যে পাবেন গোলাপের পাপড়ি খেলে কি হয় - গোলাপের পাপড়ি গুড়া করার নিয়ম এবং গোলাপ গুড়ার ফেসপ্যাক - গোলাপের পাপড়ি গুড়ার উপকারিতা ও গোলাপ ফুলের অপকারিতা - গোলাপের জাতের নাম,গোলাপ পাতার উপকারিতা.- গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য,গোলাপ ফুল কখন হয় - গোলাপ গাছের পরিচর্যা কিভাবে করবেন সেসব সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
পৃথিবীতে যত ফুল রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও পছন্দের ফুল হচ্ছে গোলাপ। গোলাপ ফুলের ঘ্রাণ আমাদেরকে বিমোহিত করে। গোলাপ শুধু ফুল হিসেবেও যথেষ্ট নয় বরং গোলাপ ফুল দিয়ে রূপচর্চা করা যায় এবং গোলাপ ফুল আমাদের আরো বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। গোলাপ ফুল বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন :: গোলাপ জলের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রতিটি কালার আমাদের পছন্দের এবং মনকে খুশি করে। গোলাপ ফুলকে সকল ফুলের রানী বলা হয়।
গোলাপ ফুলের উপকারিতা - গোলাপ ফুলের চা এর উপকারিতা
গোলাপ ফুল ব্যবহার করে আমরা অনেকভাবে উপকৃত হতে পারব। চলুন এবার আমরা জানি গোলাপ ফুল দ্বারা কি কি উপকৃত হওয়া যায় গোলাপ ফুল মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- গোলাপ ফুলের মধ্যে যে আয়ুর্বেদ ঘ্রাণ রয়েছে তা মানসিক শান্তি হিসেবে কাজ করে।
- গোলাপ ফুলের পাপড়ি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি খাওয়ার ফলে ঠান্ডা লাগার মত সমস্যাগুলো যেমন রয়েছে কাশি সর্দি এগুলো দূর হয়।
- শুকনো গোলাপের পাপড়ি পানিতে ফুটিয়ে গড়গড়া করলে গলা ব্যথা কাশি ভালো হয়।
- ক্ষতস্থান শুকাতে গোলাপের পাপড়ি গুঁড়ো করে ক্ষতস্থানে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ক্ষত শুকিয়ে যায়।
- শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব দূর করতে পানির সাথে গোলাপ ফুল মিশিয়ে গোসল করলে শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব অনেকটা কমে যায়।
- গোলাপের পাপড়ি এবং পানি দিয়ে পেস্ট বানিয়ে তা খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়।
- গোলাপের পাপড়িতে ফাইবার থাকে এজন্য গোলাপের পাপড়ি খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়ে স্বস্তি মিলে।
- গোলাপের পাপড়ি দিয়ে আপনি ফেস প্যাক বানিয়ে রূপচর্চা করতে পারবেন। গোলাপের পাপড়ি রূপচর্চার জন্য প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত।
- গোলাপের পাপড়ি দিয়ে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা ও বমি বমি ভাব দূর হয়।
- গোলাপের পাপড়ি নিয়মিত খাওয়ার ফলে যারা মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন তাদের মাসিকের সমস্যা ভালো হয়ে যায়।
- খাবারের স্বাদ বাড়াতে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। গোলাপের পাপড়ি দিয়ে রান্না করার ফলে খাবারের স্বাদ বৃষ্টি হয় এবং সুন্দর একটি ঘ্রাণ বের হয়।
- যারা ওজন কমানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কোনোভাবে ওজন কমাতে পারছেন না তারা প্রতিদিন সকালে তাজা গোলাপ ছিঁড়ে খাবেন। এভাবে গোলাপ খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত ওজন কমে যায়।
