ভালো মানের মশার কয়েল- ইলেকট্রিক মশার কয়েল-চায়না মশার কয়েল

প্রিয় পাঠক আপনি কি ভালো মানের মশার কয়েল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ভালো মানের মশার কয়েল এবং সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল কোনটি ও ইলেকট্রিক মশার কয়েল সম্পর্কে আলোচনা করব।আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে মশা দূর করার কয়েল সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
ভালো মানের মশার কয়েল
এছাড়াও আপনি পোষ্টের মধ্যে পাবেন কয়েলের ধোঁয়া কি ক্ষতিকর,ঈগল মশার কয়েল,গুড নাইট মশার কয়েল এবং চায়না মশার কয়েল সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

শীত আসার সাথে সাথে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। মশা কামড়ানোর ফলে বিভিন্ন রকমের রোগ হতে পারে বিশেষ করে ডেঙ্গু হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডেঙ্গু এমন একটি রোগ যার ফলে মৃত্যু হতে পারে। মশা তাড়ানোর ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন রকমের কয়েল ব্যবহার করে থাকি অথবা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি।


বাংলাদেশের বেশ কয়েক ধরনের কয়েল পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঈগল,গুড নাইট, এসবিআই,চায়না মর্টিন কয়েল উল্লেখযোগ্য। এই পোষ্টের মধ্যে কয়েলের যাবতীয় গুনাগুন এবং ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বলা হবে।

সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল কোনটি

আপনি বাজারে কয়েল কিনতে গেলে অনেক রকমের কয়েল পাবেন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কোনটি ভাল হয় আমরা অনেকে জানি না। যার ফলে যে কোন একটা কয়েল কিনে নিয়ে আসি তখন দেখা যায় মশা দূর করতে কোন রকমের কাজ করে না এবং ধোয়ার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। এজন্য চলুন এবার আমরা জানি সবচেয়ে ভালো কয়েল কোনগুলো
  • আপনি যদি সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল খুঁজতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই পছন্দের তালিকায় গুড নাইট কয়েলকে রাখতে হবে। এই কয়েল গুনে এবং মানে অনেক ভালো। এই কয়েল ব্যবহার করার ফলে মশা খুব দ্রুতই চলে যায়।
  • ঈগল ম্যাক্স কয়েল। এই কয়েলও মশা দূর করতে বেশ কার্যকারী। আপনি এই কয়েল ব্যবহার করলে খুব সহজে নিজের ঘর থেকে মশা দূর করতে পারবেন।
  • মর্টিন পাওয়ার গার্ড কয়েল। এই কয়েল দশ ঘন্টা পর্যন্ত মশার কামড় থেকে আপনাকে সুরক্ষা রাখবে এবং এ কয়েল সাত গুণ বেশি শক্তিশালী যার ফলে অনেক দ্রুত মশা চলে যাবে।
  • 7 বুস্টার মসকিউটো কয়েল। এই কোয়েল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং বারো ঘণ্টা পর্যন্ত মশার কামড় থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে।
  • বউমা কয়েল।এই কয়েল আট ঘন্টা পর্যন্ত আপনাকে সুরক্ষা দিবে এবং এই কয়েল ধোয়া খুব কম কিন্তু কার্যকারী ক্ষমতা অনেক বেশি। যাদের ধোঁয়ায় সমস্যা রয়েছে তারা এ কয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
  • নিঞ্জা কয়েল। এই কয়েলও খুব দ্রুত মশা দূর করতে পারে এবং এই কোয়েলের কার্যকর ক্ষমতা অনেক বেশি। এই কয়েল আপনাকে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখবে।
  • নাইটগার্ড মশার কয়েল। আপনি এই কয়েল ব্যবহার করলেও ভালো ফলাফল পাবেন।
আপনি যদি মশার কয়েল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল খুঁজতে চান তাহলে এই কয়েলগুলো আপনার তালিকায় রাখা জরুরি। যেকোন একটা কয়েল ব্যবহার করলে মশা থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন।

