সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক- ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল এবং দাম

প্রিয় পাঠক আপনি কি চুলে সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে চুলে সরিষার তেলের উপকারিতা এবং সরিষার তেলের উপকারিতা ও সরিষার তেল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে সরিষার তেল সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
সরিষার তেলের উপকারিতা
এছাড়াও আপনি এই পোস্টের মধ্যে পাবেন ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল,সরিষার তেলের দাম,সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক এবং সরিষার তেল মালিশের উপকারিতা সম্পর্কে। তাই চলো কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

বাংলাদেশে বেশ কয়েক রকমের তেল পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সরিষার তেল। সরিষার তেল রান্নার কাজে এবং শরীর ও চুলে ব্যবহার করা হয়। সরিষার তেলে অনেক রকমের ভিটামিন থাকে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। বিশেষ করে ভর্তার জন্য সরিষার তেলের কোন জুড়ি নেই।


খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করার ফলে আপনি অনেক উপকৃত হতে পারবেন। সয়াবিন তেলে ক্ষতিকর দিকগুলো কম থাকে যার ফলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকতে এই তেল ভীষণ উপকারী ভূমিকা রাখবে।

সরিষার তেলের উপকারিতা

খাঁটি সরিষার তেলে অনেক উপকারিতা লুকায়িত আছে। সরিষার তেল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে এমন এমন লাভ হবে যা আপনার কল্পনার বাহিরে। চলুন এবার আমরা সেই উপকারগুলো জানি
  • সরিষার তেলের মধ্যে এমন একটি উপাদান থাকে যেটার নাম গ্লুকোসিনোলেট। এই এই উপাদান আ্যান্টিারসিনোজেনিক নামেও পরিচিত।এই উপাদান ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তের ক্ষতিকর কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • সরিষার তেল খাওয়ার ফলে ক্ষুধা বৃদ্ধি হয়। যাদের খাবারের প্রতি অরুচি তারা খাবারে সরিষার তেল ব্যবহার করার ফলে ভালো একটি ফলাফল পাবেন।
  • আপনি যদি চুলের জন্য সরিষার তেল ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল খুব দ্রুত বড় এবং কালো হবে ও চুল পরা বন্ধ হবে।
  • সরিষার তেলে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে যেগুলো চুলকে সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে।
  • আপনি যদি আপনার ত্বকে সরিষার তেল ব্যবহার করেন তাহলে দূষিত পদার্থ থেকে নিরাপদ রাখবে যার ফলে স্কিন ক্যান্সার এবং বলিরেখা ও বয়সের ছাপ এগুলো হবে না।
  • শীত আসার সাথে সাথে ঠোট ফাটতে শুরু করে। আবার অনেকে আছে সারা বছরের ঠোঁট ফাটে তারা সরিষার তেলকে ঠোঁটফাটা দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।
  • সরিষার তেল পরিপাক রক্ত সংবহ এবং রেচনতন্ত্রের শক্তিশালী উদ্দীপক হিসেবে ভূমিকা রাখে।
  • আপনি সরিষার তেল খাওয়া পাশাপাশি শরীরে ব্যবহার করলে আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে।
  • খাঁটি সরিষার তেল খাওয়ার ফলে হার্ট সুস্থ থাকে এবং হার্টের সমস্যাগুলো থেকে বেঁচে থাকা যায়।
  • যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা রান্নায় সরিষার তেল খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • সরিষার তেল খাওয়ার ফলে হাড় মজবুত হয় এবং হাড়ের ভিতর ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি হয়।
  • সরিষার তেল খাওয়ার মাধ্যমে এবং মালিশ করার মাধ্যমেও যাদের জয়েন্টের ব্যথা এবং বাতের ব্যথা রয়েছে তাদের এই ব্যথাগুলো দূর হয়ে যাবে।
  • ঠান্ডা লাগা দূর করতে যেমন কাশি সর্দি এলার্জি এগুলো সমস্যা দূর করতে সরিষার তেলের গুরুত্ব অনেক।
  • নিয়মিত খাঁটি সরিষার তেল খাওয়ার ফলে আপনার ফুসফুস পরিষ্কার থাকবে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের কোন রকমের কোন সমস্যা হবে না।
  • যাদের পেট ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা রাতে ঘুমানোর আগে নাভিতে হালকা করে সরিষার তেল মেখে নিবেন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার এই পেট ব্যথার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • পিওর খাঁটি সরিষার তেল খাওয়ার ফলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি হয় এবং মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে।
  • নিয়ম করে নিয়মিত সরিষার তেল খাইলে ওজন কমতেও সাহায্য করবে।
  • আপনি মিলনের সময় পুরুষাঙ্গে সরিষার তেল ব্যবহার করার ফলে খুব আরামে মিলন করতে পারবেন এবং নিয়মিত পুরুষাঙ্গের সরিষার তেল ব্যবহার করলে তা মোটা এবং লম্বা হয় এবং মিলনের সময় দীর্ঘায়িত হয়।
  • সরিষার তেলে আইরন ম্যাগনেশিয়াম,ম্যালেনিয়াম এরকম উপাদানগুলো থাকে। যেগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
আপনি এসব উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য সরিষার তেল রান্নায় এবং শরীরে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। অবশ্যই মনে রাখবেন খাঁটি সরিষার তেল ছাড়া আপনি এই উপকারগুলো পাবেন না। আপনি যদি ভেজাল সরিষার তেল রান্নায় ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ক্ষতিকর দিক বয়ে নিয়ে আনবে। তাই উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

