চর্মরোগ কিসের অভাবে হয়- চর্মরোগ কত প্রকার এবং মুক্তির উপায়

প্রিয় পাঠক আপনি কি চর্মরোগ কিসের অভাবে হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে চর্মরোগ কিসের অভাবে হয় এবং চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন তাহলে চর্মরোগ ভালো করার উপায় এবং কেন চর্ম রোগ হয় সবকিছু জানতে পারবেন।
চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন চর্মরোগ কত প্রকার চর্মরোগ থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায় চর্মরোগ হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এগুলো সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

আমাদের প্রত্যেকের শরীরে কম বেশি বিভিন্ন অঙ্গে চর্মরোগ বাসা বাঁধে। চর্ম রোগের কারণে শরীরের চুলকানি পরিমাণ বেড়ে যায় যার ফলে ভদ্র সমাজে অনেক ক্ষেত্রে লজ্জিত হতে হয়। চর্ম রোগের চিকিৎসা ঠিকমতো করার না কারণে পরবর্তীতে গিয়ে সেটা ভিন্ন কোন বড় রোগে রূপ নিতে পারে এজন্য শুরু থেকেই চর্মরোগ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে সে মোতাবেক চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরী।


যাতে করে আপনি খুব সহজেই চর্ম রোগ থেকে বেঁচে যান।

চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায়

এমন কিছু উপায় এবং পদ্ধতি রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই চর্মরোগ ভালো করে ফেলতে পারবেন। চলুন এবার সেই উপায় গুলো জানি-
  • পানি আমাদের শরীরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চর্মরোগ থেকে বাঁচতে হলে এবং চর্মরোগ ভালো করতে হলে সব সময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে কারণ পানি শরীরের চামড়ার আদ্রতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • আমরা অনেকে শীতকালে গরম পানিতে গোসল করে থাকি। গরম পানিতে গোসল করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় তবে দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে করে চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়।
  • শরীরের ত্বক ভালো রাখতে প্রতিদিন কিছু ফলমূল খাওয়ার এবং খাবারের তালিকায় নিয়মিত শাক সবজি রাখার চেষ্টা করা।
  • শরীরের চামড়াকে যত্নে রাখা অত্যন্ত জরুরী তাছাড়া চর্মরোগ হতে পারে।
  • চর্মরোগ হলে শরীরের ত্বকে ভালো মানের মশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করা উচিত এতে করে আপনার যদি চর্মরোগ হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত ভালো হয়ে যাবে আর যদি না হয়ে থাকে তাহলে চর্মরোগ হওয়া থেকে বিরত থাকবে।
  • চর্মরোগ হলে সাবান শ্যাম্পু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন কারণ এসবে রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা আপনার শরীরের চর্মরোগ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
  • শরীরের ত্বক ভালো রাখতে ওমেগা ফেটি অ্যাসিড অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তাই আপনি চেষ্টা করবেন নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকায় ওমেগা ফ্যাটি এসিড রাখার।
  • সূর্যের আলোতে ভিটামিন সি থাকে। বিশেষ করে সকালের সূর্যের আলোতে। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন সকালে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সূর্যের আলো শরীরে লাগানোর তাহলে আপনার শরীরের ত্বক সুস্থ থাকবে।
  • সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরিধান করার চেষ্টা করবেন এবং শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গকে পরিষ্কার করে রাখবেন যেন কোথাও কোন রকমের ময়লা জমতে না পারে।
  • চর্মরোগ দূর করার জন্য আপনি ঘৃতকুমারী ব্যবহার করবেন এটা আপনার ত্বকের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করবে এবং খুব সহজেই চর্মরোগ দূর হয়ে যাবে।
  • বেকিং সোডা যেমন খাওয়ার কাজও ব্যবহার হয় এমনিভাবে বেকিং সোডা দিয়ে আপনি চর্মরোগ এবং বিভিন্ন রকমের চুলকানি স্থানে ব্যবহার করার ফলেও সেগুলো ভালো হয়ে যাবে।
  • অলিভ অয়েলে ভিটামিন থাকে। আপনি শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহার করার ফলে আপনার চামড়ার আদ্রতা বজায় থাকবে এবং চর্মরোগ ভালো হয়ে যাবে।
  • তুলসী পাতায় হাজারো গুনাগুন রয়েছে। তুলসী পাতা চুলকানি এবং চর্মরোগ দূর করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আপনি তুলসী পাতা বেটে তুলসী পাতার রস চর্ম রোগের স্থানে লাগিয়ে দিবেন।
  • নিমপাতাকে চুলকানি এবং চর্মরোগের মহা ওষুধ বলা হয়। নিমপাতা বেটে আপনার চর্ম রোগের স্থানে লাগিয়ে দেন তাহলে আপনার চর্মরোগ ভালো হয়ে যাবে।
  • আপনি আপনার চর্ম রোগের স্থানে উন্নত মানের পাউডার ব্যবহার করবেন।
  • তৈলাক্ত জাতীয় খাবার এবং ফাস্টফুড আইসক্রিম এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এগুলো খাওয়ার ফলে আপনার চর্মরোগ বেড়ে যাবে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধোয়ার আগে সেই থুতু আপনার চর্ম রোগের স্থানে দেয়ার ফলেও খুব ভালো কাজ করবে কারণ থুতুতে এমন একটি উপাদান রয়েছে যার জীবাণু মেরে ফেলতে সক্ষম।
  • প্রতিদিন চেষ্টা করবেন স্যাভলন এবং কুসুম গরম পানি একসাথে করে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চর্ম রোগের স্থান পরিষ্কার করার তাহলে আপনার চর্ম রোগের স্থান জীবাণু মুক্ত থাকবে এবং খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।
আপনি এসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজেই চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাবেন এবং চর্মরোগ চিরতরে আপনার শরীর থেকে দূর হয়ে যাবে।