- নিয়মিত একটি করে গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকা যায়।
- প্রতিদিন গোলাপ ফুল খাইলে ত্বক সুস্থ থাকে এবং চেহারা হতে বলিরেখা দূর হয়ে যায়। সাথে বয়সের ছাপ অনেকটা কমে যায়।
- মেকআপ করার আগে আপনি গোলাপের পাপড়ি এবং পানি দিয়ে পেস্ট বানিয়ে টোনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। গোলাপের পাপড়ি চেহারা থেকে ময়লা তৈলাক্ত ভাব এবং মৃত কোষ দূর করে দেয়।
- দুধ এবং গোলাপকে একসাথে গরম করে খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা এবং আলসারের সমস্যা কমে যেতে শুরু করে।
- ওর্ডড্রপে জামা কাপড় রাখার সময় কয়েকটি গোলাপ বা গোলাপের পাপড়ি রেখে দিন তাহলে আপনার জামাকাপড় সুগন্ধিময় হয়ে থাকবে।
- মাঝেমধ্যে বাসায় বা প্রিয়জনকে গোলাপ ফুল দিলে খুব সহজে খুশি হয়ে যায়।
- গোলাপ ফুল পিষে দাঁতের ব্যবহার করলে দাঁত শক্ত হয় এবং দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়া থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে চা বানিয়ে সেই চা খাইলে অনেক বেশি উপকৃত হওয়া যায় এবং গোলাপের পাপড়ি চায়ে ব্যবহার করলে চায়ের ঘ্রাণ অনেক বেশি সুন্দর হয়। গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে চা বানিয়ে খাইলে ঠান্ডা লাগার মতো যেসব সমস্যা রয়েছে যেমন সর্দি কাশি এগুলো ভালো হয়ে যায় ও গলা ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
ওজন কমাতে এই চা বেশ কার্যকারি।গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা ও ডায়রিয়ার সমস্যা ভালো হয়ে যায় কারণ এই চা আয়ুর্বেদিক চা হিসেবে ধরা হয়। গোলাপের চায়ে ভিটামিন সি থাকে এইটা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খাওয়ার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
অন্য চা কফিতে ক্যাফেইন থাকে কিন্তু গোলাপের পাপড়ি দিয়ে যে চা বানানো হয় সেটাতে ক্যাফেইন যার কারণে এটি ক্ষুধা নিবারণ করে।শরীরের বিভিন্ন ব্যথা দূর করতে এই চা বেশ কার্যকরী। এই চা মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করে। যদি বমি বমি ভাবের সমস্যা হয় তাহলে বমি বমি ভাব দূর করে।
এসব উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন গোলাপের পাপড়ি খাওয়ার অথবা গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চা খাওয়ার। দুই ভাবে খাওয়ার ফলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন।
গোলাপ ফুল দিয়ে রূপচর্চা - গোলাপের পাপড়ি গুড়া দিয়ে রূপচর্চা
গোলাপ ফুল দিয়ে রূপচর্চা করার প্রচলন বহুকাল ধরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। রূপচর্চা করার জন্য গোলাপ ফুলের বিকল্প অন্য কিছু হতে পারে না। এটি একদম প্রাকৃতিক হওয়ায় রূপচর্চা করার ফলে অনেক বেশি উপকৃত হওয়া যায় এবং ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গোলাপের পাপড়ি ত্বককে নরম করে।
ব্রণের দাগ দূর করার পাশাপাশি ব্রণ হওয়া থেকেও বাধা দেয়। মেকআপ করার আগে আপনি টোনার হিসেবেও এবং মশ্চারাইজার ক্রিমের সাথেও আপনি গোলাপের পাপড়ি গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারবেন। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল এবং চেহারা থেকে বিভিন্ন রকমের কালো দাগ দূর করতে গোলাপের পাপড়ি সক্ষম।