সরিষার তেল খাওয়ার নিয়ম

সরিষার তেল খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। আপনি নিয়মের বিপরীতে বা অতিরিক্ত সরিষার তেল খাওয়ার ফলে অথবা শরীরে ব্যবহার করার ফলে ক্ষতিকর দিকগুলো বয়ে নিয়ে আনবে। এজন্য চলুন এবার সরিষার তেল কোন নিয়মে খাওয়া উচিত এবং ব্যবহার করা উচিত সে নিয়ম গুলো জানি
  • আপনি সরিষার তেল রান্না করার মাধ্যমেও খেতে পারবেন এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিমাণ মতন দিবেন। অতিরিক্ত সরিষার তেল দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
  • সরিষার তেল দিয়ে যেকোনো রকমের আচারের তৈরি কাজ ব্যবহার করতে পারবেন।
  • ভর্তা করার জন্য সরিষার তেলের কোন বিকল্প নেই। সরিষার তেল দিয়ে ভর্তা করলে আপনি ভিন্ন লেভেলের স্বাদ পাবেন।
  • সর্দি কাশি হলে মাথায় এবং গলায় হালকাভাবে সরিষার তেল দিয়ে রাখবেন।
  • মাথায় সরিষার তেল দেয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো দিবেন, অতিরিক্ত দিবেন না। পরিমাণ মতো দেয়ার ফলে আপনার চুল সুন্দর হবে।
  • বাচ্চাদের মাথায় সরিষার তেল দেয়ার ক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানি এবং সরিষার তেল একসাথে করে মাথায় মালিশ করবেন তাহলে তাদের ঠান্ডা সর্দি লাগা কাশি ভালো হয়ে যাবে।
  • সরিষার তেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • আপনি মুড়ি মাখিয়ে খাওয়ার ক্ষেত্রেও সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারবেন।

আপনি এসব নিয়ম অনুসরণ করে সরিষার তেল ব্যবহার করলে উপকৃত হতে পারবেন। অবশ্যই অতিরিক্ত ব্যবহার করা এবং খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