চর্মরোগ থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

আমাদের ঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় এমন জিনিস থাকে যেগুলোর মাধ্যমে অনেক রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায়। তেমনি ভাবে চর্মরোগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। চলুন এবার সেসব ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নেই
  • চর্ম রোগের স্থানে নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এলোভেরা আমাদের কম বেশি সবার বাসাতে থাকে বা অ্যালোভেরা জেল থাকে। যেকোনো একটি ব্যবহার করার ফলে আপনার শরীর থেকে চর্মরোগ দূর হয়ে যাবে।
  • প্রতিদিন গোসলের পানিতে কিছু পরিমাণ স্যাভলন মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করবেন তাহলে আপনার শরীর থেকে জীবাণু দূর হয়ে যাবে এবং চর্মরোগও ভালো হয়ে যাবে।
  • পুদিনা পাতার রস এবং হলুদের গুঁড়ো বা কাঁচা হলুদ একসাথে করে চর্ম রোগের স্থানে লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।
  • পার্সলে গরম করার পরে কিছুক্ষণ রেখে দেন। তারপরে যখন তা কুসুম গরমের মত হবে তখন সে পানি দিয়ে চর্মরোগের স্থান ধুয়ে ফেলবেন তাহলে চুলকানি, চর্মরোগ এসব দূর হয়ে যাবে।
  • কুসুম গরম পানি এবং লবণ একসাথে করে চর্ম রোগের স্থান ধুয়ে ফেলার মাধ্যমেও চর্মরোগ ভালো হয়।
  • গাজরের মৌসুমে নিয়মিত গাজর খাওয়ার চেষ্টা করবেন। গাজর খাওয়ার ফলে রক্ত ভালো থাকে এবং চর্মরোগ হয় না।
  • রক্ত দূষিত থাকার কারণে শরীরে ফোড়া হয়ে থাকে। সব সময় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেগুলো খাওয়ার পরে শরীরের রক্ত পরিষ্কার থাকে।
  • আপনার চর্ম রোগের স্থানে মধু লাগানোর ফলেও আপনি ভাল ফলাফল পাবেন। মধুতে এমন কিছু গুণাগুণ রয়েছে যেসব আপনার চর্মরোগ ভালো করতে সাহায্য করবে।
  • কালো মাটি এবং মধু একসাথে মিশিয়ে চর্মরোগের স্থানে ব্যবহার করতে পারেন। এই উপায়ও আপনাকে চর্মরোগ দূর করতে সাহায্য করবে।
  • পালং শাকের রস এবং গাজরের রস ও মধু একসাথে মিশিয়ে চর্ম রোগের স্থানে ব্যবহার করুন তাহলেও আপনার চর্মরোগ ভালো হয়ে যাবে।
  • করলার রস খাওয়ার ফলে এবং করলার রস চর্মরোগ স্থানে ব্যবহার করার ফলেও চর্মরোগ ভালো হয়ে যায়।
  • সরিষার তেলে রসুন গরম করে সেই তেল এবং রসুন আপনার চর্মরোগের স্থানে বা চুলকানির স্থানে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • আপেলের রস লাগানোর ফলে এবং আপেল খাওয়ার ফলেও চর্মরোগ ভালো হয় এবং ত্বক থেকে তৈলাক্ত ভাবো দূর হয়ে যায়।
  • মুলার রস এবং মুলা খাওয়ার ফলেও চর্মরোগ কমে যায়।
  • চর্মরোগের সময় নরমল সাবান যেসব রয়েছে সে সাবানগুলো ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকবেন কিন্তু এন্টিবায়োটিক যে সাবানগুলো রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করবেন কারণ এন্টিবায়োটিক সাবান আপনার চর্ম রোগের স্থানের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে খুব তাড়াতাড়ি চর্মরোগ ভালো করে তুলবে।
  • নারিকেল তেল গরম করে আপনি আপনার চর্মরোগ যেখানে রয়েছে সে জায়গাগুলোতে ব্যবহার করুন। নারিকেল তেলও ফাঙ্গাস চর্মরোগ এগুলো দূর করতে বেশ কার্যকরী।
  • আপেল সাইডার ভিনেগার এবং পানি একসাথে মিশিয়ে একটি তুলার সাহায্যে আপনার যে স্থানগুলোতে চর্মরোগ রয়েছে সেগুলোতে মাখুন। এভাবে দিনের মধ্যে তিন থেকে চারবার ব্যবহার করবেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনার চর্মরোগ দূর হয়ে যাবে।

