ডাবের পানির অপকারিতা - ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আপনি কি ডাবের পানির উপকারিতা জানতে,চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টে আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ডাবের পানের উপকারিতা এবং ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে ডাবের পানি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
ডাবের পানির উপকারিতা
এছাড়াও আপনি পোষ্টের মধ্যে পাবেন ডাব খেলে কি গ্যাস হয়,ভরা পেটে ডাব খেলে কি হয় এবং ডাবের পানির অপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

গরম কালে ডাব আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ডাবের পানি আমাদের জন্য উপকারী হওয়ার পাশাপাশি ডাবের পানিতে রয়েছে খনিজ লবণ এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ডাবের পানি পান করার সাথে সাথে শরীরে এনার্জি কাজ করে এবং কলিজা প্রশান্তি লাভ করে। বিশেষ করে রক্তদানের পরে ডাব খাওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে যায়।


আমরা অনেক সময় অন্য পানীয় পান করে থাকি সেগুলোর পরিবর্তে ডাব পান করা অত্যন্ত উপকারী। ডাব যেকোনো সময় পাওয়া যায়। ডাবের দাম অতিরিক্ত বেশিও না আবার একেবারে কমও না মাঝারি অবস্থায় থাকে।

ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম - কখন ডাবের পানি খেলে বেশি উপকৃত হওয়া যায়

ডাব আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। ডাব খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে সেসব নিয়ম অনুসরণ করে ডাব খাওয়ার ফলে বেশি উপকৃত হওয়া যায়।
  • সব সময় চেষ্টা করবেন সকালে খালি পেটে ডাব খাওয়ার। সকালে খালি পেটে ডাব খাওয়ার উপকারিতা অন্য সময় ডাব খাওয়ার তুলনায় অনেক বেশি।
  • রাতে ডাব খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। রাতে ডাব খাওয়া উচিত নয়।
  • অতিরিক্ত গরম পরলে বা অতিরিক্ত শরীর থেকে ঘাম ঝরার কারণে সেই সময় আপনি ডাব খেতে পারেন।
  • রক্তদানের পরে ডাব খাওয়া অতি জরুরি। সেই সময় ডাব খাওয়ার ফলে শরীরে স্বাভাবিক একটি অবস্থা তৈরি হয়।
  • ডাব পান করার ক্ষেত্রে সব সময় একটি নির্দিষ্ট সময়ে পান করার চেষ্টা করবেন। নির্দিষ্ট সময়ে পান করার ফলে উপকারিতা দ্বিগুণ পাওয়া যায়।
  • ওর্য়াক আউট করার আগে অথবা ওয়ার্কআউট করার পরে ডাব খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে জিম করার পরে শরীরে ডাবের চাহিদা বেশি থাকে।
  • খাবারের আগেও আপনি ডাবের পানি খেতে পারবেন। এতে করে আপনার খাবার খাওয়ার প্রতি চাহিদা কম থাকবে এবং আপনার শরীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • ডাবের পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে চিনি, লবণ,বিট লবণ এগুলো কিছু মেশাবেন না। শুধু ফ্রেস ডাবের পানি খাবেন।
  • ডাবের পানি অতিরিক্ত সময় ধরে রেখে দেওয়ার পরে খাবেন না। ডাব কাটার সাথে সাথে পানি খেয়ে নিবেন।
  • সবসময় চেষ্টা করবেন কচি ডাব খাওয়ার। অতিরিক্ত বয়স খাওয়ার ফলে ডাবের পানির উপকারিতা কমে যায়।
  • কখনো অতিরিক্ত রোদ থেকে এসে সাথে সাথে ডাবের পানি খাবেন না। কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে তারপরে খাবেন।
আপনি এসব নিয়ম অনুসরণ করে ডাব খাওয়ার ফলে বেশি উপকৃত হতে পারবেন। তাই আপনার উচিত হবে ডাব খাওয়ার আগে এইসব নিয়ম গুলো অনুসরণ করা।

