ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪- ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন পদ্ধতি
প্রিয় পাঠক আপনি কি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টে আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন করার নিয়মও বলবো। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি পাবেন ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড কিভাবে করে ডাউনলোড কিভাবে করে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন। চলুন কথা না বাড়িয়ে এবার পোস্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
যারা গাড়ি চালায় তাদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স বলতে বোঝায় আপনি গাড়ি চালানোর জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন কিনা সেটার ছাড়পত্র। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কিছু কাগজ এবং কিছু পদ্ধতি থাকে যেগুলো ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করা যায় না এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করা যায় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আমাদেরকে প্রথমে কোন পদ্ধতিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে হবে।
আরো পড়ুন :: ব্যাংক এশিয়ার যাবতীয় ব্যাংকিং সেবা
যাতে করে আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে পারি এবং কাজটা সহজে হয়ে যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আমরা দালালের কাছে গিয়ে থাকি এতে করে দেখা যায় আমাদের অনেক টাকা নষ্ট হয় এবং অনেক সময় আপনি বিপাকে পড়তে পারেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার জন্য আপনার প্রথমে কিছু শর্ত আছে আপনি যদি সেই শর্তগুলো পার করতে পারেন তাহলে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। শর্তগুলো হচ্ছে-
- শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।
- যে ব্যক্তি আবেদন করবে তাকে সর্বনিম্ন অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে।
- লাইসেন্স আবেদনকারীর বয়স ২১ হতে হবে।
- মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ হতে হবে আবেদনকারীকে। অর্থাৎ কোন পাগল বা প্রতিবন্ধী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে না।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য যেসব কাগজপত্র জরুরী সেসব নিচে উল্লেখ করা হলো।
- নির্ধারিত ফর্ম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সত্যায়িত করতে হবে।
- নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
- তিন কপি স্ট্যাম্প এবং এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে।
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ লাগবে।
আপনার এইসব কাগজ থাকলে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ হচ্ছে নিয়ম এখন আমি নিচে ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন সম্পর্কে বলব। তারপর ধারাবাহিকভাবে স্মার্ট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি আর ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা এসব সব সম্পর্কে আমি নিচে আলোচনা করব।
ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আপনি সরাসরি অফিসে গিয়েও আবেদন করতে পারবেন এবং অনলাইনেও আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার পদ্ধতি
- প্রথম শর্ত হচ্ছে বিআরটিএ এর যে ওয়েবসাইট আছে সে ওয়েবসাইটে যাওয়া এই তো সেই ওয়েবসাইটের লিংক https://bsp.brta.gov.bd/
- এই লিংকে গিয়ে আপনাকে ফোন নাম্বার দিয়ে আবেদন করতে লগইন করতে হবে।
- আপনি এই আবেদন করতে গেলে আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকা লাগবে।
- আপনাকে জন্মতারিখ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশন যে নাম্বার আছে সে নাম্বার দিতে হবে।
- তারপর আপনাকে মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে নিবন্ধনে ক্লিক করতে হবে। ইমেইল চেক করলে আপনার সেখানে একটি মেসেজ যাবে সেই লিংকে ক্লিক করলে আপনার ভেরিফাই হয়ে যাবে।
- ইংরেজিতে আপনার ঠিকানা অর্থাৎ পিতা,মাতার নাম আপনার। লিঙ্গ,স্বামী,স্ত্রী যদি থাকে সেটা। শিক্ষাগত যোগ্যতা পেশা সব আপনাকে সেখানে দিতে হবে।
- এরপরে পেমেন্টের পালা। এগুলো এসব সব হয়ে গেলে আপনাকে একটা স্ক্যান কপি দিবে সেটা কপি করে রাখতে হবে।
- এরপর আপনি অনলাইনের ফি জমা দিতে হবে সেটা বিকাশ বা যেটার মাধ্যমে দিবেন সেটা সিলেক্ট করে সেখানে যে পরিমাণ টাকা বলবে সে পরিমাণ টাকা বিকাশ থেকে বা নগর থেকে পেমেন্ট করে দিলেই আপনার আবেদন হয়ে যাবে।