আপনি এসব উপায়গুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই আপনার শরীর থেকে চর্মরোগ দূর করে ফেলতে পারবেন এবং চিকিৎসার খরচ থেকে বেঁচে যাবেন।

চর্মরোগ কত প্রকার

চর্মরোগ কিছু রোগের সমষ্টিকে বুঝায়। চর্মরোগের ভিতর বিভিন্ন রকমের রোগ রয়েছে যেগুলোকেও চর্মরোগের ভিতরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলুন এবার আমরা চর্মরোগের প্রকারসমূহের নাম জানি

ঘামাচি

ঘামাচিকেও চর্ম রোগের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আপনি ঘামাচি দূর করার জন্য বিভিন্ন রকমের পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার ঘামাচি দূর হয়ে যাবে। চেষ্টা করবেন এমনভাবে চলাফেরা করার যাতে আপনার শরীর কম ঘামে। ঘামাচির জন্ম হয়ে থাকে ঘাম থেকে।

ব্রণ

১৮ থেকে ২০ বছর ছেলে মেয়েদের এ রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে। ব্রণ বের হলে চিন্তার কোন কারণ নাই। ফাস্টফুড তৈলাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরকত থাকুন।তুলসী পাতা,পুদিনা পাতা,বেকিং সোডা মধু এগুলো ব্যবহার করার ফলে ব্রণ খুব সহজে দূর হয়ে যাবে।

দাউদ

শরীরের বিভিন্ন অংশে গোল চাকা চাকা যেই ছত্রাকগুলো বের হয় সেগুলোকে দাউদ বলে। দাউদ মূলত হাত পায়ের আঙুলের ফাঁকে বা শরীরের বিভিন্ন চিপায় হয়ে থাকে। দাউদ খুব একটা ভালো জিনিস নয়। দাউদ হওয়ার ফলে চুলকানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।