সরিষার তেল মালিশের উপকারিতা

আপনি সরিষার তেল শরীরে মালিশ করলে অনেক উপকৃত হতে পারবেন। সরিষার তেল শরীরের জন্য বেশ পুষ্টিার সমৃদ্ধ। চলুন এবার শরীরে আপনি সরিষার তেল মালিশ করার ফলে কি কি উপকারিতা পাবেন সেগুলো জানি
  • সরিষার তেল শরীরে মাখার ফলে আপনার শরীরের বরিলেখা এবং বয়সের ছাপ দূর হয়ে যাবে।
  • আপনি যদি নিয়মিত শরীরে সরিষার তেল ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চামড়া টান থাকবে। কোন রকমের ভাজ হবে না।
  • আপনি সরিষার তেল এবং নারিকেল তেল একসাথে শরীরে এবং ত্বকে ব্যবহার করলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে।
  • চোখের নিচের কালো দাগ অথবা শরীরের ট্যাপ পরা দূর করতে টক দই,লেবু,সরিষার তেল বেসন একসাথে করে মুখে এবং শরীরে ব্যবহার করার ফলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন।
  • সরিষার তেল এন্টি ব্যাকটেরিয়া ফাঙ্গাস এবং এলার্জি দূর করতেও অপ্রতিরোধ্য।
  • ত্বকের চুলকানি এবং মেছতার মত সমস্যা দূর করতে পারে সরিষার তেল।
  • আপনি শরীরে সরিষার তেল ব্যবহার করার ফলে হাড়ের ব্যথা এবং বাতের ব্যথা দূর হয়ে যাবে এবং হাড় মজবুত হবে।
  • ঠান্ডা সর্দি কাশে জ্বর এগুলো দূর করতে সরিষার তেল এবং কালোজিরা একসাথে গরম করে বুকে পিঠে মালিশ করুন।
  • শরীরে সরিষার তেল মালিশ করার ফলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। যার ফলে তখন সুস্থ থাকে।
  • যাদের অতিরিক্ত ঘামার অভ্যাস আছে তারা বাহিরে যাওয়ার আগে শরীরে হালকা সরিষার তেল মাখে নেন তাহলে আপনার এই ঘামের সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং শরীর ঘামবে না।
  • আপনি নিয়মিত সরিষার তেল ব্যবহার করার ফলে আপনার শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যাবে এবং শরীরের দূষিত পদার্থ প্রবেশ করতে পারবে না।
আপনি এসব উপকারিতা পাওয়ার জন্য শরীরে নিয়মিত সরিষার তেল মালিশ করার চেষ্টা করুন এতে করে আপনি উপকৃত হবেন এবং আপনার শরীর সুস্থ থাকবে।

চুলে সরিষার তেলের উপকারিতা

আপনি সরিষার তেলের ব্যবহার করার ফলেও উপকৃত হতে পারবেন। সরিষার তেল চুলকে সুন্দর করতে এবং মজবুত করতে সাহায্য করে। চলুন এবার কোন পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে কি কি উপকৃত হতে পারবেন সেগুলো জানি
  • সরিষার তেলে আলফা ফ্যাটি এসিড থাকে যা আপনার চুলকে বৃদ্ধি করবে এবং চুলের গুড়া মজবুত করবে।
  • আপনি নিয়মিত চুলে সরিষার তেল ব্যবহার করলে মাথার খুশকি দূর হবে এবং চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
  • সরিষার তেলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা আপনার চুলকে বৃদ্ধি করতে বেশ সাহায্য করবে। যার ফলে আপনার চুল খুব তাড়াতাড়ি লম্বা হবে।
  • আপনি যখন মাথার তালুতে সরিষার তেল ব্যবহার করবেন এর ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
  • আপনি কখনো সরিষার তেল দিয়ে অনেক সময় থাকবেন না তাহলে আপনার মাথার চুল এবং ত্বক চিটচিটে হয়ে যাবে। সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত তেল মাথায় রাখবেন তারপরে গোসল করে ফেলবেন বা মাথার চুল ধুয়ে ফেলবেন।
  • সরিষার তেল চুলে দেওয়ার পূর্বে হালকা গরম করে নিন যার ফলে তেল পাতলা হবে এবং চুল খুব সহজেই শোষণ করতে পারবে। তাহলে আপনি উপকৃত বেশি হতে পারবেন।
  • টক দই এবং সরিষার তেল একসাথে মিক্স করে সেটা আপনার চুলে লাগান। তারপরে একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে মাথায় ভালোভাবে পেচিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তাহলে আপনার চুল সিল্কি এবং সুন্দর হবে এবং মজবুত হবে।
  • এভাবে সপ্তাহে এক থেকে দুই বার করবেন। আপনি উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য সরিষার তেল এবং এলোভেরা একসাথে করে মাথা চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
  • আপনার মাথার ত্বকে যদি চুলকানি থাকে বা বিভিন্ন রকম ফাঙ্গাস থাকে তাহলে সরিষার তেল ব্যবহার করলে আপনার এই ফাঙ্গাস এবং চুলকানি মাথার ত্বক থেকে ভালো হয়ে যাবে।