ডাবের পানির উপকারিতা - খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা

ডাবের পানিতে অসংখ্য গুনাগুন এবং উপকারিতা রয়েছে। ডাবের পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চলুন এবার ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতাগুলো জানি
  • যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে ডাবের পানি তাদের জন্য অনেক উপকারি। ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
  • ডাবের পানিতে ডাইইউরেকটিক নামক উপাদান থাকে যা শরীরে ইনফেকশন তৈরি করে এমন ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।
  • আমাদের প্রত্যেকের শরীরে ক্ষতিকর টক্সিন থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করে দেয় যার ফলে গরমকালে শরীর সুস্থ এবং এনার্জি সম্পূর্ণ থাকে।
  • নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
  • যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তারা নিয়মিত ডাবের পানি খাবেন। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে পেট দীর্ঘ সময় ধরে ভরা থাকে এবং ক্ষুধা লাগার প্রবণতা অনেকটা কমে যায় ও ডাবের পানিতে কোন ফ্যাট নেই।
  • ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য ডাব একটি ওষুধ বলা যায়। ডাবের পানি শরীরের চিনি শোষণ করে নিতে সক্ষম। যার ফলে ডায়াবেটিসের রোগীর ডাব খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • গরমকালে অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার কারণে শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। ডাবের পানি পান করার ফলে শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে।
  • যাদের বমি বমি ভাবে সমস্যা রয়েছে সেই সময় ডাবের পানি খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাবের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • ডাবের পানি প্রাকৃতিক স্যালাইন হিসেবে ধরা হয় এবং ডাবের পানিতে প্রাকৃতিক শর্করা এবং মিনারেল থাকে যা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা এবং আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
  • ডাবের পানিতে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আমাদের শরীরে কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে।
  • দাঁত এবং হাড়কে মজবুত করতেও ডাবের পানি ভূমিকা রাখে। ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা আমাদের হাড়কে শক্ত করে এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের হাড় ভালো রাখে।
  • যাদের ত্বকে তৈলাক্ত ভাব থাকে বা অতিরিক্ত শুষ্ক তারা নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে এবং চেহারায় ডাবের পানি ব্যবহার করলে তৈলাক্ত ভাব এবং শুষ্কতা দূর হয়ে চেহারা আদ্র হয়।
  • ডাবের পানি শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে যার কারণে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে ডাবের পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • যাদের পেটে হজমের সমস্যা রয়েছে তারা যদি হজমের শক্তি বৃদ্ধি করতে চায় তাহলে ডাবের পানি নিয়মিত খেতে হবে। ডাবের পানি পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • পেট পরিষ্কার রাখতে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা ডায়রিয়া গ্যাস এগুলো দূর করতে ডাবের পানি নিয়মিত খাওয়া উচিত।
  • যাদের নখ খুব ঘন ঘন ভেঙ্গে যায় তারা ডাবের পানি খাওয়ার ফলে নখ ভাঙ্গার সমস্যা দূর হয় এবং নখের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায়।
  • যাদের চেহারায় ডার্ক সার্কেল রয়েছে বা ঠোট ফাটে অথবা ঠোঁটে কালো দাগ রয়েছে তারা নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে এই সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। ডাবের পানিতে ভিটামিন বি থাকে এমনকি ডাবের পানি চোখের নিচের ফোলা কমিয়ে দেয়।
  • এখন অধিকাংশ মানুষেরই কিডনিতে পাথর জমে থাকে। যারা নিয়মিত ডাবের পানি পান করে তারা কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা থেকে বেঁচে থাকে। কিডনির চাহিদা হচ্ছে ভিটামিন সমৃদ্ধ তরল পানি।
  • ডাবের পানি ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে যার কারণে হৃদরোগের সমস্যা ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
  • ব্যায়াম করার পর শরীরে অনেক পানির ঘাটতি হয়ে থাকে এজন্য ব্যায়াম করা বা ওয়ার্কআউট করার পরে ডাবের পানি শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়।
  • পেশাব করার সময় যাদের জ্বালাপোড়া করে তারা নিয়মিত ডাবের পানি খাবেন। ডাবের পানি পেশাবের জ্বালাপোড়া ভাব দূর করে।
  • প্রতিদিন এক কাপ করে ডাবের পানি খাওয়ার ফলে যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে তাদের মুখ থেকে ব্রণের সমস্যা আস্তে আস্তে দূর হতে থাকে।
  • মাইগ্রেনের রোগীর জন্য ডাবের পানি বন্ধু স্বরূপ। মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে গেলে অথবা মাইগ্রেনের অ্যাটাক হওয়ার সাথে সাথে ডাবের পানি খেয়ে নিলে ব্যথা অনেকটা কমে যায় এবং কষ্ট অনেক কম হয়।
  • আপনি যদি চেহারা থেকে বয়সে ছাপ কমাতে চান সেক্ষেত্রে নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া শুরু করুন। ডাবের পানিতে সাইটোকিনিস নামক উপাদান থাকে যা বয়সের সাপ কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
  • যাদের মানসিা চাপ বেশি বা স্ট্রেসে রয়েছেন তারা নিয়মিত ডাব খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ডাবের পানি স্টেজ অনেকটা কমিয়ে দেয়।

খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়ার ফলে বেশি উপকৃত হওয়া যায় এবং পেটের যত সমস্যা রয়েছে সে সমস্যা গুলো দূর হয়ে যায়। তাই আপনি চেষ্টা করবেন প্রতিদিন সকালে খালি পেতে ডাব খাওয়ার। আপনি চাইলে দিনের যেকোনো সময়ই ডাব খেতে পারবেন। যেকোনো সময় ডাব খাওয়ার ফলেও আপনি একই উপকারিতা আপনার শরীরে পাবেন।

ডাব খেলে কি গ্যাস হয় - টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয়

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে ডাব খাওয়ার ফলে কি গ্যাস হয় বা যারা এই ধারণা নিয়ে থাকেন যে ডাব খাওয়ার ফলে গ্যাস তৈরি হয় তাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ডাব খাওয়ার ফলে কখনোই গ্যাসের সমস্যা হয় না বরং নিয়মিত ডাব খাওয়ার ফলে পেটে যাবতীয় সমস্যা দূর হয়। এমনকি গ্যাসের সমস্যা একেবারে চলে যায়।

এছাড়াও পেটে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা,ডায়রিয়া, বদহজম দূর করে দেয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি যখন অতিরিক্ত পরিমাণে ডাবের পানি খেতে শুরু করবেন সেই সময় গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে কিন্তু আপনি নিয়ম করে এবং পরিমাণ মতো গ্যাস ডাবের পানি খাওয়ার ফলে কখনোই গ্যাসের সমস্যা দেখা দিবে না বরং আপনার শরীরের জন্য উপকারী হবে।

কেউ যদি নিয়মিত ৭ দিন ডাব খায় তাহলে সে অনেকগুলো উপকারিতা নিজের শরীরে পাবে. নিয়ম করে এক সপ্তাহ ডাব খাওয়ার ফলে পেটে যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যায়. শরীরে পানির সংকট থাকলে সেই সংকট দূর হয়ে যায়। বিশেষ করে যারা ডায়েট করতে চায় তাদের জন্য ডাব কাজে দিবে। হৃদরোগের ঝুঁকি,কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি, ডায়াবেটিসের ঝুঁকে এগুলো একেবারে কমে যায়।

শরীরের হাড় এবং দাঁত মজবুত হয়। পুরো শরীর এবং ত্বক আর্দ্র থাকে। ডাবের পানিতে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম,ভিটামিন সি,কার্বোহাইড্র, ম্যাগনেসিয়াম, খনিস পদার্থ থাকে যেগুলো প্রত্যেকটি আমাদের শরীরের জন্য জরুরী। আপনার যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন ডাব খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনি আরও বেশি উপকৃত হতে পারবেন এবং টানা সাত দিন ডাব খাওয়ার ফলেও আপনি এসব উপকারিতা গুলো পাবেন।

ভরা পেটে ডাব খেলে কি হয় - কচি ডাবের পানির উপকারিতা

ডাবের পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় কচি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কচি ডাবের পানিতে উপকারিতা এবং ভিটামিন বেশি থাকে। কখনো বয়স বেশি এমন ডাব খাওয়া খাবেন না। সেগুলোতে ভিটামিনের পরিমাণ কমে যায়। কচি ডাব খাওয়ার ফলে চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যায় এবং চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