পচড়া

পরিষ্কার না থাকার কারণে এই পচড়া হয়ে থাকে এজন্য সবসময় চেষ্টা করবেন নিজের এবং বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের কাপড় পয় পরিষ্কার রাখা এবং তাদের শরীর পরিষ্কার রাখার। তাহলে এই পসরা থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।

একজিমা

একজিমা মূলত হচ্ছে ত্বকের এমন অবস্থা যেখানে ত্বকের প্রদাহের সৃষ্টি হয়। একজিমার বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ থাকে। কোন ধরনের একজিমা লালচে হয়,কোন ধরনের একজিমাতে শরীর শুষ্ক হয় এবং কোন ধরনের একজিমার ফলে প্রচুর পরিমাণে চুলকানি হয়। একজিমা হলে ডিটারজেন্ট,সাবান,শ্যাম্পু এগুলো ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকবেন।


সবসময় পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনার খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। এছাড়াও যেসব ঘরোয়া উপায় বলা হয়েছে সেই উপায়গুলো মেনে চললে খুব সহজে আপনার শরীর থেকে একজিমা চলে যাবে।

আর্সেনিক কারণে চর্মরোগ

এই ধরণের চর্মরোগ মূলত হয়ে থাকে পানির কারণে। আপনি যত দূষিত পানি এবং আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করবেন আপনার ত্বকের ওপরে সেটি খুব খারাপ ভাবে প্রভাব ফেলবে এজন্য সবসময় চেষ্টা করবেন বিশুদ্ধ পানি খাবার এবং গোসল এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার। বিশেষ করে রান্নার করার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ পানি ছাড়া রান্না করা থেকে বিরত থাকবেন।

যদি আপনার আর্সেনিক চর্মরোগ হয়ে যায় তাহলে উপরে যেসব পদ্ধতি বলা হয়েছে সেসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজে চর্মরোগ দূর করে ফেলতে পারবেন।

ক্যানডিয়াসিস

এটি হলো এমন রোগ অ্যালবিক্যান্স ছত্রাকের অতিরিক্ত বৃদ্ধির জন্য হয়। এই রোগ হয় বগল,কোন ত্বকের ভাজে এবং হাঁটুতে দাগ হয়ে যায়। এটাকেও একটি চর্ম রোগের প্রকারের মধ্যে ধরা হয়। এই সমস্যা দূর করার জন্য আপনি অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এবং শরীরের যত্ন নিবেন আর স্বাস্থ্যবিধে মেনে চলার চেষ্টা করবেন। তাহলে খুব সহজে আপনার শরীর থেকে এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

এসব সকল রোগকে চর্মরোগের ভেতরে ধরা হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে যে কোন একটি রোগ হলে আপনি উপরে যেসব ঘরোয়া উপায় বলা হয়েছে সেই উপায়গুলো অনুসরণ করলে বা চর্মরোগ থেকে মুক্তির যেসব উপায় বলা হয়েছে সেগুলো মেনে চললে খুব সহজেই আপনার শরীর থেকে এই রোগ গুলো চিরতরে বিদায় হয়ে যাবে।

চর্মরোগ কিসের অভাবে হয়

শরীরে কোন রোগ হওয়ার পিছনে অবশ্যই কোন না কোন কারণ থাকে। কারণ ছাড়া শরীরে কখনো কোন ধরনের রোগ হয় না। চলুন এবার আমরা জেনে নেই কোন কোন ভিটামিনের অভাবে চর্ম রোগ হয়

যেসব ভিটামিনের অভাবে চর্মরোগ হয়

  • ভিটামিন এ এর অভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থান শুকনো খসখসে হয়ে যায় এবং চামড়ার চুলের গোড়ায় ছোট ছোট আকারে বিভিন্ন রকমের চুলকানি বের হয়।
  • ভিটামিন ডি এর অভাবে চর্ম রোগের কোন লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও আপনার মাথা থেকে চুল পড়ে যেতে পারে।
  • ভিটামিন ই২ এর অভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘা হয় এবং ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যেতে শুরু করে।
  • ভিটামিন সি এর অভাবে মুখে ঘা হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি হতে পারে।
  • ভিটামিন বি ২,ভিটামিন বি৩,ভিটামিন বি ৬,ভিটামিন বি ১২ এইসব ভিটামিনের অভাবেও শরীরের চর্মরোগ এবং বিভিন্ন রকমের দাগ ও ত্বকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হয়।

