গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে এবং নিম্ন চাপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

প্রিয় পাঠক আপনি কি গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে এবং নিম্নচাপ কিভাবে সৃষ্টি হয় ও নিম্নচাপ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আলোচনা করা হবে। আপনি পোস্টটি পড়তে থাকুন আশা করি আপনি নিম্নচাপ সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবেন।
গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন নিম্নচাপ কাকে বলে , লঘুচাপ কি,লঘুচাপ ও নিম্নচাপের পার্থক্য, সুপার সাইক্লোন কি এবং লঘু চাপ কি এই সম্পর্কে তাই চলুন কথা বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক।

ভূমিকা

আবহাওয়া অনেক সময় গরম এবং ঠান্ডা বিপরীতে গিয়ে ভিন্ন একটি রূপ ধারণ করে। সে সময় আবহাওয়া মেঘযুক্ত থাকে এবং এখান থেকে ই ঘূর্ণিঝড় বা ভিন্ন ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় এটাই মূলত নিম্নচাপ। নিম্নচাপ সাগরের তলদেশ থেকে তৈরি হয়ে সেটা ভূখন্ডে আছড়ে পরে। এ সময় বিভিন্ন রকমের ভারী বর্ষণ বা অনেক লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।


নিচে গভীর নিম্নচাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আপনি নিচের দিকে পড়লে নিম্নচাপ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।

নিম্নচাপ কাকে বলে

নিম্নচাপ সম্পর্কে আপনি যখনই জানতে যাবেন তখন প্রথমে জানা জরুরি যে গভীর নিম্নচাপ কি এবং নিম্নচাপ কি। আপনি এই দুটি সংজ্ঞা না জানলে নিম্নচাপ সম্পর্কে ঠিক মত বুঝতে পারবেন না। নিম্নচাপ বলা হয় স্বাভাবিকের তুলনায় বায়ুর চাপ কম থাকে যায় তখন সেটাকে নিম্নচাপ বলা হয়।স্বাভাবিক বায়ুর চাপ 76 cm।

যখন কোন জায়গায় বায়ুর তাপমাত্রা অধিক পরিমাণে বেড়ে যায় তখন বায়ু হালকা হতে শুরু করে এবং সে সময় স্বাভাবিক ক্ষমতা থাকে সেটা হালকা হয়ে যায় তখনই নিম্নচাপ হয়ে থাকে নিম্নচাপ। ভারত মহাসাগর অথবা বঙ্গপোমহাসাগরের তলদেশ থেকে তৈরি হয়ে থাকে। নিম্নচাপের সময় আবহাওয়া অনেক রকমের পরিবর্তন নিয়ে আসে।

কখনো রোদ কখনো ঠান্ডা। এই সময় মানুষ অনেক পরিমানে অসুস্থ হয়ে থাকে এবং কখনো কখনো নিম্নচাপ থেকে বিরাট আকারের ঝড়ের রূপ ধারণ করে। যেটাতে মানুষের ক্ষয় ক্ষতি হয়। এজন্য নিম্নচাপ শুরু হবার সাথে সাথে সুস্থ থাকার চেষ্টা করা এবং আবহাওয়া অফিস থেকে কোন সাবধানতা দিলে সাবধান হয়ে থাকা।

যাতে করে আপনি সেই বিপদ থেকে বেঁচে থাকতে পারেন আপনি। এতক্ষণ নিম্নচাপ সম্পর্কে জানলেন নিচে এবার গভীর নিম্নচাপ সম্পর্কে বলা হবে। নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ দুইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।

গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে

গভীর নিম্নচাপ বলা হয় যখন বাতাসের গতি স্বাভাবিকের তুলনায় ভিন্ন হয়ে তা ভয়ংকর রূপ ধারণ করে অর্থাৎ ঘন্টায় ৫১থেকে ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রবাহিত হয় তখন সেটাকে গভীর নিম্নচাপ বলে। নিম্নচাপের তুলনায় গভীর নিম্নচাপ আরো বেশি ভয়ংকর হয়। গভীর নিম্নচাপ থেকে বড় বড় আকারের ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, সুপার সাইক্লোন হয়ে থাকে।