বর্তমানে অনলাইনে আবেদন করা সবচেয়ে সহজ। এ জন্য দালালের নিকটবর্তী না হয়ে অনলাইনে আবেদন করুন। এতে করে আপনি নিরাপদ থাকবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড
আপনি স্মার্ট কার্ড লাইসেন্সের জন্য আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। নরমাল লাইসেন্সের জন্য ভিন্ন নিয়ম যেটা আমি উপরে বলেছি এবার আমি স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের ব্যাপারে বলব এবং কিভাবে ডাউনলোড করতে হয় সেটাও বলবো।
- নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করতে হবে।
- ডাক্তারের স্বাক্ষরকৃত সার্টিফিকেট থাকা লাগবে।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপির সত্যায়িত থাকতে হবে।
- নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন থাকতে হবে।
- নতুন তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
আপনি এসব আবেদন করার পরেই আপনার স্মার্ট কার্ড এর জন্য আপনি উপযুক্ত হবেন। আপনি যেভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করবেন সে পদ্ধতি হচ্ছে-
- ড্রাইভিং লাইসেন্স বা স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে তাদের ওয়েবসাইট অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আমি ওয়েবসাইটের লিংক উপরে দিয়ে দিয়েছি আপনি সেই একাউন্টে লগইন করে নিবন।
- লগইন করতে আপনার ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড নিবে।
আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স বা স্মার্ট কার্ড তখনি ডাউনলোড করতে পারবেন যখন আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দেয়ার পরে পাস করবেন।
- তারপরে আপনি লগইন করার পরে হাতের ডানে দেখবেন ইল আর্নার নাম দেখাচ্ছে সেটা ডাউনলোড করলেই আপনার হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন :: সোনালী ব্যাংকে কি কি সুবিধা পাওয়া যায়
এরপরে যখন আপনার স্মার্ট কার্ড আসবে তখন আপনি সেখান থেকে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গেলে আপনাকে আবেদনের দিতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের সময় ফি সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে।
- সাধারণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের
- স্মার্ট কার্ড।
- আপনি যদি সাধারন ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেন সে ক্ষেত্রে আপনি পেশাদার হলে আপনার জন্য ৩৪৫ টাকা লাগবে আর আপনি অপেশাদার হলে আপনার জন্য ৫১৮ টাকা লাগবে।
- আপনি স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করলে পেশাদার হলে আপনার লাগবে ১৬৭৯ টাকা আর অপেশাদার হলে আপনার লাগবে ২৫৪২ টাকা।
আপনি নিজে অনলাইনে আবেদন করলে এই টাকা লাগবে। আর আপনি যদি দালালের মাধ্যমে করেন সেক্ষেত্রে ভিন্ন বিষয় আপনার অনেক টাকা লাগতে পারে। দালালের মাধ্যমে না করায় আপনার জন্য সবচেয়ে উত্তম হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন
আপনি লিখিত পরীক্ষা দিতে গেলে আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে। প্রশ্ন একের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে। এ প্রশ্নের কোন নির্ধারণ নাই তবে এতটুকু শিওর থাকবেন আপনাকে যেসব প্রশ্ন করা হবে সেগুলো সব সহজ হবে। কোন কঠিন প্রশ্ন করা হয় না। এছাড়াও কিছু বই আছে যেগুলো আপনি বাজারে বা কোথাও খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন বা youtube এ ভিডিওতেও পাবেন।
আসলে প্রশ্ন তুলে ধরতে গেলে ২০০-৩০০ প্রশ্নের তুলে ধরা যায় যেখান থেকে আপনাকে হয়তো ২০ থেকে ২৫ - ৩০ টা প্রশ্ন করা হতে পারে। আপনি ২০০- ৩০০ করতে গেলে এমনিতে আপনি ঘাবড়াইয়া যাবেন বা আপনার মুখস্ত থাকবে না। এজন্য আমি প্রশ্ন না দিয়ে আপনাকে ধারণা দিলাম যে এরকমের প্রশ্ন আসতে পারে। এতে করে আপনার জন্য সুবিধা হবে।পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন রকমের চাপ বা কিছু নেই।
আরো পড়ুন :: কিভাবে ফেসবুক আইডি ডিলিট করতে হয়
আপনি ফ্রি ভাবে পরীক্ষা দিতে পারবেন এ বিষয়ে আপনি আর কোন চিন্তা নেই।
শেষ কথা
আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে থাকি যেসবের প্রথম পন্থা হচ্ছে দালাল ধরা বা দালালের মাধ্যমে করা। যেটা একেবারে উচিত নয়। বর্তমান সময়ের যুগ অনেক উন্নত হয়েছে। আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি ভালো ভাবে জেনে এখন নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
এজন্য আপনার উচিত নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিজের ঘরে বসে করা এবং কোন অবৈধ পন্থা অবলম্বন না করা। আমার এই পোস্ট যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু মহল এবং আত্মীয় স্বজনের মধ্যে শেয়ার করবেন এতে করে তারাও যেন উপকৃত হতে পারে।
সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url