যাদের চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে এবং চোখ ফোলা সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কচি ডাব খাওয়ার ফলে এই সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। যাদের ত্বক শুষ্ক এবং তৈলাক্ত তারা নিয়মিত কচি ডাব খাওয়ার ফলে চেহারা আর্দ্র হয় এবং তৈলাক্ত ভাব একেবারে চলে যায়। এসব উপকারিতা ছাড়াও যেহেতু কাঁচা কচি ডাবের পানিতে ভিটামিন বেশি থাকে।

তাই ডাব খাওয়ার ফলে যেসব উপকারিতা গুলো হয় যেমন পেটের যাবতীয় সমস্যা ভালো হয়ে যায়, পানির সংকট দূর হয়ে যায়,হৃদরোগ,ডায়াবেটিস,কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে নিরাপদ থাকা যায়। ডায়েট কন্ট্রোল করার জন্য উপকারী হয়। তাই ডাব খাওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন আপনি যদি উপকারিতা বেশি পেতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে কচি ডাব খাওয়া এবং বয়স্ক ডাব খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলা।

আপনি যদি খাবার খাওয়ার পরে ভরা পেটে ডাব খান সেক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম ফাইবার থাকে যা আপনার ওজন পেট ভরা অবস্থায় খাওয়ার কারণে বেড়ে যেতে পারে। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে খাবার খাওয়ার আগে ডাবের পানি খাওয়া তাহলে পেট অনেকটা ভরা থাকে এবং খাবার কম খাওয়া লাগে যার কারণে শরীর ফিট থাকে এবং ওজন খুব সহজে কমানো যায়।


ডাবের পানি খাওয়ার কারণে ক্ষুধার পরিমান অনেকটা কমে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা থাকে। তাই কখনোই খাবার খাওয়ার পরে ভরা পেটে ডাব খাবেন না। এই পদ্ধতি সব সময় এড়িয়ে চলবেন। খাবার খাওয়ার আগে এবং সকালে খালি পেটে ডাব খাওয়ার চেষ্টা করা আপনার জন্য উত্তম হবে।

ডাবের পানির অপকারিতা - ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে

ডাবের পানিতে যেমন ভাবে প্রচুর উপকারিতা হয়েছে তেমন ভাবে কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
  • আপনি অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার কারণে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে বা যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার কারণে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • আপনি যখন অতিরিক্ত ডাবের পানি খাবেন তখন আপনার ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। অ্যালার্জি অনেক রকমের হয়ে থাকে। যাদের ডাবের পানিতে এলার্জি রয়েছে ডাবের পানি খাওয়ার ফলে এলার্জি হওয়া সম্ভব থাকে তারা সব সময় ডাবের পানি এড়িয়ে চলবেন।
  • বাহিরে রোদ থেকে আসার পরে কখনোই তৎক্ষণার ডাবের পানি খাবেন না এতে আপনার জন্য অপকারিতা বয়ে নিয়ে আনবে। কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে তারপরে খাবেন।
  • যখন আপনার জ্বর সর্দি হয় সেই সময় ডাবের পানি একেবারে খাবেন না। ডাবের পানি খাওয়ার কারণে আপনার জ্বর সর্দি কাশি এলার্জি বেড়ে যাবে।
  • কিডনি ভালো রাখার জন্য ডাবের পানি উপকারী কিন্তু যাদের কিডনির রোগ রয়েছে তারা কখনোই ডাবের পানি পান করবেন না। চিকিৎসাকরা কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীকে ডাবের পানি পান করা থেকে সবসময় বিরত রাখেন।
  • ডাবের পানি যেমনভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে তেমনি ভাবে অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার কারণে রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
  • ডাবের পানিতে পটাশিয়াম থাকে যখন অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়াবে তখন শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় পটাশিয়াম জমবে যা কিডনি এবং হৃৎপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর।
  • ডাবের পানিতে চিনি কম থাকে এবং ডাবের পানি শরীরে চিনি চুষে নিতেও সক্ষম কিন্তু যখন আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে ডাবের পানি খেতে থাকবেন তখন শরীরে রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যাবে এবং ডায়াবেটিস হওয়া সম্ভবনা প্রবল হয়।
অনেকে ভেবে থাকেন ডাবের পানি খাওয়ার ফলে প্রেশার বেড়ে যেতে পারে অথবা প্রেসার কমে যেতে পারে এই ধারণা একেবারে ভুল। আপনি ডাবের পানি খাওয়ার ফলে আপনার প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ডাবের পানিতে ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম,ভিটামিন সি থাকে যা ব্লাড প্রেসারকে কন্ট্রোল রাখতে পারে।