আপনি যদি এসব উপকারিতা গুলো পেতে চান তাহলে সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার সরিষার তেল ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে আপনার খুশকি বেড়ে যায় বা বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে এজন্য সপ্তাহে এক থেকে দুইবার এর বেশি ব্যবহার করবেন না।

ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল

ঘানি ভাঙা সরিষার তেলের উপকারিতা অনেক। এই তেলেই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হওয়া যায়। চলুন এবার আমরা এই তেল সম্পর্কে জানি গ্রামাঞ্চলে এখনো সরিষার তেল তারা নিজেরা ঘানিতে ভেঙে খায়। এই তেলের আলো আলাদা একটা ঝাঁঝালো ভাব থাকে। এই ভাঙ্গা তেল একেবারে খাঁটি হয়ে থাকে। ঘানিভাঙা তেল ব্যবহার করার ফলেই বেশি পরিমাণে উপকৃত হওয়া যায়।

দোকান থেকে যে সরিষার তেল গুলো কেনা হয় সেগুলোর অধিকাংশে ভেজাল মেশানো থাকে। ঘানি ভাঙা সরিষার তেল বলতে বোঝায় গরুর সাহায্যে সরিষা থেকে যে তেল বের করা হয়।ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেলের কালারই ভিন্ন রকম হবে। বর্তমানে যে সরিষার তেল গুলা পাওয়া যায় সেগুলো অধিকাংশ একটু ফ্যাসকা টাইপের কিন্তু ঘানি ভাঙা সরিষার তেলের কালার একেবারে ন্যাচারাল।

খাঁটি ভাঙ্গা সরিষার তেল ঘন হয়।আপনি ঘানি ভাঙ্গার সরিষার তেল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ঝাঁঝালো এবং গাঢ় ভাব এবং কালার এই তিনটা বিষয়ে লক্ষ্য করে কিনবেন। তাহলে আপনি একদম ঘানি ভাঙ্গা সরিষার খাঁটি তেলি পাবেন।

সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিক

সরিষার তেলেও কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে সেসব ক্ষতিকার দিকগুলো সম্পর্কে জানা জরুরী। তাহলে আমরা সরিষার তেল খাওয়া থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে খাব যাতে করে আমরা সেই ক্ষতিগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারি। চলুন এবার সেই ক্ষতিকর দিকগুলো জানি
  • রান্না করার ক্ষেত্রে তিন থেকে চার চামচ সরিষার তেল ব্যবহার করা উচিত এর বেশি ব্যবহার করার ফলে ক্ষতি হবে।
  • পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ রয়েছে যেগুলোতে সরিষার তেল নিষিদ্ধ করা হয়েছে কারণ সরিষার তেল আস্তে আস্তে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অতিরিক্ত সরিষার তেল খাওয়ার ফলে শরীর ভিতর থেকে দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে এবং শরীরের কার্যক্ষমতা কমে যাতে শুরু করে।
  • সরিষার তেলে ইউরিক এসিডের উপাদান ৪২ থেকে ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত থাকে।
  • সরিষার তেলের ওমেগা নাইন ফ্যাটি এসিড থাকে যাকে বিষের সাথেও তুলনা করা হয়।
  • সরিষার তেলের মধ্যে ইরেটিক নামক একটি এসিড থাকে যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর।
  • সরিষার তেলের মধ্যে এমন কিছু এসিড রয়েছে যেগুলো ফুসফুসের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
  • কোন মহিলা গর্ভ অবস্থায় অতিরিক্ত সরিষার তেল যদি খেয়ে থাকে তাহলে তার ভ্রমন গঠনের ক্ষতি হবে।
  • আমেরিকার একটি পত্রিকা মেডিকেল নিউজ টুডে প্রতিবেদন অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটা বয়সের পরে শরীরে যদি উচ্চস্তরে ইউরিক অ্যাসিড জমে তাহলে সেটা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।
  • ইউনাইটেড স্টেটস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিস্টেশনির ওয়েবসাইট অনুযায়ী সরিষার তেলে থাকা ইউরেক এসিড অতিরিক্ত শরীরের জমলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • আপনি অতিরিক্ত সরিষার তেল ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যাবে এমনকি চুলেও খুশকি হতে পারে।
এসব ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকতে অবশ্যই অতিরিক্ত সরিষার তেল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং নিয়ম করে সরিষার তেল খাবেন তাহলে আপনি আর ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে সামিল হবেন না।