মশার কয়েল তৈরির উপাদান

কয়েল তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেক উপাদানের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি সেই উপাদান গুলোর নাম জানেন তাহলে আপনি বাড়িতে কয়েল বানাতে পারবেন। চলুন এবার সেসব উপাদান গুলোর নাম জানি
  • মশার কয়েলের প্রথম আবিষ্কার হয় জাপানে। একজন ব্যবসায়ী আইচির উয়েমা চালের সাথে মল্লিকা ফুলের গুঁড়ো থেকে তৈরি পাইরেথ্রাম মিশে একটি ধুপ তৈরি করে। মূলত সেই ধূপ থেকে যে ধোঁয়া বের হতো সেটাই মশা দূর করে দিত।
মশার কয়েল তৈরি করতে যে উপাদান গুলো লাগে
  • পাইরেথ্রাম
  • ম্যাপফ্লুথ্রিন
  • অ্যালেথ্রিন
  • পাইপারনিল বাটক্সাইড (পিবিও)।
  • পাইরেথ্রিনস
  • ডাইমফ্লুথ্রিন এমজিকে ২৬৪ এন (অক্টাইল সাইক্লোহপটিন ডিকারবক্সিমাইড এসবিথোথ্রিন
  • বিএইচটি (বাটলেটেড হাইড্রোক্সিটোলিউইন)
এই উপাদানগুলো দিয়ে কয়েল তৈরি করা হয়।
  • পাইরেথ্রাম এটি হচ্ছে ক্রাইস্যান্থেমাম গাছের গুঁড়ো থেকে তৈরি যা সম্পন্ন প্রাকৃতিক উপাদান।ক্রাইস্যান্থেমাম আরো ভিন্ন একটি নাম আছে টেনাসিতাম। অনেকেই এই গাছকে কসিনিয়ম। পাইরেথ্রাম তৈরি করা হয় ম্যাপফ্লুথ্রিন এটি হচ্ছে পাইরেথ্রয়েড এস্টার।
  • অ্যালেথ্রিন এটি মূলত একটি কীটনাশক। এটার মাধ্যমে খামারের ক্ষেতের পোকামাকর তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  • পাইপারনিল বাটক্সাইড (পিবিও) পাইরেথ্রয়েড এটার কার্যকরী ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ঐচ্ছিক সংযোজক।পাইরেথ্রিনস এটার কাজ হচ্ছে পোকামাকড়ের নার্ভাস সিস্টেমকে আকৃষ্ট করে এর রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে তাদেরকে দুর্বল করে দেওয়া।
  • এমজিকে ২৬৪ এন (অক্টাইল সাইক্লোহপটিন ডিকারবক্সিমাইড পাইরেথ্রয়েডের কার্যকরী ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।

ভালো মানের মশার কয়েল

ভালো মানের কয়েল কিনতে গেলে আপনি অনেক ধরনের কয়েল পাবেন যেগুলোর প্রত্যেকটি ভালো কোয়েল হিসেবে ধরা হয। অবশ্যই বিএসটিআই অনুমোদিত কিনা তা দেখে নিবেন কারণ এটি সরকার অনুমোদিত যদি না হয় তাহলে তার কোন ভাবেই ভালো হবে না।
  • নিমপাতা কয়েল
  • বসুন্ধরা এক্সট্রিম কয়েল
  • সুপ্রিয়া কয়েল
  • জাম্বু কয়েল
  • আমিন জাম্বু ম্যাজিক কোয়েল,
  • বিকল্প মশার কয়েল
  • দোয়েল ম্যাক্স কোয়েল
  • রকেট কয়েল
  • A to Z কয়েল।
আপনি এসব কয়েলকে ভালো কয়েল হিসেবে ধরতে পারেন। এগুলো কয়েল ব্যবহার করার ফলেও খুব দ্রুত মশা চলে যায়। এছাড়াও আমি উপরে সবচেয়ে ভালো কয়েল যেগুলো রয়েছে সেগুলোর নাম বলেছি যেমন গুড নাইট কয়েল,মার্কিন পাওয়ার গার্ড,নিনজা,৭ বুস্টার এই কয়েল গুলোও অনেক ভালো কয়েন।