যখন আপনি অতিরিক্ত মাত্রায় ডাবের পানি খেতে থাকবেন তখন আপনার ব্লাড প্রেসার বেড়ে যেতে পারে এবং বিভিন্ন রকমের সমস্যা হবে। তাই আপনার উচিত হবে নিয়ম করে এবং পরিমাণ মতো ডাবের পানি খাওয়ার তাহলে আপনি অপকারিতা গুলা থেকেও বেঁচে থাকতে পারবেন এবং আপনার ব্লাড প্রেসারও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

কখনোই ডাবের পানি অতিরক্ত খাবেন না। শুধু ডাবের পানি নয় কোন খাবারে অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নয়।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা - ডাব খেলে কি ঠান্ডা লাগে

গর্ভবতী অবস্থায় শরীরে অনেক রকমের খাবারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেসবের মধ্যে একটি হচ্ছে ডাবের পানি।
  • গর্ভবতী অবস্থায় সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে শরীর অনেকটা দুর্বল হয়ে থাকে সেই সময় ডাবের পানি খাওয়ার ফলে এই দুর্বলতা সমস্যা কেটে যায়।
  • ডাবের পানিতে ওমেগা থ্রি,ফ্যাটি এসিড, ফাইবার থাকে যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য এবং সন্তানের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়।
  • গর্ভাবস্থায় প্রেসার অনেক সময় বেড়ে যায় আবার অনেক সময় কমে যায়। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে গর্ভ অবস্থায় প্রেসার স্বাভাবিক থাকে।
  • গর্ভবতী মহিলার শরীরে যেন পানি স্বল্পতা না হয় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা জরুরী। ডাবের পানি শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে বেশ কার্যকরী তাই গর্ভবতী অবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ানো উচিত।
  • গর্ভবতী অবস্থায় কমবেশি সবারই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে ডাবের পানি পান করার কারণে এই সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
  • গর্ভ অবস্থায় আরেকটি বিশেষ সমস্যা হচ্ছে বুক জ্বালাপোড়া করা। ডাবের পানি পান করলে অনেকটা বুকে জ্বালাপোড়ার পরিমাণ কমে যায়।
  • ডাবের পানিতে ম্যাগনেসিয়াম,ক্যালসিয়াম থাকে এই দুইটি গর্ভবতী মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই জরুরী।
  • গর্ভবতী অবস্থায় মহিলারা ডাবের পানি পান করার কারণে পেটে থাকা শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে এবং সন্তানের শরীর সুস্থ থাকে।
  • গর্ভবতী মহিলা শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে ডাবের পানি অত্যন্ত জরুরী।
এজন্য গর্ভবতী মহিলাকে চেষ্টা করবেন সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ডাবের পানি খাওয়ানো। এর বেশি কখনই খাওয়াবেন না। অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে হীতের বিপরীত হতে পারে। অনেকে ভেবে থাকে ডাবের পানি খাওয়ার কারণে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ডাবের পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং পানি শূন্যতা সমস্যা দূর করে।


বিশেষ করে গরমকালে ডাব শরীরের জন্য অনেক জরুরী। গরমকালের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ডাবের বিকল্প অন্যকিছু হতে পারে না। যারা জ্বর সর্দির রোগে ভুগছেন তারা ডাব খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এই অবস্থায় ডাব খাওয়ার ফলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে এবং জ্বর সর্দির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

এসব সমস্যা বাদে আপনি যেকোনো সময় ডাব খেতে পারবেন এবং আপনার শরীরের জন্য ডাব উপকারী হবে।

শেষ কথা

ডাব খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি তখনই উপকৃত হতে পারবেন যখনই আপনি পরিমাণ মতো খাবেন। অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে আপনার জন্য উপকারিতার বিপরীতে অপকারিতা বয়ে নিয়ে আনবে। এজন্য কখনো অতিরিক্ত খাবেন না এবং চেষ্টা করবেন অন্য পানীয় খাওয়ার পরিবর্তে ডাব কিনে খাওয়ার।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে যাবতীয় ডাবের উপকারিতা জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url