সরিষার তেলের দাম

বাজারে বেশ কয়েক রকমের সরিষার তেল পাওয়া যায়। চলুন এবার আমরা সরিষার তেলের দাম জানি
  • বাজারে আপনি ২১০ টাকা থেকে ২২০ টাকা প্রতি লিটারেও সরিষার তেল পাবেন।
  • রাধুনী সরিষার তেল হাফ লিটার ১৮৫ এবং ১ লিটার ৩৬০ টাকা নিতে পারে. বাজারে সরিষার তেল ৩০০ টাকা কেজি দামেরও রয়েছে।
  • আপনি যদি পাঁচ লিটার তেল একসাথে কিনতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার লাগবে ১৪৫০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। আপনি যদি বিভিন্ন ভালো কোম্পানির কিনতে চান সেক্ষেত্রে ১৫৫০ থেকে ১৭৫০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
  • এছাড়াও বাজারে ২৫০,২৮০, ২০৭০ প্রতি লিটারেও সরিষার তেল পাবেন।

আপনি যত দামে সরিষার তেল কিনেন না কেন সরিষার তেল কেনার আগে অবশ্যই আপনি সেটা খাটি নাকি ভেজাল ভালোভাবে দেখে নেবেন তাছাড়া আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর দিকগুলো বয়ে নিয়ে আনবে।

সরিষার তেল সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর

১ প্রশ্ন সরিষার তেলে কি চুল গজায়?

উত্তর

সরিষার তেল আপনার চুল পরা বন্ধ করতে এবং চুল লম্বা করতে সাহায্য করবে। সরিষার তেলে ওমেগা থ্রি এসিড থাকে যার ফলে চুল বৃদ্ধি হয় এবং মজবুত হয়। সরিষার তেল মাথায় ব্যবহার করলে রক্ত সঞ্চালনা বৃষ্টি হয় এবং সুন্দর থাকে কিন্তু সরিষার তেল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না।

২ প্রশ্ন শিশুর শরীরে সরিষার তেল মাখা কি ঠিক?

উত্তর

শিশুদের ত্বক পাতলা হয়ে থাকে। বেবি সেন্টারের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বলা হয় যে তাদের ত্বকে সরিষার তেল কম মাখানো ভালো। তাদের শরীরে অলিভ অয়েল বা বিভিন্ন যে মশ্চারাইজার ক্রিমগুলো রয়েছে সেগুলো মাখানোর চেষ্টা করবেন তাহলে তাদের ত্বক সুন্দর এবং নরম থাকবে।

৩ প্রশ্ন সরিষা তেলে কি কি ভিটামিন আছে?

উত্তর

সরিষার তেলের মধ্যে প্রোটিন ভিটামিন ই ওমেগা থ্রি এসিড ক্যালসিয়াম ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ভিটামিন এ ম্যাগনেসিয়াম মেলেনিয়াম এসব ভিটামিন এবং উপাদান থাকে।

৪ প্রশ্ন প্রতিদিন সরিষার তেল খেলে কি হয়?

উত্তর

নিয়মিত সরিষার তেল খাওয়ার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি হবে,হার্ট, হাড় এগুলো মজবুত হবে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে, শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে এরকম সব উপকারিতা উপরে সরিষার তেলের উপকারিতার মধ্যে বলা হয়েছে।

শেষ কথা

সরিষার তেলের মধ্যে উপকারিতা অপকারিতা উভয় রয়েছে এজন্য চেষ্টা করতে হবে নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণমতো সরিষার তেল খাওয়ার তাহলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন অন্যথায় ক্ষতিকর দিকগুলো আপনার দিকে ধেয়ে আসবে। সরিষার তেল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই থাকে ঘানি ভাঙার তেল কেনার চেষ্টা করবেন তাছাড়া ভেজাল তেল খাওয়ার ফলে শরীরে জন্য অনেক ক্ষতিকর হবে।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url