রোদে বের হওয়ার আগে গোলাপের রস ব্যবহার করলে এটা আপনার জন্য সানস্ক্রিন হিসেবে কাজে দিবে।গোলাপের পাপড়ির গুড়ো অথবা শুধু গোলাপের পাপড়ি হাতে ব্যবহার করার ফলেও হাত অনেক বেশি মসৃণ এবং সুন্দর হয়। গোলাপের পাপড়ির বড় একটি ভূমিকা হচ্ছে তা চেহারা থেকে বার্ধককে ছাপ দূর করার পাশাপাশি বলিরেখাও দূর করে দেয়।
ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণে দেখতে অনেক বেশি খারাপ লাগে। গোলাপের পাপড়ি ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করে দীর্ঘ সময় ধরে ত্বককে আদ্র রাখতে পারে। গোলাপের পাপড়ি দিয়ে ফেস মাক্স বানিয়ে ব্যবহার করলে বাজার থেকে কিনে আনা মাস্কের তুলনায় অনেক বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চেহারায় রূপচর্চা করলে চেহারা অনেক বেশি লাবণ্য ও গোলাপি হয়ে উঠে যা অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও সুন্দর দেখায়।
আরো পড়ুন :: গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা ও অপকারিতা
খুব দ্রুত এবং অল্প সময়ের মধ্যে গোলাপের পাপড়ি ত্বককে উজ্জ্বল করে এজন্য আপনার উচিত হবে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে অথবা গোলাপের পাপড়ির গুরো দিয়ে রূপচর্চা করা। এই পদ্ধতিতে রূপচর্চা করলে আপনি অন্য কোন কিছু দিয়ে রূপচর্চা করার তুলনায় বেশি ভালো ফলাফল পাবেন এবং আপনার চেহারা অনেক বেশি সুন্দর ও লাবণ্যময় হবে।
গোলাপের পাপড়ি খেলে কি হয় - গোলাপের পাপড়ি গুড়া করার নিয়ম
গোলাপের পাপড়ি খাওয়ার ফলে অনেক রকমের উপকৃত হওয়া যায়। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা গোলাপের পাপড়ি আমাদের শরীরের জন্য কতখানি উপকারি। গোলাপের পাপড়ি খাইলে ত্বক আদ্র থাকে এবং এবং বিভিন্ন রকমের সমস্যা থেকে বাঁচা থাকা যায়। গোলাপের পাপড়িতে প্রচুর পরিমাণের ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
হজমশক্তি বাড়াতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে এবং পেটের ব্যথা ও শরীরের বিভিন্ন রকমের ব্যথাও গোলাপের পাপড়ি দূর করতে পারে। কোথাও কেটে ছিঁড়ে গেলে গোলাপের পাপড়ি সেখানে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত কাটাছেঁড়া শুকিয়ে যায়। মাইগ্রেনের সমস্যার জন্য গোলাপের পাপড়ি বন্ধুস্বরপ।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে গোলাপের পাপড়ি বেশ কার্যকরী। গোলাপের পাপড়ি স্ট্রেস কমাতে এবং মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে। গোলাপের পাপড়ি ও ফুটন্ত পানি গরম করে খাইলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর হয়।গোলাপের পাপড়ি ওজন কমাতেও সক্ষম বরং অনেক বেশি অন্য উপাদানের তুলনায় ওজন কমাতে পারে।
গোলাপের পাপড়ি খেলে এসব উপকারিতা গুলো পাওয়া যায়। এই উপকারিতা গুলো আমাদের শরীরের জন্য খুব জরুরী এবং মানসিকভাবেও অনেকটা জরুরী। গোলাপের পাপড়ি গুড়ো করার জন্য প্রথমে আপনাকে ফুল থেকে পাপড়ি আলাদা করে নিতে হবে। এরপরে সেসব কোন একটি পাত্রে রেখে পেপার বা কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখবেন।