যেগুলোর দ্বারা মানুষ অনেক রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যখন নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করে আরো বেশি শক্তিশালী হয় তখন সেটি নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। গভীর নিম্নচাপের সময় ভারী বর্ষণ হয়ে থাকে এবং বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই নিম্নচাপের তুলনায় গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে সতর্ক থাকা উচিত যাতে করে আপনি নিরাপদ থাকতে পারেন।

আবহাওয়া অফিস থেকে যে মোতাবেক আদেশ দেওয়া হয় সে মোতাবেক চলার চেষ্টা করার জরুরী তাছাড়া আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

লঘুচাপ কি

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরি হয় সেখান থেকে নিম্নচাপ তারপর গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়। লঘুচাপ হচ্ছে সমুদ্র এবং ভূপৃষ্ঠ দুই অবস্থাতেই হতে পারে। লঘুচাপ বলতে বোঝায় বায়ুর চাপ কমে যাওয়া অর্থাৎ পানির জলীয়বাষ্প হয়ে আকাশে বেশি হয়ে যাওয়া। যখন জলীয় বাষ্প হয়ে উপরে জমা হয় তখন পৃথিবীতে বায়ুর চাপ কমে যেতে শুরু করে।

যখনই বায়ুর চাপ কমে যাবে সে সময় থেকে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। লঘুচাপে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হয়ে থাকে। নিম্নচাপের ক্ষেত্রে ভিন্ন এটাই হচ্ছে নিম্নচাপ। নিম্নচাপের সময় আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে এবং হালকা মেঘ থাকে পরবর্তীতে সেটি নিম্নচাপ বা গভীর চাপে রূপ নেই।

নিম্নচাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়

নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিম্নচাপ কিভাবে সৃষ্টি হয় এ সম্পর্কে আপনার জানা জরুরী। যাতে করে আপনি ধারণা করতে পারেন যে নিম্নচাপ কতখানি শক্তিশালী। যখন কোথাও সূর্যের তাপ প্রচন্ড পরিমাণে বেড়ে যায় এবং বাতাস তুলনামূলক গরম হয়ে যায়। তখন সে জায়গায় বাতাসের চাপ অর্থাৎ বায়ুর চাপ কমে যায়।


বায়ুর চাপ কমে যাওয়ার ফলে সেখান থেকে নিম্নচাপ তৈরি হয়।নিম্নচাপকে আবহাওয়ার ডিপ্রেশন বলা হয়। যখন সেটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে নেয় তখন সেটা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যায়। অতিরিক্ত গরম পড়ার কারণে নিম্নচাপ হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাজশাহীতে প্রচুর পরিমাণে গরম পরে যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে নিম্নচাপ হয়ে থাকে।

লঘুচাপ ও নিম্নচাপের পার্থক্য

লঘুচাপ ও নিম্নচাপ এর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। শুরুতে লঘুচাপ তৈরি হয় সেখান থেকে পরবর্তীতে নিম্নচাপ এবং নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়ে থাকে।
  • লঘুচাপ ঘন্টায় ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হয় কিন্তু নিম্নচাদের ক্ষেত্রে ৪১ থেকে ৫১ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত হয়ে থাকে।
  • লঘুচাপের সময় হালকা মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং ধীরে ধীরে বৃষ্টি হয় কিন্তু নিম্ন চাপের সময় বৃষ্টি জোরে হয় এবং সেখান থেকে ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • লঘুচাপ সৃষ্টি হয় উভয় স্থান থেকে অর্থাৎ সাগর এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে কিন্তু নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় সাগরের নিচ থেকে।
  • লঘুচাপের তুলনায় নিম্নচাপ অনেক বেশি ভয়ংকর হয় এবং নিম্নচাপের চেয়ে গভীর নিম্নচাপ আরো বেশি ভয়ংকর।
তাই আমাদের উচিত লঘু চাপ থেকেই সাবধান থাকা যাতে করে নিম্নচাপ বা গভীর নিম্নচাপ হলে আমরা সেসবের ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