কয়েলের ধোঁয়া কি ক্ষতিকর

কয়েল যেহেতু অনেক রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয় এবং এখান থেকে ধোঁয়া বের হয় এজন্য কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা ভুলেও মশার কয়েল ব্যবহার করবেন না।
  • শ্বাসকষ্ট রোগে মশার ব্যবহার করার ফলে তাদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাবে।
  • যাদের এলার্জির বা এজমার সমস্যা রয়েছে তারাও মশার কয়েল ব্যবহার করবেন না। এজমা এবং এলার্জির জন্য মশার কয়েল ক্ষতিকর।
  • ধোঁয়া আপনার ফুসফুসের উপরে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে যার ফলে কাশি অথবা বুকে কফ যাওয়ার মত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
  • যাদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ তারা কয়েল ব্যবহার করবেন না কারণ কয়েলের ধোঁয়া থেকে আপনার ত্বকে রাস এলার্জি চুলকানি লাল লাল ভাব এগুলো তৈরি হবে।
  • কয়েলের ধোঁয়া অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেখান থেকে আপনার মাথাব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে যারা মাইগ্রেনের রোগী আছেন তাদের মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যায়।
  • বাড়িতে বাচ্চা অথবা বয়স্ক লোক থাকলে তাদের থেকে কয়েল সবসময় দূরে রাখার চেষ্টা করবেন।
  • মশার একটি কয়েল থেকে যে পরিমাণ ধোয়া বের হয় গবেষণায় দেখা গেছে তা প্রতিদিন ১০০ টি সিগারেট খাওয়ার সমান এজন্য অবশ্যই কয়েল চালানোর আগে একটু সতর্কভাবে কয়েল চালানোর চেষ্টা করবেন।

কয়েল জ্বালানোর পরে যখন আপনার ঘর থেকে মশা দূর হয়ে যাবে তারপর পরে কয়েল নিভিয়ে দিবেন। সারারাত কয়েল জ্বালানো থেকে বিরত থাকবেন। সারারাত কয়েল জ্বালানোর ফলে আপনার উপরে যে ক্ষতিকর দিকগুলো বলা হলো সেসব ক্ষতি হতে পারে।

ইলেকট্রিক মশার কয়েল

আপনি যদি ধোয়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে চান সেক্ষেত্রে ইলেকট্রিক কয়েন গুলো ব্যবহার করতে পারেন। এই কয়েলগুলা ব্যবহার করার ফলেও আপনার রুম থেকে মশা চলে যাবে। এই কয়েল ব্যবহার করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই ঘরের জানলা দরজা সবকিছু ভালোভাবে বন্ধ করে নিতে হবে।

ইলেকট্রিক অনেক ধরনের কয়েল রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভাল হচ্ছে গুড নাইট একটিভ ইলেকট্রিক কয়েল। এটা কয়েল মানগত খুব উন্নত এবং মশা দূর করতে বেশ কার্যকরী। এসিআই কোম্পানির ইলেকট্রিক কয়েল পাওয়া যায়। বর্তমানে দারাজর ইলেকট্রিক কয়েল গুলো বিক্রি করা হয় আপনি চাইলে সেখান থেকেও কিনতে পারেন।