রোদে রেখে শুকানো থেকে বিরত থাকুন। রোদে শুকানোর ফলে পাপড়ির মশ্চরাইজার কমে যায়। পেপার দিয়ে ছয় থেকে সাত দিন ঢেকে রাখলে তা অনেক সুন্দর ভাবে শুকিয়ে যাবে। এরপর ব্লেন্ডারে নিয়ে গুঁড়ো করে নিবেন। একবারে গুড়ো করবেন না কয়েক সেকেন্ড গুড়ো করার পরে থামবেন। এভাবে কয়েকবারে গুড়ো করলে একেবারে মিহি গুড়ো হয়ে যাবে।
তারপরে তা একটি কাচের পাত্রে রেখে সংরক্ষণ করবেন। ১৫ দিন বা ২০ দিন পর পর রোদে দিবেন তাহলে গোলাপের পাপড়ি অনেক ভালো থাকবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
গোলাপ গুড়ার ফেসপ্যাক - গোলাপের পাপড়ি গুড়ার উপকারিতা
গোলাপের পাপড়ির গুঁড়ো দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।
- গোলাপের পাপড়ি এবং চন্দন মাটি একসাথে পেস্ট বানিয়ে চেহারার উপর ব্যবহার করবে। এভাবে কিছু সময় রেখে দিবেন তারপরে ধুয়ে ফেলবেন।
- গোলাপের পাপড়ির গুঁড়ো,মধু ও লেবুর রস একসাথে করেও আপনি চেহারার উপরে ব্যবহার করতে পারবেন। গোলাপের পাপড়ি এবং লেবুতে ভিটামিন সি থাকায় ভালো কার্যকারিতা বেশি হয়।
- গোলাপের পাপড়ির গুঁড়ো এবং কমলার খোসার একসাথে মিক্স করেও চেহারায় ব্যবহার করলে নতুন কোষ জন্মায়।
- গোলাপের পাপড়ি ও মধু একসাথে পেস্ট করে ব্যবহার করলে চেহারা থেকে তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়।
- দুধ এবং গোলাপের পাপড়ি একসাথে মিক্স করে ব্যবহার করলে চেহারা থেকে ব্রণের দাগ দূর হয় এবং অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়।
- শুধু গোলাপের পাপড়ির গুড়ো পানি দিয়ে পেট বানিয়ে মুখে ব্যবহার করলে চেহারায় লাবণ্য ভাব আসে।
- অলিভ অয়েল এবং গোলাপের পাপড়ি গুলো একসাথে করে চেহারায় ব্যবহার করবেন। তারপর কিছু সময় রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন এভাবে ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ হয়।
- শুধু গোলাপের পাপড়ির রস চেহারাতে ব্যবহার করলেও চেহারা অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়।
- গোলাপের পাপড়ি এবং পানি একসাথে কুসুম গরম করে সকালে এবং রাত্রে দুইবার করে চেহারায় মাসাজ করবেন।
- বেসন এবং টক দই ও গোলাপের পাপড়ি একসাথে করে চেহারায় ব্যবহার করলে চেহারা থেকে ময়লা দূর হয়।
আপনি এসব পদ্ধতিতে গোলাপের পাপড়ির গুড়া দিয়ে ফেসপ্যাক করে চেহারায় ব্যবহার করতে পারবেন। এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন এবং আপনার চেহারা আস্তে আস্তে উজ্জ্বল ও লাবণ্য হতে শুরু করবে।
আরো পড়ুন :: মেকাপের জিনিসের নাম এবং দাম
গোলাপের পাপড়ি দিয়ে আপনি রূপচর্চা করার পাশাপাশি চা বানিয়েও খেতে পারবেন। গোলাপের পাপড়িগুলো অনেক বেশি আমাদের জন্য উপকারি। গোলাপের পাপড়িগুলো বিভিন্ন রকমের ব্যাথা দূর করতে পারে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে দেয়। এছাড়াও ক্ষতস্থানের ক্ষত খুব দ্রুত শুকাতে গোলাপের পাপড়ি গুরু বেশ কার্যকরী।
গোলাপের পাপড়ির গুড়ো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে রূপচর্চার জন্য। রূপচর্চার জন্য গোলাপের পাপড়ির মত অন্য কিছু হতে পারে না।
গোলাপ ফুলের অপকারিতা - গোলাপের জাতের নাম