এসব ভিটামিনের অভাবে চর্ম রোগ হয়ে থাকে। এসব ভিটামিন ছাড়াও এমন কিছু কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্য শরীরের চর্মরোগ হয় চলুন এবার সেই কারণগুলো জানি

যেসব কারণে চর্ম রোগ হয়

  • অতিরিক্ত রোদে থাকার কারণে শরীরের চামড়া শুষ্ক হয়ে যায় যার ফলে চর্মরোগ হতে পারে।
  • আপনি এমন এন্টিবেটিক খান যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়া সম্ভাবনা থাকে। সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সরাসরি আপনার ত্বকের উপরে প্রভাব ফেলবে এবং সেখান থেকে চর্মরোগ হবে।
  • শরীরে গ্যাসের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে আপনার চামড়া শুষ্ক হয়ে যাবে এবং আস্তে আস্তে সেখান থেকে চর্মরোগ হতে শুরু করবে।
  • গোসলের সময় অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করার ফলেও শরীরের বিভিন্ন অংশে চর্মরোগ চুলকানির মত সমস্যা হতে পারে।
  • চর্মরোগ হওয়ার পিছনে যে কারণ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে শরীরের যে স্থানের চর্মরোগ হয় সেই স্থান থেকে রক্ত সরে যাওয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেগুলোর মাধ্যমে শরীরের রক্তচলাচল সচল থাকে।
  • অতিরিক্ত গরম খাবার খাওয়ার ফলেও আপনার মুখে ব্রণ বা বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত ধুলা মাটি ব্যবহার করার ফলে চর্মরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • সব সময় চেষ্টা করবেন শরীরের ঘামকে কন্ট্রোলে রাখার। আপনি অতিরিক্ত ঘামার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি ঘামাচির মত আরও বিভিন্ন চর্মরোগ বের হবে।
  • দূষিত পানি পান করার ফলে বা আয়রনযুক্ত পানি পান করার ফলেও চর্মরোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে।
  • মেয়েদের মাসিকের সমস্যা হলেও মেয়েদের চর্মরোগ হয়।
  • এক ধরনের খাবার খাওয়ার পরে বিপরীত ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে কুষ্ঠ রোগ এবং চর্ম রোগ হয়ে থাকে।
  • নোংরা কাপড়চোপড় ব্যবহার করার ফলে অথবা নোংরা জায়গায় শুয়ে থাকার কারণেও চর্মরোগ হয়।
এসব সমস্যার জন্য চর্মরোগ হয়ে থাকে। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন এই সমস্যাগুলো থেকে বেঁচে থাকার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনযুক্ত ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়ার তাহলে আপনি চর্মরোগ থেকে নিরাপদ থাকবেন।

চর্মরোগ হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

চর্মরোগ যেহেতু শরীরে ত্বকে হয়ে থাকে এজন্য খাবারের ক্ষেত্রে কিছু বারণ থাকে কারণ খাবার আমাদের শরীরের ওপরে প্রভাব ফেলে। এমন অনেক রকমের খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে শরীরে চর্ম রোগের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই চলুন এবার চর্মরোগ হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত নয় সেসব খাবারের নাম জানি
  • চর্মরোগ হলে মসুরের ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ মসুরের ডাল চর্মরোগ বৃদ্ধি দিতে পারে।
  • এমন সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন যেগুলোতে চুলকানির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে যেমন কচু বেগুন সীম ঢেরস।
  • চর্মরোগ এবং এলার্জি হলে গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকায় উত্তম কারণ গরুর মাংসে এমন উপাদান থাকে যা আপনার চর্ম রোগ এবং এলার্জি বাড়িয়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে।
  • পুঁইশাকও চর্মরোগ ভালো হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক।
  • হাঁসের ডিম খাওয়া থেকেও বিরত থাকবেন হাঁসের ডিমে এলার্জি এবং চুলকানি ও চর্ম রোগের সমস্যা বেড়ে যায়।
  • চর্মরোগ অবস্থায় দুধ না খাওয়াই ভালো। দুধ খাওয়ার ফলেও আপনার চর্মরোগের ক্ষতিকর দিক বেড়ে যেতে পারে।
  • চকলেট আইসক্রিম এগুলো একদম খাবেন না। এগুলো খাওয়ার ফলে আপনার চর্ম রোগের সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি হবে।
  • ফাস্টফুড এবং তৈলাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারন এই দুই রকমের খাবার শরীরের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
  • পেঁয়াজ এবং মাশরুম এড়িয়ে চলবেন তাছাড়া আপনার চর্মরোগ তাড়াতাড়ি ভালো হবে না।