আপনি যদি ইলেকট্রিক কয়েল কেনার চিন্তা করেন সেক্ষেত্রে অনেক ধরনের কয়েল পাবেন। আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে গুড নাইট একটিভ ইলেকট্রিক কয়েল। আপনি ইলেকট্রিক কয়েল কিনতে গেলে ২৫০ থেকে ৫০০ মধ্যে যে কোন একটি ভাল মানের ইলেকট্রিক কয়েল পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও বাজারে বর্তমানে এমন একটি মেশিন এসেছে যেটার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই মশা মারতে পারবেন। এই মেশিনটি মূলত একটি ফাদ। এই মেশিনের মধ্যে বিশেষ ধরনের একটি আলো রয়েছে। সেই আলোর উপরে মশা গিয়ে বসলে সেটা সাথে সাথে সে মারা যাবে। সেই মেশিনটির নাম হচ্ছে Forcado Internal ECO Friendly Electronic LED Mosquito Killer Machine Trap Lamp এই মেশিনের দাম ১২০০ টাকা।

ঈগল মশার কয়েল

বাংলাদেশের প্রথম সারির উন্নত মানের যেগুলো কোয়েল ধরা যায় সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ঈগল কয়েল। ঈগল কয়েল বাংলাদেশে খুব প্রসিদ্ধ এবং সুনামধন্য একটি কয়েল। এই কয়েলের কার্যকরী ক্ষমতা খুব ভালো। ঈগল কয়েল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নকল থেকে সাবধান থাকতে হবে।

আপনি ঈগল কয়েলের পাশাপাশি ঈগল স্প্রেও পাবেন। সেই স্প্রে দিয়ে আপনি রুম থেকে মশা দূর করতে পারবেন। প্রতি প্যাকেট ঈগল কয়েলের দাম ৬০ টাকা করে।

গুড নাইট মশার কয়েল

বাংলাদেশের সবাই এই গুডনাইট কোয়েলকে এক নামে চিনে। এই কয়েলের মান খুব ভালো। এটা কয়েলের পাশাপাশি ইলেকট্রিক কয়লা রয়েছে। গুড নাইট কোম্পানির স্প্রে রয়েছে সেটিও মশা দূর করতে বেশ কার্যকারী। আপনি যদি কয়েল কেনার কথা চিন্তা করেন বা ইলেক্ট্রিক কয়েল কথা কেনার চিন্তা করেন সেক্ষেত্রে আপনার জন্য সবচেয়ে সেরা যে কয়েলটি হবে সেটি হচ্ছে গুড নাইট কয়েল।

এটার কখনো মান খারাপ হয়নি। প্রতি প্যাকেট গুড নাইট কোয়েলের মূল্য ৬৫ টাকা করে।

চায়না মশার কয়েল

আমরা চাইনা কোয়েল বলতে বুঝি যে কয়েল থেকে ধোয়া বের হয় না। অনেকে আছে যাদের ধোঁয়ায় এলার্জির সমস্যা রয়েছে যার কারণে তারা এই সমস্যা থেকে বাঁচতে চায়না কয়েকে বেছে নেয়। চায়না কোয়েলের ক্ষেত্রে গায়ের উপরে বউমা চায়না কয়েল লেখা থাকে। এই কয়েলটি অনেক ভালো এবং কার্যকরী।


আপনি চাইনা কয়েল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সবুজ কালারের যে প্যাকেট রয়েছে সেই প্যাকেটের চায়না কয়েল কিনবেন বাকি অন্য কালার যে প্যাকেট গুলো রয়েছে সেগুলো তুলনায় সবুজ প্যাকেটের চায়না কয়েল অনেক ভালো। প্রতি প্যাকেট চায়না কয়েলের দাম ৯০ টাকা হয়ে থাকে।

শেষ কথা

বাসায় মশার উপদ্রব দেখা গেলে কয়েল ব্যবহার করা শুরু করুন অথবা ভিন্ন কোন পন্থায় মশা তাড়ানোর শুরু করুন তাছাড়া ডেঙ্গু অথবা বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে। কয়েল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতার সাথে ব্যবহার করবেন এবং অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও ভালো কয়েল কোনটি সেটি জানতে পারে এবং মশা থেকে নিরাপদ থাকতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url