গোলাপ ফুল আমাদের জন্য অনেক উপকারী হওয়ার পাশাপাশি গোলাপ ফুলের কিছু অপকারী দিক রয়েছে। গোলাপ ফুল সুগন্ধিযুক্ত এজন্য গোলাপ ফুল ব্যবহার করার কারণে অনেকের এলার্জি সমস্যা হতে পারে। গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে তেল বানিয়ে ব্যবহার করার কারণে ত্বকে বিভিন্ন রকমের চুলকানি,ফুসকুড়ি, জ্বালা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গোলাপ ফুলের তেল চোখে ব্যবহার করলে অথবা গোলাপ ফুলের পাপড়ির গুঁড়ো চোখে ব্যবহার করলে চোখের জ্বালা বেড়ে যেতে পারে বা চোখ দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। যাদের পেটের হজম শক্তি একেবারে কম তারা গোলাপের পাপড়ি থেকে বিরত থাকবেন। গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন রকমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে গোলাপ ফুল খাবেন না। অতিরিক্ত গোলাপ ফুল খেলে ডায়রিয়া সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গোলাপের পাপড়ি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি তবে খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খাবেন যেন গোলাপটি একেবারে তরতাজা হয়। অনেকদিন ধরে ফেলে রাখা গোলাপ কখনোই খাবেন না।
এগুলোর পাপড়িতে জীবাণু জমে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। গোলাপ অনেক জাত হয়ে থাকে। বাড়িতে সাধারণত লাল হলুদ কালারের গোলাপের চারা লাগানো হয়। এছাড়াও আরো অনেক রকমের গোলাপ রয়েছে
রঙের ফ্লোরিবানডা গোলাপ আইসবার্গ, মিশ্র রঙের তিমি, ফিউলিয়ার, মিশ্র গোলাপি লাল পারফেক্টা, দোরঙা পিগালি ও আসিরিয়া, একহারা গোলাপি পাপড়ির অ্যাঞ্জেলিনা, কমলা–গোলাপি বলের মতে ফুলের ড্রেক কোস্টার, লাল রঙের মার্গো, মিনিয়েচার হলুদ ও স্ট্রাইপ, কালো গোলাপ, বেগুনি গোলাপ, লাল রঙের বড় ফুলের মিরান্ডি, মিস্টার লিংকন,
লাল সুগন্ধি ফুলের ক্রিমসন গ্লোরি, গাঢ় গোলাপি বড় ফুলের তাজমহল, গন্ধহীন হলুদাভ সাদা ভার্গো, লাল রঙের বড় ফুলের পাপা মিলান্ড, হলুদাভ–গোলাপি হালকা সুগন্ধের রাজা রামমোহন রায়, হলদে গোলাপি পিস অব ফায়ার, বিডিআর সাদা, সবুজ গোলাপ, কমলা রঙের সামার হলিডে, লাল রেখাযুক্ত টাটা সেন্টেনারি,
মিষ্টি কমলা রঙের আঁটসাঁট ফুলের টোয়েন্টি ডেজ, হালকা হলুদ রঙের ম্যাডাম বাটারফ্লাই, দুধে আলতা রঙের, এসব প্রত্যেকটি রংয়ের গোলাপি অনেক বেশি সুন্দর এবং সুগন্ধিময়।
গোলাপ পাতার উপকারিতা - গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য
গোলাপ ফুলের পাশাপাশি গোলাপের পাতাও আমাদের জন্য উপকারী। ক্ষতস্থানে গোলাপ পাতা পিষে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ক্ষত ভালো হয়ে যায়। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে এবং চেহারা থেকে ডার্ক সার্কেল দূর করতে গোলাপের পাতা সাহায্য করে। যাদের চোখ ফোলার সমস্যা রয়েছে বা চোখের নিচে ফুলে গেছে তারা গোলাপের পাতা পিছে ফোলা স্থানে ব্যবহার করলে ফোলা ভালো হয়ে যায়।
গোলাপের পাতা ত্বকের জন্য কার্যকারী। গোসলের সময় গোলাপের পাতা পানিতে দিয়ে গোসল করলে অনেক ভালো রিফ্রেশমেন্ট পাওয়া যায় এবং শরীর থেকে ক্লান্তি দূর হয়। গোলাপের পাতাতে ভিটামিন সি থাকে এজন্য আপনি সানস্ক্রিন হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও গোলাপের পাতা ব্রনের দাগ তুলতে এবং মুখে ব্রণ বের হওয়া থেকে রক্ষা করে।