সুপার সাইক্লোন কি

সুপার সাইক্লোন হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ংকর ঝড় যেটা প্রতি ঘন্টায় ২২০ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত হয়ে থাকে। সুপার সাইক্লোনের ফলে মানুষ অনেক রকমের ক্ষতি হয় সম্মুখীন হয়।লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ নিম্নচাপ থেকে গভীরচাপ গভীর চাপ থেকে সাইক্লোন অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড় এবং সাইক্লোন থেকে সুপার সাইক্লোন হয়ে থাকে।

সুপার সাইক্লোনো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।অনেক সময় অনেক ধরনের ভয়ংকর রূপ এবং নাম ধারণ করে সুপার সাইক্লোন আসে। বাংলাদেশের শেষ সুপার সাইক্লোন হয়েছে ২০০৭ সালের জুন মাসে।সুপার সাইক্লোন অনেক বছর পর পরে আসে। সাধারণত ঝড় বা নিম্নচাপ সব সময় হলেও সুপার সাইক্লোন সচরাচর হয় না।

সুপার সাইক্লোনের সময় মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। বাতাসে যখন প্রবল গতিবেগ ধারণ করে তখন সেটি সুপার সাইক্লোন হয়ে যায়। সুপার সাইক্লোন আসার আগে সবসময় খুব সতর্ক এবং সাবধান থাকা উচিত কারণ আপনার অসতর্ক থাকার ফলে প্রাণহানি হতে পারে।সুপার সাইক্লোন ভারত মহাসাগর বা বঙ্গপমহাসাগের তলদেশ থেকে তৈরি হয় পরবর্তীতে সেটা শক্তিশালী রূপ নিয়ে ভূখণ্ডের উপরে আছড়ে পড়ে।

নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ সম্পর্কিত মানুষের প্রশ্নের উত্তর

নিম্নচাপ বলতে কি বুঝায়?

নিম্নচাপ বলতে বোঝায় কোন এলাকার বায়ু চাপ ভিন্ন এলাকার তুলনায় বায়ুর চাপ কমে থাকে তখন সেটাকে নিম্নচাপ বোঝায়। নিম্নচাপের সময় বাতাসের গতিবেগ ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার থাকে।

নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণ কি ?

নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণ হচ্ছে যখন সূর্য কোন স্থান থেকে খাড়া ভাবে কিরণ দেয় এবং সেখানকার বাতাস অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়, যার ফলে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব কমে যায় এজন্যই সে সময় নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে থাকে।

ঘূর্ণিঝড় কে কি বলে?

ঘূর্ণিঝড় কে সাইক্লোন বলা হয়। প্রথমে লঘুচাপ তারপর নিম্নচাপ এবং তারপর গভীর চাপ, গভীর চাপ থেকেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। যখন ঘূর্ণিঝড় ভয়ংকর রূপ ধারণ করে অর্থাৎ ঘন্টায় ২২০ প্লাস কিলোমিটার গতিবেগ থাকে তখন সে দিকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়। ঘূর্ণিঝড় ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ থাকে।

স্থানীয় বায়ু কয় প্রকার ও কি কি??

বায়ু চার প্রকার
  1. নিয়ত বায়ুপ্রবাহ।
  2. সাময়িক বায়ুপ্রবাহ।
  3. আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ।
  4. স্থানীয় বায়ু প্রবাহ।
স্থানীয় বায়ু সাত প্রকার
  1. লু
  2. ফন
  3. চিনোক
  4. সিরাক্কা
  5. মিস্টোর
  6. বোর
  7. হারমাট্টল
এসব প্রকার হচ্ছে স্থানীয় বায়ু।

শেষ কথা

নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ উভয় একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং এই সময় অনেক রকমের সমস্যার সম্মুখীন আমাদের হতে হয়।তাই চেষ্টা করা যাতে সে সমস্যাগুলো থেকে বেঁচে থাকা যায়। গভীর নিম্নচাপ কাকে বলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিম্নচাপের সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে থাকে এজন্য অসুস্থতা হয়ে যেতে হয়। তাই সাবধান থাকার চেষ্টা করবেন।

আমার পোস্টে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদের করণীয় কি সে সম্পর্কেও ভালো মতো বুঝতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সহকর্মীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url