চর্মরোগ অবস্থায় প্রত্যেক খাবারে একটু ভেবে চিন্তা করে খাওয়া উচিত। বিশেষ করে উপরে যেসব খাবারের বলা হলো সেই খাবার গুলো খাওয়া থেকে একেবারে বিরত থাকবেন তাহলে আপনার চর্মরোগ খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।

চর্মরোগ সম্পর্কে মানুষের প্রশ্নের উত্তর

১ প্রশ্ন চর্মরোগ কি ছোঁয়াচে?

উত্তর

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে চর্মরোগ হচ্ছে ছোঁয়াচে রোগ এজন্য চর্ম রোগের রোগী যে জিনিসপত্র ব্যবহার করবে যেমন গামছা বা বিভিন্ন কাপড় এগুলো অপর ব্যক্তি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন তাছাড়া তার সেই চর্মরোগ আপনার শরীরে হতে পারে।

২ প্রশ্ন রাতে পা ও গোড়ালি চুলকায় কেন?

উত্তর

যদি আপনার পায়ের ছত্রাকের সমস্যা থাকে তাহলে পায়ের গোড়ালি এবং পা চুলকাবে। অনেক রকমের ছত্রাক আছে যেগুলো পায়ের আঙ্গুলে হয়ে থাকে এবং নকের ফাঁকে হয়ে থাকে।

৩ প্রশ্ন চুলকানি ফুসকুড়ি কি?

উত্তর

চামড়ায় ফুসকুড়ি হওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকে যেমন কারো অনেক দিন ধরে একজিমা রয়েছে বা কারো চামড়ায় এলার্জি অনেক দিন ধরে রয়েছে এসব কারণেই চামড়ায় ফুসকুড়ি হয়ে থাকে।

৪ প্রশ্ন গরমে চুলকানি বন্ধ করার উপায়?

উত্তর

গরম কালে চুলকানি দূর করার জন্য আপনাকে আদ্র এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানে থাকতে হবে। পোশাক পরিধান করার ক্ষেত্রে ঢিলা-ঢালা পোশাক পরতে হবে এবং সুতি কাপড়ের পোশাক পরিধান করার চেষ্টা করতে হবে তাহলে আপনি চুলকানি থেকে মুক্ত থাকবেন। চুলকানি হয়ে থাকে ঘাম থেকে। আপনি গরমকালে যত ঘাম থেকে মুক্ত থাকবেন আপনার শরীরের চুলকানি তত কম হবে।

শেষকথা

চর্মরোগ আমাদের চামড়ার সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় এবং অনেক সময় দেখা যায় চর্ম রোগের কারণে লজ্জিত হতে হয়। আপনার যদি চর্ম রোগ হয়ে থাকে তাহলে চেষ্টা করবেন চর্মরোগ দূর করার যেসব উপায় রয়েছে সেই উপায়গুলো অনুসরণ করে খুব তাড়াতাড়ি চর্মরোগ ভালো করার তাছাড়া এখান থেকে আপনার চামড়ায় ফুসকুড়ি হয়ে যেতে পারে।
.
আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও চর্ম রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে পারে এবং কারো চর্মরোগ হলে উপায় গুলো জেনে চর্ম রোগ থেকে চিরতরে চর্মরোগ মুক্তি পাই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url