আপনি গোলাপের পাপড়ি গুঁড়ো করার সময় গোলাপের পাতাও একসাথে গুঁড়ো করতে পারেরন। এভাবে ব্যবহার করলেও উপকৃত হওয়া যায়। গোলাপের পাতা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কখনো অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করবেন না। অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে হীতের বিপরীত হতে পারে। সব সময় অল্প করে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন তাহলে উপকৃত হতে পারবেন।
অন্যথায় ক্ষতিকর দিকগুলো বয়ে নিয়ে আনবে।অন্য ফুলের তুলনায় গোলাপ ফুল সবার কাছে অনেক বেশি প্রিয়। গোলাপ ফুলকে ফুলের রানী বলা হয়। গোলাপ ফুল সব সময় ভালোবাসার প্রতীক বহন করে। গোলাপ ফুলের সুগন্ধ আমাদের সবার মনকে খুশি করে এবং গোলাপ ফুল দিয়ে অনেক রকমের উপকৃত হওয়া যায়।
গোলাপ ফুলের সবচেয়ে ভালো বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তা বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে এর ফলে সবাই গোলাপ ফুলকে সব কালারের পছন্দ করে। গোলাপ ফুল দিয়ে আতর তৈরি করা হয়। রূপচর্চার জন্য গোলাপ ফুল আরো বেশি উপকারে। গোলাপ ফুল মানুষের মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট। এজন্যে চেষ্টা করবেন মাঝে মধ্যে প্রিয়জনকে গোলাপ ফুল উপহার দেয়ার।
অথবা নিজেই নিজেকে উপহার দেওয়া এতে করে মন খুব ভালো হয়ে যাবে।
গোলাপ ফুল সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর
১ প্রশ্ন গোলাপ কি ঔষধি গাছ?
উত্তর
গোলাপ কোন ওষুধে কাজ নয় কিন্তু গোলাপের পাতা এবং গোলাপ ফুল দিয়ে বিভিন্ন রকমের সমস্যা থেকে উপকৃত হওয়া যায়. বিশেষ করে পেটের সমস্যা,কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা,হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য শুকাতে গোলাপের পাতা এবং গোলাপ অত্যন্ত কার্যকারী।
২ প্রশ্ন গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চা বানানো যাবে কি?
উত্তর
গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়ার ফলে অনেক বেশি উপকৃত হওয়া যায় এবং চা অন্য চায়ের তুলনায় অনেক বেশি সুঘ্রাণ যুক্ত হয়। গোলাপের পাপড়ি দিয়ে চা বানালে সেটা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হয়।
৩ প্রশ্ন গোলাপ ফুলের গন্ধ কেমন?
উত্তর
গোলাপ ফুলের ঘ্রান মিষ্টি। প্রত্যেকটি মানুষেরই পছন্দ। অনেক রকমের ফুল আছে যেগুলো ঘ্রাণ মানুষের পছন্দ না কিন্তু গোলাপ এমন একটি ফুল যার ঘ্রাণ সব মানুষেরই পছন্দ।
৪ প্রশ্ন গোলাপ গাছের জন্য কোন মাটি ভালো?
উত্তর অনেক বেশি উষ্ণ এবং আদ্র মাটিতে গোলাপের গাছ ভালো হয় না। এমন মাটিতে গোলাপের গাছ লাগানোর চেষ্টা করবেন যে তার তাপমাত্রা ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে এবং সেই মাটি উর্বর এবং দোআঁশ মাটি হয় এই মাটিতে গোলাপের গাছ সবচেয়ে ভালো হয়।
শেষ কথা
গোলাপ ফুল যেমন ভাবে আমাদের মন ভালো করতে পারে তেমনভাবে আমাদের শরীরের জন্য উপকারিতা বয়ে নিয়ে আনে। তাই চেষ্টা করবেন নিজের বাসায় গোলাপ ফুল চাষ করার অথবা মাঝে মধ্যে গোলাপ ফুল কিনে এনে বাসায় রাখার তাহলে আপনি গোলাপ ফুলের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবেন এবং মনও ভালো থাকবে।
আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও গোলাপ ফুলের যাবতীয় উপকারিতা জানতে পারে।
সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url